পুরনো দলের প্রতি একরাশ ক্ষোভ উগরে এবার আরও বিস্ফোরক একদা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছায়াসঙ্গী সোনালী গুহ। 'কালীঘাটের কাকুর পর এবার কালীঘাটের ডাকুও যাবে'। 'কালীঘাটের ডাকু' বলতে তিনি কাকে নিশানা করেছেন তা স্পষ্ট না করলেও তাঁর ইঙ্গিতটি নিয়ে কিন্তু রাজ্য রাজনীতিতে জোরদার চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় দফতরে ডেকে পাঠিয়ে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর 'কালীঘাটের কাকু' ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে গ্রেফতার করেছে ইডি। তদন্তে সহযোগিতা করছেন না সুজয়কৃষ্ণ, এমনই দাবি ইডি সূত্রের। এরই মধ্যে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কার্যত বোমা ফাটালেন একদা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সাতগাছিয়ার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক সোনালী গুহ।
সংবাদমাধ্যমে সোনালী গুহ বলেন, 'কালীঘাটের কাকু গেছে, এবার কালীঘাটের ডাকুও যাবে।' নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে এর আগে ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিষ্ণপুরের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা বলে পরিচিত জ্ঞানানন্দ সামন্তর বাড়িতে হানা দিয়েছিল ইডি। এই জ্ঞানানন্দ সামন্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সদস্য।
আরও পড়ুন- বোমা ফাটালেন ‘কালীঘাটের কাকু’র দাদা, অভিষেককে জড়িয়ে বিস্ফোরক দাবি
সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে বিপুল পরিমাণ টাকা তুলেছেন জ্ঞানানন্দও, এমনই অভিযোগ সোনালী গুহর। সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে টাকা তুলে সেই টাকা 'কালীঘাটের কাকু' ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের হাতেই পৌঁছে দিতেন জ্ঞানানন্দ, সংবাদমাধ্যমে বিস্ফোরক এই অভিযোগে তোলপাড় ফেলে দিয়েছেন সোনালী। এমনকী জ্ঞানানন্দ টাকা নিয়ে তাঁর দুই ভাইপোকেও সরকারি চাকরি করে দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন সোনালী। যদিও পরবর্তী সময়ে তাঁদের সেই চাকরি খোয়াতে হয় বলেও জানায়িছেন তিনি।
সোনালী গুহর কথায়, 'জ্ঞানানন্দ সামন্ত নাকি অনেকের থেকে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিতেন। জ্ঞানানন্দের দুই ভাইপোও বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছিল। ভাইপোদের থেকেও ও টাকা নিয়েছে। ভাইপোদেরও রেয়াত করেনি। এই টাকা সরাসরি কালীঘাটের কাকু বা সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কাছে যেতে।''
আরও পড়ুন- মাস পয়লায় দারুণ খবর! একধাক্কায় বেশ খানিকটা কমল রান্নার গ্যাসের দাম
এদিকে, সোনালী গুহর এই অভিযোগ প্রসঙ্গে বিষ্ণপুরের তৃণমূল নেতা তথা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সদস্য জ্ঞানানন্দ সামন্ত সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, তাঁকে এপ্রসঙ্গে সাতগাছিয়ার তৃণমূল বিধায়ক মোহনচন্দ্র নষ্কর কোনও কিছু বলতে নিষেধ করেছেন। তবে বিধায়ক মোহনচন্দ্র নষ্কর অবশ্য জ্ঞানানন্দের সেই বক্তব্য উড়িয়ে দিয়েছেন।
তিনি সংবাদমাধ্যমকে পাল্টা জানিয়েছেন, তিনি কাউকে কিছু বলতে নিষেধ করেননি। যদি কেউ এব্যাপারে কিছু দাবি করে তবে সেটা তাঁর নিজস্ব মতামত বলেও জানিয়েছেন বিধায়ক। তবে সোনালী গুহর অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। সোনালীকে কটাক্ষ করে কুণাল ঘোষের টিপ্পনি, 'বিজেপি সাজতে চেয়েই সোনালির এই কুৎসা।'