স্বপ্নদীপের মৃত্যু মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে যাদবপুরেরই প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরীকে। শনিবার ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে তাঁর। নাম উঠে আসছে আরও বেশ কয়েক জনের। দোষীদের রেয়াত হবে না বলে মৃত ছাত্রের বাবা রামপ্রসাদ কুণ্ডুকে বৃহস্পতিবার রাতেই আশ্বস্ত করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। এসবের পরও সন্তানহারা মায়ের মনে 'কু ডাকছে'! বেশ কয়েকবারই স্বপ্নদীপের মা স্বপ্নাদেবী আশঙ্কার কথা আওড়ালেন।
কেন এই ভয়? সদ্য সন্তানহারা স্বপ্না কুণ্ডু অতীতের একাধিক ঘটনার অভিজ্ঞতায় ভয় পাচ্ছেন। অতীতে এমন বহু নজির রয়েছে যেখানে অভিযুক্তরা জামিনে মুক্তি পেয়ে গিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে তথ্যপ্রমাণের অভাবে অভিযুক্তদের বেকসুরও খালাসও করা হয়েছে। স্বপ্নাদেবীর জিজ্ঞাস্য, টাকার বিনিময়ে সৌরভ বা অন্য অভিযুক্তরা ছাড়া পেয়ে যাবে না তো? বলছেলেন, 'আমাদের পয়সা নেই। ওরা ছাড়া পেয়ে যাবে না তো?'
আরও পড়ুন- ‘বাইরের লোক এনে ধর্ষণ করাত’, বিস্ফোরক যাদবপুরের মৃত পড়ুয়া স্বপ্নদীপের বাবা
ধৃত সৌরভকে আপাতত ১০ দিন পুলিশ হেফাজতে থাকতে হবে। জেরায় স্বপ্নদীপ মৃত্যু রহস্যের কিনারা করতে মরিয়া হবে পুলিশ। ছেলে নেই। মাঝে মদ্যেই ডুকরে কেঁদে উঠছেন স্বপ্নাদেবী। এসবের এক ফাঁকে বললেন , 'জীবনে কখনও কারও ক্ষতি চাইনি। কারও কোল খালি হোক, সেটা চাইনি। তবে এই প্রথমবার বলছি, যারা আমার ছেলেকে মেরে ফেলল তাদের সকলের ফাঁসি চাই।'
আরও পড়ুন- পুলিশ হেফাজতে স্বপ্নদীপের মৃত্যু মামলায় ধৃত সৌরভ, কী হল আদালতে?
তবে, মায়ের আক্ষেপ যাচ্ছে না। বলেছিলেন, 'ছেলেটা আমাকে বলেছিল যে, মা খুব ভয় করছে। আমাকে নিয়ে যাও।' ছেলের সেই অসহায় আর্তনাদ শুনে বুক কেঁপে উঠেছিল মায়ের। কিন্তু সেদিন আর যাদবপুরে যাওয়া হয়নি তাঁদের। চোখ মুছতে মুছতে বলেন, 'আমি সেই দিন রাতেই যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সৌরভ আমাকে ফোন করে বলল চিন্তা করবেন না। কাল সকালে আসুন। স্বপ্নদীপ উপরে বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করছে।' এরপরই আক্ষেপ ঝরে পড়ে মায়ের মুখে। স্বপ্নাদেবী বলেন, 'কেন যে ওই ছেলেটার (সৌরভ চৌধুরী) কথায় ভরসা করতে গেলাম আমি। এখন তো বুঝতে পারছি, আমার ছেলেকে যারা খুন করেছে, সৌরভই ছিল তাদের মাথা।'