scorecardresearch

করোনার কোপ, যে হাতে উঠত ঢাকের কাঠি, সেই হাতই ব্যস্ত বিড়ি বাঁধার কাজে

করোনাকালে পুজোর বাজেট কমিয়ে দিয়েছেন উদ্যোক্তারা। কমেছে পুজোর জাঁকজমকও।

Some womens dhaki of Ashokenagars face financial diifdiculties due to corona
সংসার চালাতে ফের বিড়ি বাঁধার কাজ শুরু করেছেন মহিলা ঢাকিরা।

করোনাকালে পুজোর বাজেট কমিয়ে দিয়েছেন উদ্যোক্তারা। কমেছে পুজোর জাঁকজমকও। পুজোমণ্ডপে ঢাক বাজানোর বরাত কমেছে। কাজ না পেয়ে তাই ফের পুরনো পেশায় অশোকনগরের মহিলা ঢাকিরা। যে হাতে পুজোর সময় উঠত ঢাকের কাঠি, সেই হাতই এখন ব্যস্ত বিড়ি বাঁধার কাজে। কেউ কেউ আবার সংসার টানতে বেছে নিয়েছেন পরিচারিকার কাজ।

উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের বেশ কিছু গরিব পরিবারের মহিলাদের নিয়ে ২০১৭ সালে মহিলা ঢাকির দল তৈরি করেন এলাকারই বাসিন্দা সজল নন্দী। অমূল্য চন্দ্র রিদম মিউজিক্যাল কলেজে চলে ঢাকিদের প্রশিক্ষণ। অশোকনগরের তিন নম্বর ওয়ার্ডের নট্ট পাড়ার বাসিন্দা সজল নন্দীর ডাকে সাড়া দিয়ে এলাকার বেশ কিছু মহিলা পুজোর সময় বাড়তি আয়ের তাগিদে ঢাক বাজাতে শুরু করেন। বিড়ি বাঁধা, পরিচারিকার কাজ ছেড়ে পুজোর সময়ে ঢাক বাজানোকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন এলাকার ওই মহিলারা।

সজল নন্দীর দলে বর্তমানে আশোকনগরের ৬০ জন মহিলা ঢাক বাজান। প্রথম বছর থেকেই পুজোয় ঢাক বাজানোর ডাক মিলতে শুরু করেছিল। ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ পর্যন্ত পুজোর আগে অনুষ্ঠান ও অনুশীলনের জন্য নাওয়া-খাওয়ার ফুরসত পেতেন না ওই মহিলারা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পুজোর ক’দিন চুটিয়ে ঢাক বাজাতেন এই মহিলারা। বাড়তি উপার্জন ঘরে আসায় আনন্দ ছিল পরিবারেও। এমনকী বাংলা ছাড়াও ভিনরাজ্যে গিয়ে ঢাক বাজানোর ডাক পড়তো এই মহিলাদের। শুধু পুজোর সময়েই নয়। বছরভর নানা অনুষ্ঠানে অশোকনগরের এই মহিলারা ঢাক বাজানোর বরাত পেতেন।

করোনা কেড়েছে সব কিছু। অতিমারীর করাল গ্রাস অশোকনগরের এই মহিলা ঢাকিদের জীবনেও। ২০২০ সাল থেকে প্রায় বন্ধ ঢাক বাজিয়ে আয়ের পথ। অশোকনগরের এক ঢাকি অঞ্জনা নন্দী বলেন, “এবার পুজোয় এতটাই খারাপ অবস্থা যে সংসার চালাতে আবার বিড়ি বাঁধার কাজ শুরু করতে হল। এতো ভাল-ভাল জায়গায় কাজ করার পরে নতুন করে আবার বিড়ি বাঁধতে কিছুটা আত্মসম্মানে বাঁধছে। কিন্তু এখন আর কোনও উপায় নেই।”

এলাকারই অন্য আর এক ঢাকি অঞ্জনা হালদার বলেন, “আর কয়েকদিন পরেই পুজো। কিন্তু কোনও বায়না নেই। ছেলে-মেয়েদের পুজোর নতুন জামা কাপড় কেনা, তাদের বিভিন্ন ধরনের আবদার মেটাতে ফের বিড়ি বাঁধার কাজে ফিরতে হল। সংসারের হাল ধরতে এছাড়া এখন আরও কোন উপায় নেই।”

আরও পড়ুন- পুজো মিটলেই ফের ভোট, বাকি চার কেন্দ্রে উপনির্বাচন ৩০ অক্টোবর

মহিলা ঢাকিদের এই গোষ্ঠীর কর্ণধার সজল নন্দী বলেন, “এখনও পর্যন্ত মাত্র দু’-তিনটে বায়নার কথা হয়েছে। তবে তাঁরা পারিশ্রমিক খুবই কম দেবেন বলেছেন। শেষ পর্যন্ত ঠিক কী হবে এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে যতগুলি বায়না হোক না কেন, চেষ্টা করছি সকলকে কম-বেশি কাজ দিতে। কাজ না থাকায় ওদের সংসারের হাল খুবই খারাপ।গরিব পরিবারের মহিলাদের সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচতে নতুন সুযোগ এনে দিতে চেয়েছিলাম। তাঁদের প্রশিক্ষণও দিচ্ছিলাম। কিন্তু কাজ না পেয়ে তাঁরা সংসার চালাতে ফের পুরনো পেশায় ফিরছেন।”

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Westbengal news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Some womens dhaki of ashokenagars face financial diifdiculties due to corona