Supreme Court On RG Kar Case: মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানিতে প্রশ্ন ওঠে, রাজ্য কেন রাত্তিরের সাথী প্রকল্পে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করছে। কেন সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হবে, এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ। সেখানে বলা হয়েছে কোনও আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কাজে সিভিক ভলান্টিয়ারদের বিরত রাখতে হবে।
সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য। প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, সিভিক ভলান্টিয়ারদের কে নিয়োগ করে, কী ভাবে নিয়োগ করা হয় তাঁদের, এখন রাজ্যে কত জন সিভিক ভলান্টিয়ার আছেন। রাজ্য জানিয়েছে, সরকারি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিয়োগ করা হয়।
পরের শুনানিতে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়ে যাবতীয় তথ্য চাইলেন প্রধান বিচারপতি। রাজ্যের কাছে হলফনামা চাওয়াহয়েছে। প্রধান বিচারপতি বলেন রাজ্যকে হলফনামা দিয়ে বিস্তারিত জানাতে হবে কী ভাবে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ হয়। নিয়োগের শিক্ষাগত যোগ্যতা কী? নিয়োগের আগে কী ভাবে তাঁদের দেওয়া তথ্য যাচাই করা হয়? কোন কোন প্রতিষ্ঠানে সিভিক ভলান্টিয়ার আছে? সিভিক ভলান্টিয়ারকে কী ভাবে বেতন দেওয়া হয়, কত বাজেট বরাদ্দ করা হয় তার জন্য, যাবতীয় তথ্য।
প্রধান বিচারপতি সাফ জানিয়ে দেন এদিন, স্কুল-হাসপাতালে নিরাপত্তার দায়িত্বে সিভিক ভলান্টিয়ার রাখা যাবে না। রাজ্যকে হলফনামায় নিশ্চিত করতে হবে কোনও স্কুল-হাসপাতালের মতো স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠানে সিভিক ভলান্টিয়ার রাখা যাবে না। এমনকী, কোনও থানা এবং তদন্তের সঙ্গে জড়িত কোথাও সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হয়নি, তা নিশ্চিত করতে হবে রাজ্য সরকারকে। এদিনের মতো শুনানি শেষ হয়ে যায়। দীপাবলির পর হবে পরের শুনানি।
পাশাপাশি, এদিন শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জানতে চান, জুনিয়র ডাক্তাররা কি কাজে ফিরেছেন? জবাবে জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী জানান, সকলেই কাজে ফিরেছেন। তা মেনেও নেয় রাজ্য। রাজ্যের আইনজীবী বলেন, ‘‘৭ জন যাঁরা অনশন করছেন, তাঁরা বাদে সকলেই কাজে ফিরেছেন।’’
আরজি কর কাণ্ড মামলায় প্রথম চার্জশিট শিয়ালদহ আদালতে জমা দিয়েছিল সিবিআই। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট পঞ্চম স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেয় সিবিআই। সেই স্টেটাস রিপোর্টে চার্জশিটের কথা উল্লেখ রয়েছে। আদালতে সিবিআই জানিয়েছে, ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার ছাড়া আর কেউ এই ধর্ষণ-খুন মামলায় জড়িত কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এদিন সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকার জানিয়েছে, আরজি কর মামলায় তদন্ত করছে সিবিআই। তাই সেই মেডিক্যাল কলেজে কাজ করতে গেলে সিবিআইয়ের অনুমতি প্রয়োজন। সেই অনুমতি পাওয়ার পরই কাজ শুরু করা হয়। ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সব কাজ শেষ হয়ে যাবে।
এছাড়াও মেডিক্যাল কলেজগুলিতে কত কাজ হয়েছে তার খতিয়ান সুপ্রিম কোর্টের কাছে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। মেডিক্যাল কলেজগুলিতে সিসিটিভি বসানো, শৌচালয়, রেস্ট রুম নির্মাণের কাজ কত দূর এগিয়েছে। সে সম্পর্কে তথ্য জমা দিয়েছে রাজ্য সরকার। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, এই কাজের জন্য হাজার কোটির বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেক কাজ হয়ে গেছে। বাকি কাজ ২৫ অক্টোবরের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। আর আরজি করের কাজ শেষ হবে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে। ইতিমধ্যেই হাসপাতালগুলোর নিরাপত্তার বিষয় পর্যবেক্ষণ করতে কমিটি তৈরি করা হয়েছে। যদিও তা মানতে চাননি চিকিৎসকদের আইনজীবীরা।
আরও পড়ুন কলকাতায় জোড়া কার্নিভাল, পুলিশে-পুলিশে ছয়লাপ রেড রোড-রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ যেন 'যুদ্ধক্ষেত্র'
এদিন সুপ্রিম কোর্ট সলিসিটর জেনারেল বলেন, আরজি করের নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে সিবিআই আধিকারিকরা। নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি জানান, রিপোর্ট তা উল্লেখ আছে। সিবিআইয়ের কাছে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় জানতে চান, তদন্তের অগ্রগতি কেমন। টাস্ক ফোর্সের কাজ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
সলিসিটর জেনারেল টাস্ক ফোর্স নিয়ে জানান, টাস্ক ফোর্স ৯ সেপ্টেম্বর শেষবার বৈঠক করেছিল। তার পর আর কোনও বৈঠক করেনি। কেন এক মাসের বেশি সময় ধরে বৈঠক হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি।