Advertisment

১০০ কোটির বাজেট নিয়ে আকাশপথে নজরদারি সাগরে

এবছর গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণকে আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রযুক্তি নির্ভর করে তোলা হচ্ছে। তার জন্য বানানো হয়েছে মেগা কন্ট্রোল রুম।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

বৈঠকে জেলাশাসক

ড্রোন নয় সাগর মেলায় নজরদারি চালাতে তৈরি স্কাই সারভিল্যান্স। গঙ্গা সাগরে এই প্রথম ব্যবহার করা হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তির এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা। যা তীর্থযাত্রীদের অনেক বেশি সুরক্ষা দেবে বলে আশাবাদী জেলা প্রশাসন। তার উপর ১০০ কোটির বাজেট নিয়ে তীর্থযাত্রীদের অপেক্ষায় সেজেগুজে প্রস্তুত রাজ্যের বৃহত্তম এবং দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সাগর মেলা।

Advertisment

প্রশাসন সূত্রের খবর, গত কয়েক বছর যাবৎ সাগর মেলার তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার করা হতো ড্রোন ক্যামেরা। এবার সেই ড্রোনের জায়গায় স্থান পেয়েছে 'প্যান কিল জুম' নামের এই ক্যামেরা। বিষেজ্ঞরা মনে করছেন এই হিলিয়াম বেলুন নির্ভর ক্যামেরার সাহায্যে নিখুঁত ছবি তোলা সম্ভব হবে মেলা প্রাঙ্গণ ও সংলগ্ন এলাকার। মূলত জনবহুল এলাকায় ছবি তোলার কাজ করবে এই বিশেষ প্রযুক্তির ক্যামেরা।

আরও পড়ুন: নেতাজির পদাঙ্ক অনুসরণ করছেন 'আরেকজন বাঙালী', বললেন অভিষেক

প্রশাসন সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, ড্রোন নির্ভর ক্যামেরা ব্যবহার করায় কিছু সমস্যা আছে। কিছুক্ষণ চলার পর ব্যাটারি শেষ হয়ে ক্যামেরা বন্ধ হয়ে যায়। ৩০ মিনিট পর পর ব্যাটারি চার্জ দিতে হয়। শুধু তাই নয়, ড্রোন নির্দিষ্ট উচ্চতায় ওঠার পর থেমে যায়। নামানোর অসুবিধা হয়। সেক্ষেত্রে বেলুন ক্যামেরা অনেক বেশি কার্যকরী। প্রতিটি ক্যামেরা সহ বেলুনের দাম প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা, এবং প্রতিটি ক্যামেরায় থাকবে চারটি করে বেলুন, যেগুলি উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিমে নজর রাখবে। ৭০ ফুট উচ্চতা থেকে এই ক্যামেরাগুলি নজর রাখতে পারবে। সুবিধামত ঘোরানো যাবে তিন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মেগা কন্ট্রোল রুম থেকে।

এছাড়াও এবছর মেলা প্রাঙ্গণকে আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রযুক্তি নির্ভর করে তোলা হচ্ছে। তার জন্য বানানো হয়েছে মেগা কন্ট্রোল রুম। যেখান থেকে শুধু মেলা প্রাঙ্গণ নয়, কচুবেড়িয়া, চেমাগুড়ি থেকে শুরু করে বেণুবন পয়েন্ট পর্যন্ত সবটাই থাকবে সিসিটিভির নজরে। সেইসঙ্গে বানানো হচ্ছে অস্থায়ী আবহাওয়া অফিসও। প্রতি ঘন্টায় দেওয়া হবে আবহাওয়ার আপডেট। পুরো বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক উচ্চ পর্যায়ে মিটিংও হয়েছে।

publive-image সাংবাদিক সম্মেলনে প্রকাশ হলো মেলার নিয়মাবলী

অপরদিকে গঙ্গাসাগর মেলাকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসনের প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনে জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, "কম বেশি ১০০ কোটি টাকার বাজেট নিয়ে আমরা নেমে পড়েছি। তার উপর কেন্দ্রীয়ভাবে মুড়ি গঙ্গায় পলি তোলার কাজ চলছে।"

জানুয়ারি মাসের ৯ তারিখ থেকে শুরু হতে চলেছে গঙ্গাসাগর মেলা, চলবে ১৮ তারিখ পর্যন্ত। গতবারের তুলনায় এ বার মেলায় ভিড় আরও বাড়বে বলে মনে করছে প্রশাসন। সাংবাদিক সম্মেলনে জেলাশাসক বলেন, "তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে আমরা সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি। ইতিমধ্যে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করে দিয়েছেন, কোন দুর্ঘটনা ঘটলে তীর্থযাত্রী পিছু পাঁচ লক্ষ টাকা বিমা। বাবুঘাট থেকে গঙ্গাসাগর, যেখানেই দুর্ঘটনা ঘটুক না কেন, তীর্থযাত্রীরা এই বিমার সুবিধা পাবেন।"

আরও পড়ুন: হিউম্যান লাইব্রেরি: শহরে এই প্রথম বই-মানুষের বৈঠক

জেলাশাসক আরো বলেন, "গত বছর বাঁশের ব্যারিকেড করা হয়েছিল, এবছর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে লোহার ব্যারিকেড করা হয়েছে।" পাশাপাশি পুলিশি নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, "এবছর ৩০ জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সহ ৮৯ জন ডিএসপি, ২৪০ জন ইন্সপেক্টর সহ ৩ হাজার কনস্টেবল, ২ হাজার হোমগার্ড সহ ১ হাজার সিভিল ডিফেন্স ও ২ হাজার এনডিআরএফ কর্মী মোতায়েন থাকবেন।"

এদিন রত্নাকর রাও আরো বলেন, "মেলা উপলক্ষ্যে কলকাতার প্রিন্সেপ ঘাট থেকে প্রতিদিন দুটি করে স্পেশাল ট্রেন চলবে। রাজ্য পরিবহণ দফতরের পক্ষ থেকে স্পেশাল বাস থাকবে।" এর পাশাপাশি তিনি বলেন, এবছর প্রথম গঙ্গাসাগরে স্পেশাল আইসিইউ তৈরি করা হয়েছে। ৫০ টি অ্যাম্বুলেন্স এবং ১০০ টি এনজিও কাজ করবে সেখানে।

এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে জেলাশাসক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক মৃণাল রানো।

Advertisment