West Bengal News: পায়ে ছোবল মারা প্রকাণ্ড চন্দ্রবোড়া সাপকে নিয়ে হাসপাতালে হাজির যুবক। সেই সাপ দেখে শিউরে উঠলেন চিকিৎসক ও নার্সরা।
সাপ চিনতে পারলে চিকিৎসা করতে সুবিধা হবে চিকিৎসকের।এমন ধারণা নিয়ে পায়ে ছোবল মারা প্রকাণ্ড সাপকে পালাতে দেয়নি কৌশিক দাস। তিনি ওই সাপটিকে পাকড়াও করে নিয়েই বৃহস্পতিবার রাতে সটান পৌছে যান পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। প্রকাণ্ড সাপ সঙ্গে নিয়ে থাকা যুবককে হাসপাতালে দেখে প্রথমে শিউরে ওঠেন হাসপাতাল কর্তব্যরত চিকিৎসক
নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীর। পরে অবশ্য যুবকের মুখ থেকে সর্প দংশনের কথা জানতে পেরে দ্রুত তার চিকিৎসা শুরু করেন হাসপাতালে চিকিৎসক।
প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই যুবককে স্থানান্তর করা হয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তারই মধ্যে অবশ্য সাপটি মৃত্যুর মুখে ঢলেপড়ে। কৌশিক দাসের বাড়ি জামালপুরের বেত্রাগড় গ্রামে। তাঁর কথা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি তাঁদের বাড়িতেই ছিলেন। সেই সময় প্রকাণ্ড সাপটি যে বাড়ির দুয়ারে হাজির হয়েছিল তা কেউ টেরই পায় নি। রাত আনুমানিক ৮টা নাগাদ কৌশিক তাঁদের ঘরের সদর দরজা খুলে বাইরে বেরুনো মাত্রই তাঁর বাম পায়ের চেটোয় ছোবল বসিয়ে দেয় ওই সাপটি। তখনই কৌশিক সজোরে পা ছুঁড়লে সাপটি কিছুটা দূর ছিটকে গিয়ে পড়ে।সাপটির আকৃতি দেখে কৌশিক চিৎকার জুড়ে দিলে তাঁদের পরিবারের সবাই ঘর থেকে বাইরে বেড়িয়ে পড়েন। তারই মধ্যে কৌশিক পাকড়াও করে ফেলে ছোবল মারা সাপটিকে।
এরপর অর্ধমৃত অবস্থায় থাকা ওই সাপটিকে সঙ্গে নিয়েই পরিবারের লোকজনের সাথে কৌশিক ওই রাতেই পৌছে যায় জামালপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। সাপটিকে দেখিয়ে তিনি হাসপাতাল কর্তব্যরত চিকিৎসকে বলেন,’ডাক্তার বাবু এই প্রকাণ্ড সাপটাই আমার বাম পায়ের চেটোয় ছোবল মেরেছে। আপনারা সাপটিকে দেখতে পারলে আমার সঠিক চিকিৎসা করা সহজ হবে ,তাই সাপটিকে সঙ্গে করে নিয়েই চলে এসেছি।
জামালপুর গ্রামীণ হাসপাতালের বিএমওএইচ ডাঃ শঙ্খশুভ্র দাস এবিষয়ে শুক্রবার বলেন,’যে সাপ কামড়েছে সেই সাপটি ডাক্তার বাবুকে দেখালে ঠিক চিকিৎসা মিলবে ,এমন ধারণা অনেকেরই রয়েছে। তবে চিকিৎসা শাস্ত্র অনুযায়ী বিষয়টি তেমন নয় । তবে হ্যাঁ,দংশানো সাপটিকে দেখে সাপটি বিষধর ,না কি বিষধর নয় , সেই ব্যাপারে নিশ্চিৎ হওয়া যায়।সেই মতই বহস্পতিবার রাতে সাপের কামড়ে যখম যুবকের চিকিৎসা আমাদের হাসপাতালে হয়েছে।যুবককে অ্যান্টিভেনাম দেওয়া হয়েছে’। বিএমওএইচ এও বলেন,’কাউকে বিষধর সাপ কামড়ালে তার কিডনি ও নার্ভে বিষের কোন প্রভাব পড়ছে কিনা তা জনার জন্য সময় অন্তর শারীরিক বিশেষ পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন হয় । তার জন্যই সর্প দংশনে যুবক কৌশিক দাসকে রাতেই বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।’
তবে যুবক কৌশিক দাসকে যে সাপটি ছোবল মেরেছিল সেটি যে সত্যি সত্যি প্রচণ্ড বিষধর সাপ তা অন্তত জেলার বন আধিকারিকেয় কথা থেকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কৌশিক দাস যে সাপটিকে নিয়ে হাসপাতালে হাজির হয়েছিল সেই সাপটির ছবি শুক্রবার জেলার বন আধিকারিক (ডিএফও) সঞ্চিতা শর্মাকে পাঠানো হয় । তার পরেই তিনি জানান ,“ সাপটি চন্দ্রবোড়া (Russel Viper)সাপ । ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম বিষধর সাপ। জঙ্গল এইসব সাপের ঠিকানা হলেও ইদানিং বসতি এলাকায় এই সাপ ঢুকে পড়ছে বলে ডিএফও জানিয়েছেন’।