Maldah: শীতের কাকভোরে সবে দিন শুরু হয়েছে মালদার হরিশচন্দ্রপুরের হরদম নগর গ্রামে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সাতসকালে বাড়ির বাইরে সাক্ষাৎ যমদূত ওঁৎ পেতে বসে, ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি গোটা গ্রাম। বাড়ির বাইরে পা রাখতেই চিৎকার, চেঁচামেচি, শোরগোল। ২০-২৫টি শিয়ালের একটি পালের আক্রমণে মালদার ওই গ্রামে ক্ষত-বিক্ষত ৩৮ জন। যাদের মধ্যে ২০ জনের আশঙ্কা অবস্থাজনক। প্রত্যেকেই হরিশচন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা হওয়ায় অনেকের প্রাণ বাঁচানো গিয়েছে। এমনটাই স্থানীয় পঞ্চায়েত সূত্রে দাবি। ঘটনার একদিন পরেও গ্রামের পরিবেশ থমথমে। নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করতেই লাঠি নিয়ে পাহারায় গ্রামবাসীরা।
ঠিক কী হয়েছিল সেই অভিশপ্ত সকালে? এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ‘দিনের শুরুতেই যে যার কাজ নিয়ে যখন বাড়ি থেকে বেরোচ্ছিলেন, তখন হামলা চালায় শিয়ালের পাল। রাত থেকেই ওরা গ্রামে ঢুকে বসেছিল। দুই-তিন জনকে মুখে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে সেই পাল। এই অতর্কিত হামলায় আঙুল খুইয়েছেন এক গ্রামবাসী। পায়ের এবং ঘাড়ের মাংস খোবলানো কয়েকজনের। চিৎকার শুনেই আমরা লাঠি নিয়ে বেরিয়ে ওদের ধাওয়া করি। আমাদের পাল্টা লাঠির ঘায়ে দুটি শিয়াল মারা গিয়েছে।‘ জানা গিয়েছে, এই ঘটনার পর থেকেই আতঙ্কে গৃহবন্দি মহিলা, শিশু এবং প্রবীণরা।
এদিকে, শুক্রবার সকালে নকশালবাড়ি ব্লকের গঙ্গারাম চা বাগান সংলগ্ন ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে থেকে একটি চিতাবাঘের ক্ষতবিক্ষত দেহটি উদ্ধার করল বনদফতরের বাগডোগরা রেঞ্জের বনকর্মীরা। চলতি বছরে এই এলাকাতেই জাতীয় সড়কের ওপর গাড়ির ধাক্কায় চিতাবাঘের মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২।
জানা গিয়েছে, এদিন সকালে গঙ্গারাম চা বাগানের একজন নিরাপত্তা রক্ষী জাতীয় সড়কের উপর চিতাবাঘটির ক্ষতবিক্ষত দেহ দেখতে পান। এরপরই তিনি খবর দেন চা বাগান কর্তৃপক্ষকে। ঘটনাস্থলে পৌঁছান চা বাগানের ম্যানেজার কুলদীপ মিঞ্জ। তিনি বনদফরে খবর দিলে বাগডোগরা রেঞ্জের বন কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌছে চিতাবাঘের দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত চিতাবাঘটির বয়স আনুমানিক এক বছর। জাতীয় সড়ক পারাপারের সময় কোনভাবে গাড়ির সামনে চলে আসে। গাড়ির ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মারা যায় এই চিতাটি। এর আগেও ওই এলাকায় একই ঘটনা ঘটেছে।
চা বাগানের ম্যানেজার কুলদীপ মিঞ্জ বলেন, “মাঝেমধ্যেই এলাকায় চিতাবাঘের দেখা মেলে। একাধিকবার গ্রাম থেকে ছাগল, শুয়োর নিয়ে গিয়েছে। একাধিক চিতাবাঘ রয়েছে এই চাবাগান এলাকায়। আতঙ্কের মধ্যেই থাকতে হয় আমাদের। কিন্তু এখন বিষয়টি সয়ে গিয়েছে।” কার্শিয়াং ফরেস্ট ডিভিশনের ডিএফও হরি কৃষ্ণাণ বলেন, “কী করে ঘটনাটি ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই এলাকায় চিতাবাঘের হানা রুখতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। “
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন