ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট-এ চমকপ্রদ ফল করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিলেন মালদার ইংরেজবাজার এলাকার এক মাছ বিক্রেতার ছেলে। রোহন মিঞাঁ নামে ওই যুবক সাততাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। ছোট থেকেই মেধাবী রোহনকে তাঁর এই চমকপ্রদ ফলের জন্য মঙ্গলবার ফুলের তোড়া দিয়ে সংবর্ধনা জানালেন গ্রামবাসীরা।
নিট পরীক্ষায় রোহনের এই সাফল্যে তাঁরা রীতিমত গর্ববোধ করছেন বলে প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন। সর্বভারতীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষায় রোহন ৭২০ নম্বরের মধ্যে ৬১৬ পেয়েছে। যার জেরে সে এমবিবিএস পড়ার সুযোগ পেল। তার র্যাংক ১৩,৮৬৫। রোহনের এই সাফল্যে খুশি গোটা সাততাড়ি গ্ৰামের বাসিন্দারা।
ওই ছাত্রের বাবা মেহতাব মিঞাঁ পেশায় একজন মাছ বিক্রেতা। আর্থিক অনটন সত্ত্বেও দিনরাত খেটে ছেলেকে তিনি বিজ্ঞান বিষয়ে পড়িয়েছেন। রোহান মিঞা স্থানীয় সাটটারি হাইস্কুলে মাধ্যমিক এবং আইডিয়াল হাইমাদ্রাসা থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছে। তারপরে ফিজিক্সে অনলাইনে কোচিং নিচ্ছিল। একবছর কোচিং নেওয়ার পরে এবছর নিট পরীক্ষায় সফল হয়েছে। ডাক্তার হয়ে সে এলাকার সাধারণ মানুষের সেবা করতে চায় বলে জানিয়েছে। ডাক্তারি পাশ করে এসে গ্রামেই নিজের চিকিৎসাকেন্দ্র খুলতে চায়।
আরও পড়ুন- স্বস্তিতে জিতেন্দ্র, CID তদন্তে স্থগিতাদেশ কলকাতা হাইকোর্টের
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, বরাবরের মেধাবী হলেও বাড়ির কাজকর্মে নিয়মিত সহায়তা করল রোহন। শুধু তাই নয়, এলাকার কোনও প্রতিবেশী পড়ুয়া তাঁর কাছে পড়া দেখতে এলে, দেখিয়েও দিত। আর, তাই রোহনের এই সাফল্যে প্রতিবেশীরা অত্যন্ত খুশি হয়েছেন। কারণ, তাঁরা নিশ্চিত রোহন যখন বলেছে, ও প্রতিশ্রুতি রাখবে। গ্রামে ফিরে এখানেও চিকিৎসা করবে।
ছেলে যে এত ভালো ফল করবে, ডাক্তারিতে চান্স পেয়ে যাবে, তাঁরা ভাবতেও পারেননি বলেই জানিয়েছেন রোহনের মা ও বাবা। রোহনের বাবা মেহতাব মিঞাঁ বলেন, 'ছেলে বরাবরই লেখাপড়ায় ভালো। ও ভালো ফল করবে, সেটা শিক্ষকরাও আশা করেছিলেন। কিন্তু, ডাক্তারিতে যে চান্স পেয়ে যাবে, এতটা পরিবারের কেউ আশা করেনি। তবে, রোহন আশা ছাড়তে নারাজ ছিল। লাগাতার চেষ্টা করে যাচ্ছিল। তাতেই সাফল্য মিলল।'