উত্তাপ-হীন ধীমাল বস্তি, উপজাতির স্বীকৃতি না পেলেও ভোট দেবেন ধীমালরা

প্রায় ৩০০ বছর ধরে শিলিগুড়ি মহকুমায় বাস ধীমাল জনজাতির।

প্রায় ৩০০ বছর ধরে শিলিগুড়ি মহকুমায় বাস ধীমাল জনজাতির।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
dheemal_basti

হাসি মুখে ধীমালরা। ছবি- সন্দীপ সরকার

শিলিগুড়ি মহকুমাজুড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের উত্তাপ ছড়ালেও নিরুত্তাপ শিলিগুড়ি মহকুমার ধীমাল বস্তি। ভোটে তেমন উৎসাহ নেই ধীমালদের। প্রতি নির্বাচনে তাঁরা গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করলেও জনজাতিকে বাঁচাতে মেলেনি উপজাতি স্বীকৃতি, অভিযোগ ধীমালদের। কেন্দ্র-রাজ্যের কাছে দরবার করেও শূন্য হাতেই ফিরতে হয়েছে। তবে, আবেদন পূরণ না-হলেও এবারও তাঁরা ভোট দিতে দাড়াবেন ভোটের লাইনে। ভোট দেবেন, আশায় থাকবেন হয়তো বা মিলবে আদিবাসী স্বীকৃতি।

Advertisment

প্রায় ৩০০ বছর ধরে শিলিগুড়ি মহকুমায় বাস ধীমাল জনজাতির। অতিলুপ্তপ্রায় এই জনজাতির আশ্রয়স্থল শিলিগুড়ি মহকুমার নকশালবাড়ি ব্লকের মেচি নদী লাগোয়া গ্রামগুলোয়। সারা ভারতে এরা সংখ্যায় প্রায় দুই হাজারের কাছাকাছি। যার সিংহভাগই থাকেন নকশালবাড়ি ব্লকের মাল্লাবাড়ি, কেটুগাবর, সুরজবর, শিউবর, কিলারামজোত, মহদিজোত এলাকায়। অতীতে এই ধীমাল জনজাতি জঙ্গলের জীবজন্তু শিকারে পারদর্শী ছিল। এঁদের অন্যতম পেশা ঝুম চাষ। তবে এখন নিজেদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করতে ধীমাল মহিলারা বেছে নিয়েছেন ডোকরা শিল্পকে।

পাশাপাশি চলছে পশুপালন। শিক্ষার হার অনেক কম। এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পেড়িয়েছেন মাত্র তিন ধীমাল যুবক। অনেক ছেলেমেয়েই মাধ্যমিক পাস করে পড়াশোনা ছেড়ে চাষবাস, পশুপালন করছেন। আবার অনেকে ভিনরাজ্যে চলে যাচ্ছেন কাজের সন্ধানে। নকশালবাড়ি ব্লকের ধীমাল বস্তিতে গেলেই দেখা যায় এই ক্ষুদ্র জনজাতির নিজস্ব সংস্কৃতি, যা প্রযুক্তির যুগে আজও তাঁরা ধরে রেখেছেন।

এখনও তাঁদের মাটির বাড়ি। দেওয়ালের গায়ে আঁকা নানান গ্রামীণ চিত্র। ধীমালদের দীর্ঘদিনের দাবি উপজাতির স্বীকৃতি পাওয়া। উপজাতির স্বীকৃতি না-পাওয়ায় পিছিয়ে পড়া এই জনজাতি বঞ্চিত হচ্ছে। সরকারি নানা আর্থিক সুবিধাও পাচ্ছে না-বলেই মনে করছেন ধীমালরা। ধীমাল জনজাতির এক যুবক গর্জনকুমার মল্লিক জানান, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য ও কেন্দ্রের কাছে দাবি জানিয়ে আসছেন উপজাতি স্বীকৃতির। কিন্তু, আজও সেই স্বীকৃতি মেলেনি। ফলে তাঁরা সবকিছু থেকেই পিছিয়ে পড়ছেন। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে দেওয়া হোক ধীমাল জনজাতিকে উপজাতির স্বীকৃতি।

Advertisment

আরও পড়ুন- মৌলিক সুবিধাই বড়, বুঝেছে পাহাড়, গোর্খাল্যান্ডের দাবি ছেড়ে পাহাড়বাসী ব্যস্ত জিটিএ নির্বাচনে

এই আশা নিয়ে এবারও তাঁরা ভোট দেবেন পঞ্চায়েতে। জানা গেছে, ধীমাল জনজাতিকে উপজাতির মর্যাদা দিতে গত ২০০৮ সালে রাজ্য সরকারের কালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট ধীমাল জনজাতির খাদ্য, বাসস্থান, সংস্কৃতির ওপর একটি রিপোর্ট তৈরি করে। সেই রিপোর্ট রাজ্যের তরফে পাঠানো হয় দিল্লিতে। কিন্তু, তারপরেও একযুগ পেরিয়েছে। কিন্তু, মেলেনি উপজাতির স্বীকৃতি। ধীমালদের আক্ষেপ, পাহাড়ের ১০টি জনজাতির উন্নয়নে রাজ্য সরকার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড করলেও, তাঁদের এই ক্ষুদ্র জনজাতি বাদ পড়েছে।

Voter north bengal Nabanna