সিপিএম-বিজেপিকে এবার এলাকা ছাড়া করার 'হুমকি' সৌগত রায়ের। ''সিপিএম-বিজেপি চোর চোর বললে তৃণমূলের কর্মীরাও চুপ করে বসে থাকবেন না।'' সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও-য় এমনই বলে শোনা গিয়েছে তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়কে। যদিও সেই ভিডিও-র সত্যতা যাচাই করেনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা। তবে সৌগত রায়ের এই বক্তব্যে বেজায় চটেছে বিজেপি-সিপিএম।
রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির হাতে-গরম এমন অভিযোগ পেয়ে কোমর বেঁধে ময়দানে বিরোধীরা। সিপিএম-বিজেপি-কংগ্রেস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে গড়া দলকে তুলোধনা করে রাজ্যজুড়ে 'চোর-চোর' বলে সুর চড়াচ্ছে। এতেই বেজায় ক্ষুব্ধ তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও-য় বিরোধীদের আক্রমণ করে বেশ কিছু মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে সৌগত রায়কে। যদিও সেই ভিডিও-র সত্যতা যাচাই করেনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা।
ঠিক কী বলেছেন সৌগত রায়?
সৌগত রায়কে ওই ভিডিও-য় বলতে শোনা যাচ্ছে, ''চোর বলে উত্যক্ত করলে তৃণমূলকর্মীরাও চুপ করে বসে থাকবেন না। সিপিএম-বিজেপি চোর বললে আমরা চুপ থাকব না। কিছু লোক দুর্নীতি করে দলের বদনাম করেছে। আমরা তা সহ্য করব না। সিপিএম বিজেপি, কংগ্রেসকে বলছি, আপনারা এই ভুল করবেন না। তৃণমূলের দিকে তাকিয়ে 'চোর ধরো জেল ভরো' বলবেন না। তৃণমূলের ৯৮ শতাংশ কর্মীই সৎ, ২ শতাংশ দুর্নীতিগ্রস্ত হলে আমরা বের করে দেব। তবে সিপিএম-বিজেপি যদি দিনের পর দিন আমাদের চোর বলে উত্যক্ত করে তাহলে কিন্তু তৃণমূলের কর্মীরা চুপ করে বসে থাকবেন না। ওদের এলাকা ছেড়ে যেতে হবে।''
আরও পড়ুন- Special: শিব-প্রেমেই লুকিয়ে কেষ্ট-রহস্য? ফি-বার ভোটের আগে কোথায় যেতেন অনুব্রত?
সৌগত রায়ের এই মন্তব্যে যেন আগুনে ঘি পড়েছে। বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদের এই বক্তব্যের তীব্র সমালোচনায় সরব সিপিএম। দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ''সৌগতবাবু যত দিন যাচ্ছে হুমকি দিচ্ছেন। দুস্কৃতীদের মতো কথা বলছেন সৌগত রায়। এলাকায় থাকতে পারবেন না পর্যন্ত বলে দিচ্ছেন। চোরেদের একটা তালিকা প্রকাশ করুন। অযথা বাড়তি কথা বলছেন।''
অন্যদিকে, সৌগত রায়ের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ''সবে তো খাঁজা শুরু হয়েছে। খোঁজার শুরুতেই উনি ২ শতাংশ চোর বলে স্বীকার করে নিয়েছেন। পার্টির প্রাক্তন মহাসচিবই চোর বলে ধরা পড়েছেন, বাকি আর কি থাকল?''
আরও পড়ুন- SSC কাণ্ডে CBI জালে পার্থর ‘ভাগ্নি-জামাই’, বিপুল সম্পত্তির হদিশ, চাকরি ‘বেচে’ দুবাইয়েও হোটেল
উল্লেখ্য, একের পর এক দুর্নীতিতে আষ্ঠেপৃষ্ঠে নাম জড়াচ্ছে রাজ্যের শাসকদলের তাবড় নেতা-মন্ত্রীদের। ইতিমধ্যেই এসএসসি দুর্নীতিতে মূল অভিযুক্ত হয়ে গারদের পিছনে দিন কটাচ্ছেন তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব তথা রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা-শিল্প মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ইডি গ্রেফতার করেছে পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতাকেও। চাকরি 'বিক্রি'র তদন্তে নেমে পার্থ-অর্পিতার বিপুল সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে ইডি। নামে-বেনামে সম্পত্তির পাহাড় গড়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
এরই পাশাপাশি গরু পাচার মামলাতেও তদন্তে ঝড় তুলেছে সিবিআই। গ্রেফতার হয়েছেন বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। কেষ্টরও বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির হদিশ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। তদন্তে একাধিক তৃণমূলের ছোট-বড়-মাঝারি নেতার নামও উঠে এসেছে।