Advertisment

রক্ত আমাশা-ডেঙ্গু-গর্ভপাত, কিন্তু এসএসসি প্রার্থীদের অনশন চলছেই

একদিকে রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনের আবহ, অন্যদিকে কলকাতা প্রেস ক্লাবের সামনে স্কুল সার্ভিস কমিশনের অধীনে চাকরিপ্রার্থীদের অনশন আন্দোলন সোমবার পা দিল ১৯ দিনে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
ssc candidate, স্কুল সার্ভিস চাকরিপ্রার্থী, Hunger strike, অনশন, Dharmatal, ধর্মতলা, Kolkata, কলকাতা

প্রেসক্লাবের সামনে ১৯ দিন ধরে অনশনে এসএসসি প্রার্থীরা। ছবি- শশী ঘোষ

কেউ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। রক্ত আমাশায় ছটফট করছেন কেউ। সন্তান ধারণ করেও তা হারাতে হয়েছে। বাকি দুই অন্তঃসত্ত্বাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবু অনড় অনশনকারীরা। একদিকে রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনের আবহ, অন্যদিকে কলকাতা প্রেস ক্লাবের সামনে স্কুল সার্ভিস কমিশনের অধীনে চাকরিপ্রার্থীদের অনশন আন্দোলন সোমবার পা দিল ১৯ দিনে।

Advertisment

ssc candidate, স্কুল সার্ভিস চাকরিপ্রার্থী, Hunger strike, অনশন, Dharmatal, ধর্মতলা, Kolkata, কলকাতা ঝড়-বৃষ্টিতে এই ত্রিপল হাতে উঁচিয়ে ধরে থাকতে হয়। ছবি: শশী ঘোষ

"গাছ ভেঙে পড়ুক। গাড়ি চাপা দিয়ে দিক। মৃত্যুর কোনও পরোয়া নেই। অনশন তো চলবেই। হয় চাকরি, নয় মৃত্যু," গড়গড় করে একনাগাড়ে কথাগুলো বলে গেলেন শেখ ইনসান আলি। এই পণ নিয়েই এসএসসি চাকরি প্রার্থীদের অনশনে এখনও ২০০ জন। বাড়িঘর ছেড়ে ধর্মতলাই এখন এঁদের ঠিকানা। অসুস্থ ১০০ জনকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ssc candidate, স্কুল সার্ভিস চাকরিপ্রার্থী, Hunger strike, অনশন, Dharmatal, ধর্মতলা, Kolkata, কলকাতা অনশনকারীদের হাতিয়ার অদম্য জেদ। ছবি: শশী ঘোষ

এসএসসি যুব-ছাত্র অধিকার মঞ্চের ব্যানারে ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কলকাতার রাজপথে অনশনে বসেছেন যুবক-যুবতীরা। ইনসান আলি, তানিয়া শেঠরা জানিয়েছেন, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা সন্তুষ্ট নন। চাকরির বিষয়ে মন্ত্রী কোনও আশ্বাস দেন নি। রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে দাবি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। চাকরি নিয়ে কোনও আশ্বাস না পেলে তাঁরা কোনোমতেই অনশন তুলবেন না বলে সিদ্ধান্তে অনড় অনশনকারীরা।

আরও পড়ুন: কলকাতায় ফের অনশন, রাজপথে সাড়ে তিনশো স্কুল সার্ভিস চাকরিপ্রার্থী

ssc candidate, স্কুল সার্ভিস চাকরিপ্রার্থী, Hunger strike, অনশন, Dharmatal, ধর্মতলা, Kolkata, কলকাতা সোমবার অনশন পড়েছে ১৯ দিনে। ছবি: শশী ঘোষ

রবিবার সন্ধ্যাবেলা কালবৈশাখী ঝড়ের তান্ডব চলেছে মহানগরে। বাদ যায়নি ধর্মতলা চত্বর। জলে থৈ থৈ করছে অনশন মঞ্চ। একনাগাড়ে বজ্রপাতে আঁতকে উঠেছে শহর। কী করছিলেন তখন আন্দোলনকারীরা? ইনসান বলেন, "ঝড়ের উথালপাথাল দেখে মনে হচ্ছিল, গাছের ডাল ভেঙে আমাদের কারও মাথায় না পড়ে। তবে পড়লেই বা কী? মৃত্যু। চাকরি নেই বলে এমনিতেও বাড়িতে ঢুকতে পারছি না, মুখ দেখাতে পারছি না পরিবারের লোকের কাছে। রবিবার সন্ধ্যের পর থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জলের মধ্যে তাঁবু হাত দিয়ে তুলে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। রাতে ঠান্ডাও ছিল বেশ। তবে শপথ নিয়েছি আমরা হারব না। ছয় বছর ধরে প্রতারিত হয়ে চলেছি।"

ssc candidate, স্কুল সার্ভিস চাকরিপ্রার্থী, Hunger strike, অনশন, Dharmatal, ধর্মতলা, Kolkata, কলকাতা অনশনকারীরা দাবি মেটাতে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করছেন। ছবি: শশী ঘোষ

আরও পড়ুন: কলকাতার রাজপথে দশ দিন না খেয়ে ৩৫০ স্কুল সার্ভিস চাকরিপ্রার্থী

এই লড়াইতে হাতে হাতে মিলিয়ে চলছেন মহিলারাও। নদিয়ার তানিয়া শেঠ বলেন, "এখানে অনশনে বসে বীরভূমের রুমকি প্রামানিকের ডেঙ্গু হয়েছে। মুর্শিদাবাদের রুশভেল রক্ত আমাশায় আক্রান্ত। একজনের সন্তান নষ্ট হওয়ায় গর্ভপাত করতে হয়েছে। অনশন করে অসুস্থ হওয়ায় ৫৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। মোট অসুস্থ ১০০ জনকে বাড়ি চলে যেতে হয়েছে। এখনও আমরা ২০০ জন এখানে অনশন অবস্থানে রয়েছি।" তাঁর বক্তব্য, "এসব সত্ত্বেও আমাদের লড়াই থামবে না।"

ssc candidate, স্কুল সার্ভিস চাকরিপ্রার্থী, Hunger strike, অনশন, Dharmatal, ধর্মতলা, Kolkata, কলকাতা ডেঙ্গু, রক্ত আমাশায় আক্রান্ত অনশনকারীরা। ঝড়-জল মাথায় নিয়ে দাবি আদায়ে অবস্থান। ছবি: শশী ঘোষ

উত্তর দিনাজপুরের অর্পিতা দাস, বর্ধমানের সূর্য ঘোষরা প্রেস ক্লাবের সামনে ঝড়, জল, রোদে ঠায় অনশনে বসে রয়েছেন ১৯ দিন ধরে। যাঁরা দুধের শিশু নিয়ে অনশনে বসেছিলেন তাঁদেরও বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু অনশনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তানিয়া, ইনসানরা স্পষ্ট জানালেন, সরকার মানবিক নয়, চাকরি না মিললে এখানে মৃত্যুবরণ করব।

Mamata Banerjee kolkata news
Advertisment