'পাহাড়ে কোনও বনধ করতে দেওয়া হবে না', শিলিগুড়ির সরকারি অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর। বনধের নামে কেউ আইন ভাঙলে কাউকে রেয়াত করা হবে না বলে এদিন স্পষ্ট জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভায় পাস হওয়া বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাবের প্রতিবাদে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি পাহাড়ে ১২ ঘণ্টার বনধের ডাক দিয়েছে পাহাড়ের জিটিএ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি।
আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু এবছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা। কিন্তু ওই দিনেই পাহাড়ে ১২ ঘণ্টার বনধের ডাক দিয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, হামরো পার্টি-সহ জিটিএ বিরোধীরা। বিমল গুরুংও বনধকে সমর্থন জানিয়েছেন। মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর দিনে এই বনধ হলে পরীক্ষার্থীদের চরম সমস্যার মুখে পড়ার আশঙ্কা প্রবল। মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক ভাষা শহিদ দিবসে শিলিগুড়িতে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অনুষ্ঠানেই মুখ্যমন্ত্রী কড়া ভাষায় জানিয়েছেন, কোনওভাবেই তিনি পাহাড়ে বনধ করতে দেবেন না। কেউ আইন ভাঙার চেষ্টা করলে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলেও এদিন সাফ হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শিলিগুড়ির সরকারি অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সাফ বার্তা, 'শুনেছি পাহাড়ে মাঝে-মাঝে কেউ চেগে ওঠেন। ৫ বছরে একবার বনধ করে দেখাতে চান তাঁর ক্ষমতা। পরিস্কার বলে যাচ্ছি কোনও বনধ হবে না। বনধ করলে সমর্থন করব না। আমি পরিস্কার বলছি, ২৩ তারিখ থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা। আইন ভাঙলে সরকার কাউকে রেয়াত করবে না। যে কেউ রাস্তায় বসে পড়ল আর পড়ুয়ারা পরীক্ষা দিতে পারল না, তার দায় কেন নেবে?'
আরও পড়ুন- পাহাড়ে সিঁদুরে মেঘ! মাধ্যমিকের শুরুর দিনই বনধের ডাক!
এরই পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন আরও বলেন, 'বাংলায় বনধের সংস্কৃতি উঠে গেছে। কেউ-কেউ বাংলায় এখনও বনধ করতে চায়। আন্দোলন করার অধিকার সবার আছে। কিন্তু কোনও বনধ চলবে না। ২৩ তারিখ থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা। আজ থেকে বাইরে কোথাও কর্মসূচি করা যাবে না।'
উল্লেখ্য, বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাবের প্রতিবাদে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার অর্থাৎ মাধ্যমিক শুরুর দিনেই দার্জিলিং ও কালিম্পং জুড়ে ১২ ঘন্টার বনধের ডাক দিয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ও হামরো পার্টি। বনধকে সমর্থন জানিয়েছেন বিমল গুরুংও। এরই পাশাপাশি রাজ্যের এই উদ্যোগের বিরুদ্ধে দার্জিলিঙের ভানু ভবনে চলছে অনশন আন্দোলনও। ২৪ ঘন্টার অনশনে বসেছেন জিটিএ বিরোধী গোষ্ঠীর তৃণমূল-ত্যাগী নেতা বিনয় তামাং এবং হামরো পার্টির প্রতিষ্ঠাতা অজয় এডওয়ার্ড-সহ জিটিএ-এর ৭ জন সদস্য। তবে বনধের বিরোধিতা করেছেন অনীত থাপা। মাধ্যমিকের শুরুর দিনেই এবার নতুন করে এই বনধের ডাক ঘিরে পাহাড় অশান্ত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।