এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বড় নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পরেশচন্দ্র অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতাকে শিক্ষিকার চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হল। পাশাপাশি, ২০১৮ সালে নিয়োগের পর থেকে এতদিন বেতন বাবদ যে অর্থ তিনি পেয়েছেন তা ফেরতেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দু'টি কিস্তিতে এই অর্থ কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে ফেরৎ দিতে হবে অঙ্কিতা অধিকারীকে। প্রথম কিস্তির সময়সীমা আগামী ৭ জুন। শুক্রবার এই নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
২০১৮ সালে এসএসসি-র মাধ্যমে শিক্ষিকার চাকরি পান অঙ্কিতা অধিকারী। কোচবিহারের ইন্দিরা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্র-বিজ্ঞান পড়াতেন মন্ত্রী কন্যা। গত ৪১ মাস ধরে চাকরি করেছেন তিনি। এ দিন হাইকোর্টের রায় মোতাবেক বেতনের পুরোটাই ফেরত দিতে হবে তাঁকে।
অঙ্কিতার চাকরিতে নিয়োগ ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। চাকরি প্রার্থীদের তালিকায় তাঁর নাম না থাকা সত্ত্বেও সে চাকরির পেয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। মামলা গড়ায় আদালতে। মামলাকারী ববিতা বিশ্বাসের দাবি ছিল যে, স্টেস লেভেল সিলেকশনে তিনি ৭৭ নম্বর পেয়েও চাকরির জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হননি। কিন্তু, অঙ্কিতা অধিকারী ৬১ পেয়েই চাকরি পেয়েছেন। এছাড়া, মন্ত্রী কন্যা নাকি পার্সোনালিটি টেস্টেও বসেননি।
আরও পড়ুন- SSC দুর্নীতি: অনেক তথ্যই অজানা, পার্থকে ফের ডাকল CBI
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি এই মামলার তদন্তভার সিবিআইকে দেন। শুনানির সময় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন যে, এই নিয়োগের নেপথ্যে 'প্রভাবশালী অদৃশ্য হাত' রয়েছে।
গোটার তদন্তের জন্য কোর্ট মোতাবেক গত মঙ্গলবারই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে সিবিআই হাজিরার নির্দেশ দেন। তাঁর মেয়েকেও জেরার নির্দেশ ছিল। কিন্তু, সেদিন কলকাতায় আসতে পারেননি মন্ত্রী ও তাঁর কন্যা। পরদিন বুধবারও তাদের দেখা মেলেনি। এরপর বৃহস্পতিবার পরেশবাবু কোচবিহার থেকে কলকাতায় আসেন। কোর্টের নির্দেশে তাঁরে পুলিশ নিজাম প্যালেসে পৌঁছে দেয়। জেরা চলে তিন ঘন্টার বেশি। আজ ফের তাঁকে জেরা করা হচ্ছে। তবে, অঙ্কিতা অধিকারীর এখনও কোনও দেখা নেই। কোর্টে তাঁর আইনজীবী জানিয়েছেন যে, তিনি কোচবিহারেই রয়েছেন। মঙ্গলবার কোর্টের নির্দেশ মত সিবিআই হাজিরা না দেওয়ায় মন্ত্রী ও অঙ্কিার বিরুদ্ধে গতকালই এফআইআর করেছিল সিবিআই।