বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে শোভন চট্টোপাধ্যায় ও রত্না চট্টোপধ্যায়ের। শনিবার আলিপুর কোর্টে ছিল সেই মামলার শুনানি। 'বান্ধবী' বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে কোর্টে এসেছিলেন শোভন। ছিলেন রত্নাও। শুনানির বিরতিতে কোর্ট চত্বরে মুখোমুখি হন শোভন, রত্না ও বৈশাখী। তারপর ই হুলস্থূল কাণ্ড বেঁধে যায়!
হঠাৎই বাক বিচণ্ডায় জড়ান শোভন ও রত্না। একে ওপরকে চোখা চোখা বাক্যবাণে নিশানা করতে থাকেন। উভয়ের তরফেই তাঁদের পাশে থাকা লোকজন তাঁদের থানতে বললেও কেউ কাউকে রেয়াতে রাজি ছিলেন না। তখন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কাছেই দাঁড়িয়েছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। কার্যত নীরব থেকেই গোটা ঘটনার সাক্ষী রইলেন তিনি। প্রায় ১০ মিনিট এরকম চলার পর সেখানে হাজির হয় পুলিশ। শোভন-রত্নার পুরো আকছা-আকছি-ই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
বচসায় একে অপরকে কী বললেন শোভন-রত্না?
প্রত্যাক্ষদর্শীদের দাবি, শুরুতে একে অন্যের কি সম্পত্তি দখল করে রয়েছেন তা নিয়ে কথা কাটাকাটি চলছি শোভন ও রত্না চট্টোপাধ্যায়ের। যা ক্রমশ বাড়তে থাকে। অল্পের মধ্যে সেই বিতণ্ডাই কলতলার ঝামেলায় পরিণত হয়। ব্যক্তিগ বিষয়ে একে অন্যকে নিশানা করেন তাঁরা।
- রত্না চট্টোপাধ্যায়- চুরি করে আবার বড় বড় কথা। এক থাপ্পড় মেরে সোজা করে দিতে হয়।
- শোভন চট্টোপাধ্যায়- থাপ্পড় মারিনি বলেই আজ এই অবস্থা।
- রত্না চট্টোপাধ্যায়- একদম চুপ, একদম চুপ।
- শোভন চট্টোপাধ্যায়- লজ্জা করে না, অন্য লোকের সঙ্গে ঘুরে বেড়াতেন। অভিজিৎ গাঙ্গুলির সঙ্গে। সব সত্যি সকলে জানতে পারবে। সত্যি কথা বলুন।
- রত্না চট্টোপাধ্যায়- সত্যি কথা বলতে হবে…
এসবের মধ্যেই শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। বলেন-
- রত্না চট্টোপাধ্যায়- এই মহিলাই নাটের গুরু। ১০-১২ খানা ঘর ভেঙে আমারও ঘর ভেঙেছে। ভাগ, চুপ।
- শোভন চট্টোপাধ্যায়- একটা নোংরা মেয়েছেলে। আমার সম্পর্কে কোনও কথা বলবেন না। ভাগ।
এই অবস্থা মিনিট দশেক বজায় ছিল। তারপর উভয়কেই সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আদালতের কাজকর্ম শেষ করে শোভন 'বান্ধবী' বৈশাখীকে সঙ্গে নিয়ে আদালত ছেড়ে বেরিয়ে যান। রত্নাও নিজের অনুগামীদের নিয়ে রওনা দেন।
বেশ কয়েক বছর ধরেই শোভন-রত্না বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে। একাধিকবার তাঁরা পরস্পরকে আক্রমণ করেছেন। উভয়ই অন্যের চারিত্রিক দৃঢ়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এও অভিযোগ উঠেছে যে, আদালতে বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়ের লোকজন গিয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায়দের হুমকি দিয়েছেন। তবে এভাবে প্রকাশ্যে তাঁদের ঝগড়া এর আগে দেখা যায়নি। শনিবার যা হল, এক কথায় তা নজিরবিহীন।