মহিলাদের স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে প্রাণপাত করছেন শুক্লা দেবনাথ। তার এই কর্মকাণ্ডকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সকলেই। স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে এখন মহিলারা আগের থেকে অনেক বেশি সচেতন। আর প্রত্যন্ত অঞ্চলের মহিলাদের পাশে থেকে তাদের স্বনির্ভরতার পাঠ শেখাচ্ছেন ডুয়ার্সের নিউ হাসিমারার সুভাষপল্লির বাসিন্দা শুক্লা।
Advertisment
কোন সংস্থা খুলে বা কোন সংস্থার হয়ে নয়। একেবারে নিজের একান্ত প্রচেষ্টাতেই চা বাগানের পিছিয়ে পড়া মেয়েদের কর্মসংস্থানের দিশা দেখাচ্ছেন তিনি। কখনও মেয়েদের দিচ্ছেন রুপচর্চার প্রশিক্ষণ তো আবার কখনও ক্যারাটে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করছেন তিনি। নিজের হাতে মহিলাদের মধ্যে বিলি করেন স্যানিটারি ন্যাপকিন। পাশাপাশি বাড়িতে শিশুদের জন্য খুলে ফেলেছেন আস্ত একটা কোচিং ক্লাস। সেই ক্লাসে ভিড় জমান চা বাগানের প্রত্যন্ত অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া খুদে পড়ুয়ারা।
অনুপ্রেরণা বলতে মা! মানুষের জন্য কাজ করতে যে আলাদা কোন মঞ্চের প্রয়োজন হয়না তা প্রমাণ করে দেখিয়েছেন তিনি। একা নিজের ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে সাধারণ মানুষের পাশে থেকছেন দুর্দিনেও। কোভিড কালেও তার এই কর্মকাণ্ডে কোন ছেদ পড়েনি। একা হাতেই সামলেছেন গুরুদায়িত্ব। কোন মঞ্চ তৈরি না করে নিজেই বাগানের মহিলা ও কিশোরীদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি বলে জানিয়েছেন শুক্লা। শুক্লার কাছেই রুপচর্চার কাজ হাতে কলমে শিখেছেন পায়েল। তিনি নিজে আবার এখন শুক্লার পাশে থেকে তার কর্মযজ্ঞকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করছেন।
পায়েল বলেন, ‘আজকের দিনে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যায়না, যিনি নিজে সময় ও অর্থ ব্যয় করে মেয়েদের আগামীর জন্য নিজের পায়ে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখান। আমরা সকলের শুক্লা দিদির কাজে কাজ শিখে নিজেরা আজ উপার্জন করছি পাশাপাশি বাগানের পিছিয়ে পড়া মেয়েদের আগামীর পথ দেখাচ্ছি’।
শুধু পিছিয়ে পড়া বাগানের মেয়েদের সাবলম্বীই নয়, আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া সমাজের দুঃস্থ মানুষের সেবাতেও নিজের প্রাণপাত করে চলেছে তিনি। শুক্লা বলেন, আমার ইচ্ছে আছে সারাজীবন এইভাবে শ্রমিক পরিবারের মেয়েদের স্বনির্ভর করতে তাঁদের পাশে থাকার। তাদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করার থেকে শান্তি আর কোন কিছুতেই নেই”।