ভারাক্রান্ত হৃদয়ে শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে নিহত চার যুবকের শেষকৃত্য সম্পন্ন করলেন গ্রামবাসীরা। জোড়পাটকি গ্রামে এদিন ছিল শুধুই শোকের ছায়া। শনিবার চতুর্থ দফার ভোটের দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে ঝরে যায় চার চারটি তরতাজা প্রাণ। এরপরই মাথাভাঙা হাসপাতালে স্বজনহারাদের কান্নার রোলে ভারী হয় পরিবেশ।
রবিবার ময়নাতদন্তের পর হাসপাতাল থেকে মৃতদের দেহ পৌঁছয় গ্রামে। শোক মিছিল করে নিহতদের শেষকৃত্য সারেন গ্রামবাসীরা। ভোটের বুথের কাছে যে মাঠে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে, সেখানে শহিদ বেদি তৈরি হয়। মেরাপ বেঁধে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানোর বন্দোবস্ত করা হয়। শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন গ্রামবাসীরা। সেখান থেকে মৃতদেহগুলি তাঁদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
এমন ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড কোনওদিন ঘটেনি এই গ্রামে। এত ভোট গিয়েছে, কখনও রক্তপাত হয়নি। কিন্তু শনিবার কী যে হল, ঘটনার আকস্মিকতায় শোকস্তব্ধ গ্রামবাসীরা। গ্রামের চার সন্তানের মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা। তাঁদের প্রশ্ন, কেন গুলি চালাল কেন্দ্রীয় বাহিনী, যাঁরা গুলি চালাল তাঁদের বিরুদ্ধে কেন কোনও ব্যবস্থা নিল না কমিশন?
পুলিশ সুপার গতকাল দাবি করেছিলেন, ২০০-৩০০ জন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘিরে ফেলেছিল। সেই দাবি অস্বীকার করেছেন গ্রামবাসীরা। পাল্টা তাঁদের প্রশ্ন, যদি এমন ঘটনা ঘটেও থাকে, তাহলে কেন রবার বুলেট বা টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করা হয়নি? পায়ে গুলি না করে বুক লক্ষ্য করে কেন গুলি চালানো হয়েছে? গ্রামবাসীদের দাবি, নিহতদের অধিকাংশই তৃণমূল সমর্থক। কিন্তু প্রত্যেকেই দরিদ্র পরিবারের। দুজন রাজমিস্ত্রি, একজন কৃষক এবং একজন মাথাভাঙা কলেজের পড়ুয়া।
চার জনের মৃত্যুর প্রতিবাদে আজ, রবিবার কালাদিবস পালন করেন গ্রামবাসীরা। পাশাপাশি, গ্রামে শোকমিছিল করেন তাঁরা। কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার জনের মৃত্যুর ঘটনায় নির্বাচন কমিশনকেও কাঠগড়ায় তুলছেন তাঁরা। সেইসঙ্গে ন্যায় বিচার দাবি করেছেন তাঁরা।