দিনের বেলায় 'বেঙ্গল সাফারিতে' গেলে দেখা যাবে রাতের জঙ্গল। না, এটা কোনও গল্প নয়। বরং এমন স্বপ্নই সত্যি হতে চলেছে শিলিগুড়ি থেকে সাত কিলোমিটার দূরে শালুগাড়াতে অবস্থিত বেঙ্গল সাফারি পার্কে। জঙ্গলপ্রেমীরা এবার থেকে এই সাফারি পার্কেই পাবেন রাতের জঙ্গল ভ্রমণের আমেজ। সেই ব্যবস্থাই করছে শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি। জানা যাচ্ছে, খুব তাড়াতাড়ি বেঙ্গল সাফারিতে তৈরি হতে চলেছে 'নকটারনাল হাউজ', অর্থাৎ নিশাচর প্রাণীদের নিয়ে সাফারি।
আরও পড়ুন: ফুটপাথ দখলমুক্ত করতে শিলিগুড়ির রাস্তায় গৌতম দেব, পাল্টা চ্যালেঞ্জ হকারদের
ইতিমধ্যেই নতুন এই প্রকল্পটির জন্য প্রয়োজনীয় সব রিপোর্ট তৈরি করেছেন বেঙ্গল সাফারির আধিকারিকেরা। পাশাপাশি আরও বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ শেষ করে ভ্রমণপিপাসুদের টানতে আগ্রহী বেঙ্গল সাফারি, এমনটাই খবর। এছাড়াও পর্যটকদের জন্য জঙ্গলের মধ্যে দিয়েই চলবে টয় ট্রেন। পাশাপাশি থাকবে হাঁটার রাস্তাও। সাপ এবং পাখিদের জন্য যে নির্দিষ্ট জায়গা আছে, সেখান দিয়েই তৈরি হবে পথ, জানা যাচ্ছে বেঙ্গল সাফারি পার্কের পক্ষ থেকে।
কেমন হতে চলেছে এই নিশাচর প্রাণীদের সাফারি?
বেঙ্গল সাফারির তরফে জানানো হয়, পেঁচা, বাদুড়, শিয়াল, রেকুনের মতো প্রাণীরা দিনের থেকে রাতেই বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করে। তাই দিনের বেলায় এদের গতিবিধিও চট করে বোঝা যায় না। সেই সব নিশাচর প্রাণীদেরই দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে বেঙ্গল সাফারি। বেঙ্গল সাফারির ডিরেক্টর ধরমদেব রাই বলেন, "নিশাচর প্রাণীদের দেখার জন্য নকটারনাল হাউজ তৈরি করব আমরা। সেখানে এমন আবহ তৈরি করা হবে যে, আলোর ছায়ায় দিনের বেলাকে প্রাণীরা রাত বলে মনে করবে। ফলে রাতে যেভাবে তারা চলাফেরা করে, সেটা করবে। এই সময় সেই হাউযে কোনও মানুষ গেলে অবিকল নিশাচর প্রাণীদের গতিবিধি দেখতে পাবেন।"
আরও পড়ুন: তিন মাসেই ভগ্নপ্রায় তিস্তার বাঁধ, আতঙ্কে উত্তরবঙ্গের লক্ষাধিক মানুষ
বেঙ্গল সাফারির এই প্রকল্প যে জঙ্গলপিপাসুদের মনে সাড়া ফেলবেই, সে ব্যাপারে নিশ্চিত সাফারি পার্কের কর্তারা। তবে শুধু নিশাচর প্রাণীই নয়, সাফারি পার্কের মধ্যে টয়ট্রেন, হাঁটার পথ তৈরি করে রোমাঞ্চকর পরিবেশও তৈরি করতে বদ্ধপরিকর কর্তারা। জানা গেছে, বেঙ্গল সাফারির প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ। সেখানে রাখা হয়েছে বাঘ, হরিণ, ভালুক, হাতি, গণ্ডার সহ বেশ কিছু সাফারির ব্যবস্থা। এবারে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ রমরমিয়ে চালাতেই এবার অভিনব বিষয়গুলিকে যুক্ত করা হচ্ছে পার্কে।
উল্লেখ্য, এবছরের প্রথম দিনে এই বেঙ্গল সাফারি পার্কেই খাঁচাছাড়া হয় শচীন নামের এক চিতাবাঘ। নিরাপত্তার জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় বেঙ্গল সাফারি, যা নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দেয় পর্যটকদের মধ্যে।চারদিন নিখোঁজ থাকার পর আবার খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে নিজের ঠিকানায় ফেরে শচীন। সাফারি পার্ক সূত্রে বলা হয়েছিল, মাথায়, চোখের নিচে এবং পায়ে চোট পেয়েছিল শচীন।