আশ্বিনের শারদ প্রাতে বেজে উঠল আলোর বেণু! আজ মহালয়া। পিতৃপক্ষের অবসান, দেবীপক্ষের সূচনা। চারিদিকে পুজো-পুজো গন্ধ। সকাল থেকে গঙ্গার ঘাটে তর্পণ করতে উপচে পড়ছে মানুষের ঢল। কার্যত মহালয়া থেকেই শুরু হয়ে যায় শহর কলকাতার দুর্গাপূজা। ১৪২৯ বঙ্গাব্দ বা ইংরেজি ২০২২ সালের মহালয়া রবিবার। হিসেবমতো তার পর থেকেই শুরু হয়ে গেল দুর্গাপুজো।
পুজো মন্ডপগুলিতে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি তুঙ্গে। দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম সেরা পুজো শিব মন্দির দুর্গাপুজো কমিটি। এবারে সেখানে পুজোর থিম ‘বিশ্বাস’। সৃজনে শিল্পী সৌরজিৎ ব্যান্দ্যোপাধ্যায়। এবারের শিব মন্দির দুর্গাপুজো কমিটি তাদের ৮৬ তম বর্ষে পদার্পণ করছে। মানুষের বিশ্বাসকে সম্বল করেই দেবীর আরাধোনায় কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে শিব মন্দির দুর্গাপুজো কমিটি।
পুজো উদ্যোক্তাদের কথায়, পুজো আসবে-যাবে কিন্তু পুজো ঘিরে মানুষের মনে যে বিশ্বাস তা চিরকাল অটুট থাকবে। আর তাকে সম্বল করেই এবারের পুজোর থিম ‘বিশ্বাস’। ২ বছর অতিমারীর যন্ত্রণা ভোগ করার পর চলতি বছরের মাতৃবন্দনা হয়ে উঠুক মহামিলনের এক ক্ষেত্র এমনটাই চাইছেন পুজো কমিটির সদস্যরা। মন্ডপের প্রবেশের মুখেই থাকছে রথ। রথ যাত্রার মাধ্যমেই পুজোর যে শুভ সূচনা তাকে মাথায় রেখেই অভিনব এই আয়োজন। মন্ডপের ভিতরে থাকছে বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি।
আরও পড়ুন : নয়ের দশকের নস্টালজিয়ার সঙ্গে পুজোর গান! চমকের ছড়াছড়ি কলকাতার এই পুজোয়
শিল্পীর কথায়, “প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ দিন আগে মন্ডপ সজ্জার কাজ শুরু হয়েছে। আমাদের থিমের নাম ‘বিশ্বাস’। শিব মন্দির মানেই বিভিন্ন দেব-দেবীর বাসস্থান। ভগবানের প্রতি আমাদের যে বিশ্বাস সেটাই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এবারের থিমে। প্যাণ্ডলের ঢোকার মুখে থেকেই থাকছে চমক। সম্পুর্ণ ইকো-ফ্রেণ্ডলি জিনিস ব্যবহার করা হচ্ছে মন্ডপ সজ্জায়। মানদ করার জন্য থাকছে বিশেষ জায়গা। শিবমন্দিরে রোজই মানুষের ঢল নামে। এই বছর মনে করছি আমাদের পুজো অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে”।
মাটি-পাথর যাই মূর্তি হোক না কেন ,পুজো ঘিরে মানুষের বিশ্বাস টাই আসল। আর সেই বিশ্বাসকে পূর্ণ সম্মান দিয়েই মন্ডপ সজ্জায় থাকছে এক অন্যরকম পরিবেশ যেখানে মন্ডপের প্রতিটি কোনায় কোনায় থাকছে ঈশ্বর ভাবনার প্রতিচ্ছবি। তবে প্রতিমার ক্ষেত্রে সাবেকী আনার একটা ছোঁয়া থাকছে। এবারের প্রতিমা হবে একচালার। সঙ্গে থাকছে রকমারি আলোর খেলা যা আপনাকে মুগ্ধ করবেই। ছকভাঙা এক অন্য পুজোর গল্পই যেন ফুটে উঠতে চলেছে শিব মন্দির দুর্গাপুজো কমিটির এবারের পুজোয়।