Siddiqullah Chowdhury:তৃণমূল ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, এবার দলের জেলা সভাপতিকে বেনজির কটাক্ষ সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর

Siddiqullah Chowdhury-tmc: দিন কয়েক আগেই তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। তার সেই হুশিয়ারি ঘিরে তৃণমূলের অন্দরে জোরদার জল্পনা তৈরি হয়।

Siddiqullah Chowdhury-tmc: দিন কয়েক আগেই তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। তার সেই হুশিয়ারি ঘিরে তৃণমূলের অন্দরে জোরদার জল্পনা তৈরি হয়।

author-image
Pradip Kumar Chattopadhyay
New Update
Siddiqullah Chowdhury, purba Bardhaman news, purba Bardhaman tmc, rabindranath chatterjee, 21 july sahid diwas tmc, mamata banerjee, তৃণমূল, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, পূর্ব বর্ধমানের খবর

Siddiqullah Chowdhury : মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী।

নিজের বিধানসভা এলাকায় আক্রান্ত হওয়ার পর তৃণমূল কংগ্রেস দল ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। সেই “হুঁশিয়ারির’ কোন বাস্তবতা এখনও দেখা যায় নি।তবে মন্ত্রী মশাইয়ের যাবতীয় নিশানায় যে দলেরই পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়,সেটা এখন দলীয় মহলে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কে ’কাটোয়ার বুড়ো বাবু’ বলে অবিহিত করে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী দলীয় সভায় বলেন, "কাটোয়ার বুড়োবাবু ওখানে বসে ছিপ ফেলছে’।রাজ্যের শাসক দলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ককে উদ্দেশ্য করে দলেরই একজন বর্ষীয়ান মন্ত্রীর এমন ’ঈঙ্গিতপূর্ণ’ আক্রমণ বেশ শোরগোল ফেলেছে রাজনৈতিক মহলে। এ নিয়ে কটাক্ষও করেছে বিরোধীরা। 

Advertisment

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ২১ জুলাই কলকাতার ধর্মতলায় শহীদ স্মরণ দীবস পালন করবে তৃণমূল কংগ্রেস।জানা গিয়েছে,আক্রান্ত হওয়ার আগের দিন অর্থাৎ গত ২ জুলাই মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী ২১ শে জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভা করেন নিজের বিধানসভা মন্তেশ্বরের কাছের শ্রীধরপুরে।সেই সভায় বক্তব্য রাখার সময়েই মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী নাম না করে জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় কে উদ্দেশ্য করে তীর্যক আক্রমণ শানান বলে অভিযোগ। মন্ত্রী মশাইয়ের সেই বক্তব্যের ভিডিও এখন সামাজিক মাধ্যমেও ঘুরপাক খাচ্ছে। । 

ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বলছেন,’সারা বর্ধমান জেলার রাজনীতিতে আমরা হলাম এক নম্বর।মন্তেশ্বর এক নম্বর।পরপর তিনবার জিতেছি।বিধানসভায় এক নম্বর। আমাদের ট্যারা চোখে দেখা যাবে না। সে বর্ধমানেই থাকুক, আর কাটোয়ার বুড়োবাবু থাকুক’।এখানেই শেষ নয়। রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী আরোও বলেন,’কাটোয়ায় বসে ছিপ বা হুইল দিয়ে মাছ ধরা যাবে না’।এর পরেই হুমকি দিয়ে মন্ত্রী মশাইকে বলতে শোনা যায়, "কাটোয়া আমার দু-আঙুলের মধ্যে। ওখানে আমার বাড়ি। আমার জন্ম।আমি চল্লিশ বছর ধরে সমাজের কাজ করছি। কেউ বলুক আমায় এক টাকা, ফুটো পয়সা দিয়েছে। একবার পুকুর খুলে দিলে কোথাকার জল কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে!“ সাথে সাথে মন্ত্রী মশাই এও বলেন,’বর্ধমানে বসে নানা কথা বলা হচ্ছে। আমাদের ছেলেমেয়েরা কাজ করে না? ঘাস কাটি আমরা?’ 

মন্ত্রী মশাইয়ের এহেন বক্তব্য তাঁর উপর ক্ষোভের সঞ্চার করে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে ঘটনাক্রমে ওই সভার পরদিন অর্থাৎ ৩ জুলাই দলের লোকজনের চুড়ান্ত বিক্ষোভের মুখে পড়েন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। মন্ত্রীর গাড়িতেও হামলার অভিযোগ উঠে।এমনকি মন্ত্রী মশাই নিজে আক্রান্ত

Advertisment

হওয়ার অভিযোগ তোলার পাশাপাশি তাঁকে খুনের চক্রান্তের অভিযোগ করেন।হামলার শিকার হয়েই মন্ত্রী মশাই ওইদিন দলের মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আহম্মদ হোসেন শেখকে নিশানা করে জেলার পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগও জানাতে যান। এমনকি ন্যায় বিচার না মিললে দল ছাড়বেন বলে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী হুমকিও দেন। 

হেভিওয়েট মন্ত্রীর আনা এই সব অভিযোগ রাজ্য রাজনীতিতেও আলোড়ন ফেল । নড়েচড়ে বসে জেলা পুলিশ। ঘটনার পর পরই পুলিশ অ্যাকশনে নেমে পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের ঠাঁই হয় শ্রীঘরে। ফের আরো দু’জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সোমবার কালনা মহকুমা আদালতে পেশ করে । ধৃতদের মধ্যে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মন্তেশ্বর ব্লকের ডাকাবুকো নেতার বাবাও রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।বিচারকের নির্দেশে এই দুই ধৃতেরও ঠাঁই হয়েছে জেলে। তবে হামলার ঘটনা নিয়ে যে আহম্মদ হোশেন কে নিশানা করেছিলেন সিদিকুল্লা চৌধুরী সেই তৃণমূল নেতা এখনও বহাল তবিয়তেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন।এইসব নিয়ে সোমবার নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দফতরে ৪ পাতার একটা অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার কথা মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী জানান। 

 যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় এদিন সাফ জানিয়ে দেন, মন্ত্রী মশাই তাঁকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন, তা নিয়ে পাল্টা কোন মন্তব্য তিনি করবেন না। এ নিয়ে দল যা ব্যবস্থা ধেওয়ার নেবে। জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, "শাসক দলের মন্ত্রী ও বিধায়কের অনৈক্যই প্রমাণ করে দিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস দলে মাৎস্যন্যায় শুরু হয়ে গিয়েছে।"

tmc Siddikullah Chowdhury Purba Bardhaman