বেশ কিছুদিন ধরেই এসভিএফের কর্তা শ্রীকান্ত মোহতার ওপর নজর রাখছিল সিবিআই। সূত্রের খবর, গ্রেফতারের প্রায় পনেরো দিন আগে থেকেই প্রযোজককে পাকড়াও করার পরিকল্পনা সাজানো হয়েছিল। সকালের মর্নিং ওয়াক থেকে কসবার অফিসে যাওয়া বা রাতে তাঁর বাড়ি ফেরা, সবই নজরে থাকত তদন্তকারীদের।
সিবিআইয়ের দাবি, সজাগ হয়ে গিয়েছিলেন শ্রীকান্ত। পাল্টে ফেলেন কৌশল। কোনও জায়গায় গেলে এক গাড়ীতে যেতেন না তিনি। রাস্তাতেই গাড়ি বদল করতেন শ্রীকান্ত মোহতা। শুধু তাই নয়, গাড়িতে নম্বর প্লেটও পাল্টে ফেলা হত। সূত্রের খবর, ওড়িশার নম্বর প্লেট ব্যবহার করেও গোয়েন্দাদের চোখে ধুলো দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তিনি। কোথায় যাচ্ছেন, কে আছেন সঙ্গে, কার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন, তা যাতে বোঝা না যায়, সে কারণেই এসব কৌশল নিতেন শ্রীকান্ত, এমনটাই মনে করছেন গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন, কে এই শ্রীকান্ত মোহতা?
ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের কর্ণধারকে শারীরিক অবস্থার জন্য সিবিআই নিজেদের হেফাজতে নেয়নি বটে, তবে আদালতের অনুমতি নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে দস্তুর মতো।
বেশ কয়েকটি বিষয়ে জেরা করা হয়েছে মোহতাকে। রোজ ভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুর সঙ্গে ২৫ কোটি টাকার চুক্তির কোনও যুক্তিসংগত কারণ রয়েছে কি না জানতে চান গোয়েন্দা কর্তারা। দ্বিতীয়ত যদি টাকা নিয়েই থাকেন শ্রীকান্ত, তাহলে যে সিনেমা প্রযোজনার জন্য টাকা নেওয়া হয়েছে, সে সিনেমা কোথায় গেল! গৌতম কুণ্ডু জানিয়েছিলেন প্রভাবশালীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেই এই টাকা, সে ক্ষেত্রে কে বা কারা এই প্রভাবশালী! বারবার ডাকা সত্ত্বেও কেন সিবিআই অফিসে আসেননি শ্রীকান্ত মোহতা, তদন্তকারী আধিকারিকরা সে কথাও জানতে চান। শুধু গৌতম কুণ্ডু নন, জানা গিয়েছে সারদার সুদীপ্ত সেনের কাছ থেকেও একটি অনুষ্ঠানে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করার জন্য টাকা নিয়েছিলেন শ্রীকান্ত। তদন্তকারী অফিসারদের প্রশ্ন, কোন অনুষ্ঠানের জন্য কত টাকা নিয়েছিলেন তিনি। এই যে টাকা নেওয়া হয়েছিল, তা কার নির্দেশে নেওয়া হয়েছিল, সে টাকা গেল কোথায়, এবং কোন প্রভাবশালীর নির্দেশে ভেঙ্কটেশ কর্ণধার এ কাজ করেছেন, তদন্তকারী আধিকারিকদের কাছে এ প্রশ্নও অত্যন্ত জরুরি।
এর আগেও পোর্টের জমিকে কেন্দ্র করে এবং লেক মলের ইস্যুতে এই প্রযোজকের নাম উঠেছিল।
এসভিএফ কর্তা শ্রীকান্ত মোহতার বিরুদ্ধে ২৪ কোটি টাকার প্রতারণা অভিযোগ উঠেছে। তাছাড়া সারদা সহ অন্যান্য চিটফান্ড কোম্পানিরও ব্যবসা বাড়ানোর ক্ষেত্রে তিনিও ছিলেন বলে অভিযোগ। তাঁর বিরুদ্ধে বিশ্বাসভঙ্গ, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।