Advertisment

পঞ্চায়েত ভোট এগোতেই তপ্ত রায়না, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে গুলিবিদ্ধ বাবা-ছেলে

শাসক দলের বিধায়ক ও ব্লক সভাপতির বিবাদের জের বলেই দাবি স্থানীয়দের...

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
shootout in raina east burdwan before panchayat poll , পঞ্চায়েত ভোট এগোতেই তপ্ত রায়না, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে গুলিবিদ্ধ বাবা-ছেলে

গুলিবিদ্ধ বাদল সিং। ছবি- প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়

এগিয়ে আসছে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগেই গোলা গুলিতে তপ্ত পূর্ব বর্ধমানের রায়না। এক তৃণমূল সমর্থক বৃদ্ধ ও তাঁর ছেলেকে মারধোর করার পর পায়ে গুলি করার অভিযোগ উঠলো দলেরই অপর গোষ্ঠীর একদল যুবকের বিরুদ্ধে। আক্রান্তদের নাম বাদল সিং (৭০) ও মৃগাঙ্ক সিং (৪০)। বুধবার রাতে রায়নার নতুন গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন শুকুর গ্রামের এই ঘটনার জেরে উত্তেজনা চরমে।

Advertisment

আক্রান্ত দু'জনেরই ডান পায়ে গুলি লেগেছে। তাঁরা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন।পরিবারের অভিযোগ, অভিযুক্তরা আগে বিজেপি করলেও বর্তমানে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গেই ঘোরাফেরা করেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধায়ক শম্পা ধারা ও ব্লক সভাপতি বামদেব মণ্ডলের অনুগামীদের মধ্যে এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে বিবাদের জেরেই গুলি চলেছে।

গুলিবিদ্ধ মৃগাঙ্ক সিংয়ের স্ত্রী মুনমুন সিং বৃহস্পতিবার বলেন, 'আমার স্বামী সহ শ্বশুর বাড়ির সবাই তৃণমূল কংগ্রেস পার্টি করেন। পরিবারের সবাই কৃষিজীবী । বুধবার দুপুরে আমার স্বামী গ্রামের অপর এক চাষির কাছ যায় সাবমার্সিবেলে জলসেচের খরচের টাকা আনতে যায়। সেই টাকা নিয়ে আমার স্বামী যখন বাড়ি ফিরছিল সেই সময়ে তার পথ আটকায় বিধানসভা ভোটের পর বিজেপি থেকে তৃণমূল হয়ে যাওয়া এলাকার বাসিন্দা তরুণ রায় ,হেমন্ত মাঝি ও সৌমেন রায়। এই তিনজন আমার স্বামীকে ব্যাপক মারধোর করে। চিকিৎসা করিয়ে এই মারধোরের কথা রায়না থানায় জানায় আমার স্বামী মৃগাঙ্ক সিং। কিন্তু চিকিৎসকের লিখেদেওয়া কয়েকটি ওষুধ তখন স্থানীয় ওষুধের দোকানে না মেলায় রাত ৯টা নাগাদ শ্বশুর মশাইকে সঙ্গে নিয়ে আমার স্বামী ওই ওষুধ কিনতে যায়। তখন ফেরই ওই তিনজন আমার স্বামী ও স্বশুর মশাইয়ের উপর চড়াও হয়। মারধোর শুরু করে। এর পর আগ্নেআস্ত্র বের করে আমার স্বামী ও বৃদ্ধ শ্বশুর মশাইয়ের পায়ে গুলি চালিয়ে জখম করে। খবর পেয়ে রায়না থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে আমার স্বামী ও শ্বশুর মশাইকে উদ্ধার করে বর্ধমান হাসপাতালে পাঠায়।'

রায়না ১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি বামদেব মণ্ডল ও নতুন গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের সদস্য সুশান্ত মণ্ডল স্বীকার করেনেন যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে। পঞ্চায়েত সদস্যের অভিযোগ, গুলি চালানোর ঘটনায় যে তিনজন জড়িত তারা ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের সক্রিয় ভাবে বিজেপি পার্টি করছিল। কিন্তু বিধানসভা ভোটের পরেই তিন অভিযুক্ত তরুণ রায়,হেমন্ত মাঝি ও সৌমেন রায় রায়নার তৃণমূল বিধায়ক শম্পা ধারার সঙ্গে যোগাযোগ করে রাতারাতি তৃণমূল হয়ে যায়। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এলাকায় আধিপত্য কায়েম করতেই ওই তিনজন ছয় রাউণ্ড গুলি চালিয়ে আদি তৃণমূল কর্মী পরিবারের বাবা ছেলেকে মারাত্মক ভাবে জখম করেছে বলে পঞ্চায়েত সদস্য সুশান্ত মণ্ডল অভিযোগ করেছেন। বামদেব মণ্ডল বলেন, 'কারা কিসের স্বার্থে বিজেপির দুস্কৃতিদের তৃণমূলে জায়গা করেদিল তা জানি না । তবে এরজন্য রায়নায় দলের ক্ষতি হচ্ছে।' বামদেব বলেন, 'আমি উচ্চ নেতৃত্বকে সব জানিয়েছি।'

বিধায়ক শম্পা ধারা ও জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কে একাধিকবার ফোন করা হলেও ফোন ধরেননি। তৃণমূলের রাজ্যের মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন, 'ঘটনার কথা শুনেছি। দলের উচ্চ নেতৃত্বের কাছেও ঘটনা জানাব। উচ্চ নেতৃত্ব এই বিষয়ে
যা পদক্ষেপ করার করবেন।'

এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ ) সুপ্রভাত চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের সন্ধান চালানো হচ্ছে।

tmc East Burdwan burdwan Shootout
Advertisment