শেষ পর্যন্ত শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত দলের দুই যুব নেতা কুন্তল ঘোষ ও শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করল তৃণমূল। এই দুই নেতাকেই বহিষ্কার করল শাসক দল। ইডির হাতে গ্রেফতারের ৫২ দিনের মাথায় কুন্তলের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করল তৃণমূল। গত শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছিল বলাগড়ের যুব তৃণমূল নেতা শান্তনুকে। গ্রেফতারের ৫ দিনের মাথায় দল থেকে বহিষ্কৃত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়।
তবে শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারি মামলায় ধৃত দলের বিধায়ক ও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের ক্ষেত্রে নীরব তৃণমূল। অন্যদিকে গরু পাচারকাণ্ডে ধৃত অনুব্রত মণ্ডলকেও বহাল রাখা হয়েছে দলের বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতির পদে।
এদিন তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেছেন, 'দুর্নীতির বিরুদ্ধে দল জিরো টলারেন্স অবস্থান নিয়ে চলছে। কোনওরকম দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে যেমন দল সাসপেন্ড করেছিল, তেমনই যুব নেতা কুন্তল ঘোষ এবং জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে বহিষ্কার করা হল। যে টাকা উদ্ধার হয়েছে তা কিন্তু তৃণমূলের কোনও পার্টি অফিস থেকে হয়নি। তা উদ্ধার হয়েছে অভিযুক্তদের বাড়ি থেকে। কারও বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধার হলে তার দায় দলের নয়। আমরা চাই শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে যাঁরা দোষী তাঁরা শাস্তি পাক।'
আরও পড়ুন- কেন তৃণমূল ত্যাগ? নন্দীগ্রামের শহিদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে কী দাবি শুভেন্দুর?
তবে এসব বলার পরই ইডি, সিবিআইয়ের নিরপপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা। বলেন, 'দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত নিয়ে তৃণমূলের আপত্তি নেই। কিন্তু যেভাবে রোজ নিয়ম করে সিবিআই-ইডি তল্লাশি চালিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বদনাম করার চেষ্টা চলছে তাতে আপত্তি রয়েছে।'
বিজেপিকে নিশানা করতে কর্নাটকের বিজেপির বিধায়কের প্রসঙ্গ টেনে শশী পাঁজার বক্তব্য, 'যাঁরা দুর্নীতি বিরুদ্ধে গলা ফাটাচ্ছে, তাঁরা নিজের রাজ্যে কী করছে? বিজেপি বিধায়কের বাড়ি থেকে কয়েক কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে। তাঁর ছেলেকে ঘুষ নিতে গিয়ে লোকায়ুক্ত হাতে নাতে ধরেছে। কিন্তু সেই বিজেপি বিধায়ককে আড়াল করতে কর্নাটকে বিজেপির সরকার নেমে পড়েছে। কই তাঁকে তো বিজেপি বহিষ্কার করেনি। হিম্নত বিশ্বশর্মার ক্ষেত্রেও একই কথা। তাঁর কতা জিজ্ঞাসা করলে উত্তর এড়িয়ে যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।'
উল্লেখ্য, কুন্তল ঘোষ যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। অন্যদিকে, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন সংগঠনের সহসভাপতি। উভয়ের বিরুদ্ধেই বিপুল টাকার বিনিময়ে বেআইনিভাবে চাকরি পাইয়ে দেওয়া অভিযোগ উঠেছে। অর্থ তছরুপের বিরুদ্ধে তাঁদের গ্রেফতার করেছে ইডি। তদন্ত এগোতেই এই দু'জনের প্রচুর পরিমাণে আর্থিক লেনদেনর প্রমাণ মিলেছে। উদ্ধার হয়েছে শান্তনুর স্থাবর বহু সম্পত্তি।