গ্রামীন এলাকার হাটগুলিতে সস্তায় জুতো বিক্রি করে কোনরকমের সংসার চালান গাজোলের বাসিন্দা মিঠুন সরকার। ছেঁড়়া কাঁথায় শুয়ে শুধু মাত্র লাখ টাকার স্বপ্ন দেখেছিলেন ওই জুতো বিক্রেতা। লখপতি হতে কেটেছিলেন লটারির টিকিট। আর তাতেই বাজিমাত। মাত্র ৩০ টাকার লটারি কেটে সেই জুতো বিক্রেতা এখন কোটিপতি। জীবনে একসঙ্গে কোনদিন এক লাখ টাকা না দেখা কোটিপতি সেই মিঠুন সরকার এখন রীতিমত ঘোরের মধ্যে রয়েছেন।
বিপুল অঙ্কর অর্থ জয়ের খবর চাউর হতেই প্রাণভয়ে রাতভর থানায় কাটিয়েছেন মিঠুন সরকার। মাত্র ৩০ টাকায় ভাগ্য ফিরতে পারে, তা ভাবতেই হিমশিম অবস্থা মিঠুনবাবুর স্ত্রী এবং পরিবারের লোকেদের। ভবিষ্যতে জুতোর বিশাল একটি শোরুম করার লক্ষ্য রয়েছে কোটিপতি মিঠুনের।
গাজোল থানার পর্চাডাঙ্গা এলাকার শালুকডোবা গ্রামের বাসিন্দা মিঠুন সরকার। পেশায় তিনি খুচরো ব্যবসায়ী। কখনো হাটে মাত্র ৫০ টাকায় পাইকারি দরে জুতো বিক্রি করেন। আবার কখনও করেন দিনমজুরের কাজ। মঙ্গলবার দুপুরে হাট থেকে বাড়ি ফেরার সময় ৩০ টাকা দিয়ে একটি ডিয়ার লটারি কেটেছিলেন তিনি। তারপরে সরাসরি বাড়ি চলে আসেন। রাতে খাওয়া-দাওয়া করেও ঘুমোন। বুধবার সকাল থেকেই মিঠুনবাবুর বাড়ির সামনেই লোকজনের ভিড় শুরু হয়। কেন এই ভিড়? প্রথমে বুঝতে পারেননি তিনি। তারপরে জানতে পারেন ভাগ্যজোরের কথা। জানতে পারেন এক কোটি টাকা লটারিতে পেয়েছেন তিনি। লটারি বিক্রেতা গোটা গ্রামে ঢোল বাজিয়ে সেকথা শোরগোল ফেলে দেয়। এরপর পাড়া প্রতিবেশীদের কথায় বিশ্বাস করছিলেন না তিনি। অবশেষে এক ছুটে গাজোল থানায় চলে যান মিঠুনবাবু। পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে লটারির নম্বর খোঁজ নিতেই জানতে পারেন তিনি এখন কোটিপতি।
লটারি প্রাপক কোটিপতি মিঠুন সরকার বলেন, 'খুব কষ্ট করে সংসার চালাচ্ছিলাম । পাইকারি দরে ৫০ টাকা করে হাটে হাটে ঘুরে জুতো বিক্রি করতাম। কখন আবার জুতো সেলাই থেকে দিনমজুরের কাজ করতাম। পরিবারে স্ত্রী দুই ছেলে মেয়ে রয়েছে। তাদের মানুষ করতেও হিমশিম খাচ্ছিলাম। কোনওদিন ভালো খাবারটুকু জুটত না। ভাগ্য যে এভাবে বদলে যেতে পারে ভাবতে পারেনি। টিকিট কাটার নেশা অবশ্য আমার নেই। আর সেই সব থেকে এখন আমাকে কোটি টাকার সম্ভার করে দিয়েছে। আগামীতে জুতোর শো-রুম করার ইচ্ছে রয়েছে। ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ গড়ারও পরিকল্পনা নিয়েছি। তবে টাকা না পাওয়া পর্যন্ত গাজোল থানার পুলিশের সহযোগিতারা আবেদন জানিয়েছি। কখন কী হয়,আতঙ্ক লাগছে।'
গাজোল থানার পুলিশ জানিয়েছে, পর্চাডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা, মিঠুন সরকার ডিয়ার লটারির ৩০ টাকার টিকিটে এক কোটি টাকা পেয়েছেন। তিনি পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে ওই ব্যক্তিকে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে।