বিশেষ ছাড়! ৫ টাকার বদলে এবার ২ টাকা। শিলিগুড়িতে মিলছে ছোট-বড় সকলের নতুন পোশাক। নতুন বস্ত্রে সম্ভার নিয়ে এগিয়ে এসেছে শিলিগুড়ি ইউনিক সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি। এই 'দু'টাকার ফেরিওয়ালা'দের কাছ থেকে নতুন জামা-কাপড় কিনতে ভিড় জমিয়েছেন দুঃস্থরা।
এ এক অভিনব উদ্যোগ। পুজোয় সবার মুখে হাসি ফোটানোই লক্ষ্য এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির। নতুন জামা-কাপড়ের সম্ভার নিয়ে হাজির 'দু'টাকার ফেরিওয়ালা'রা। করোনাকালে মিলছে এবার বিশেষ ছাড়। গত বছরেও এ তল্লাটের দুঃস্থ মানুষজন এই সংস্থার কাছ থেকে নতুন জামা-কাপড় কিনেছেন ৫ টাকায়। এ বছর সেই দামেও বিশেষ ছাড়। মাত্র ২ টাকায় শহরে পোশাক বিক্রি করছেন সংস্থার সদস্যরা। শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্কের সামনে দেখা গেল এই 'ফেরিওয়ালা'দের। নীল পোশাক পড়ে কতিপয় তরুণ-তরুণী আট থেকে আশি সকলের মুখে হাসি ফোটাতে দারুণ ব্যস্ত।
পুজোর মুখে দু'টাকায় নতুন পোশাক কেনার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে এলাকার দুঃস্থ পরিবারগুলির মধ্যে। মাত্র ২ টাকায় নিজের পাঁচ বছরের নাতনির জন্য টুকটুকে লাল রঙের ফ্রক কিনে যারপরনাই খুশি গোপাল দাস নামে প্রবীণ এক রিক্সাচালক। জলভরা চোখে বৃদ্ধ বললেন, 'নাতনি বলেছে আজ তার জন্য পুজোর জামা কিনে নিয়ে তবেই যেন বাড়ি ফিরি। কিন্তু এখন আর লোকে সেভাবে রিক্সায় চড়েন না। সকাল থেকে রিক্সা চালিয়ে ৫০ টাকাও রোজগার হয়নি। ভাবছিলাম কীভাবে নাতনির ইচ্ছে পূরণ করব। আমার চিন্তা দূর করে দিল দু'টাকার ফেরিওয়ালারা। ২ টাকায় কিনে নিয়েছি নাতনির জন্য লাল ফ্রক। আজ নাতনি খুব খুশি হবে।'
এই দু'টাকার ফেরিওয়ালারা আসলে শিলিগুড়ি ইউনিক সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সদস্য। এই সোসাইটিই পুজোর মুখে দুঃস্থ সাধারণ মানুষের জন্য নিয়ে এসেছে দু'টাকার বিনিময়ে নতুন বস্ত্রের সম্ভার। সংস্থার সভাপতি রাকেশ দত্ত বলেন, 'গত বছরও আমরা একইভাবে শিলিগুড়িতে ৫ টাকার বিনিময়ে পুজোর সময় জামাকাপড় বিক্রি করেছি।'
আরও পড়ুন- অঞ্জলির ফুল বাড়ি থেকেই, পুজো কমিটিগুলিকে নির্দেশ লালবাজারের
তিনি আরও বলেন, 'করোনার জেরে অনেক দুঃস্থ মানুষের রোজগার কমে গিয়েছে। অনেকেই পুজোয় জামা-কাপড় কেনার সামর্থ হারিয়েছেন। তাদের কথা মাথায় রেখেই এবছরও নতুন পোশাক বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছি। যে কোনও পোশাকের দাম ধার্য করা হয়েছে মাত্র ২ টাকা। মানুষ যাতে দান মনে না করেন, সেই কারণেই সবাইকে পোশাক কিনতে হচ্ছে ২ টাকার বিনিময়ে। প্রথম দিন ৩০০ জনকে পোশাক বিক্রি করেছি। পুজো পর্যন্ত চলবে আমাদের দু'টাকার ফেরিওয়ালাদের স্টল।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন