হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টে পর পর ধাক্কা। কমিশনারকে রাজ্যপালের কড়া সমালোচনা। শেষমেষ পঞ্চায়েত ভোটের সুরক্ষায় আদালতের নির্দেশকে মেনে নিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ২২ কোম্পানির বদলে এবার ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে চিঠি পাঠাল কমিশন।
পঞ্চায়েতে মাত্র ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে গোটা বাংলায় ভোট করার পরিকল্পনা করেছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এ জন্য বুধবারই কমিশনকে ভর্ৎসনা করেছিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। পঞ্চায়েত মামলার নির্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, 'দেখে মনে হচ্ছে কমিশন এমন ভাবে আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়িত করছে, যাতে কাজের কাজ কিছু না হয়।' এরপরই ২০০৩ সালের প্রসঙ্গের অবতারণা করেন প্রধান বিচারপতি। নির্দেশ জানান, ২০০৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে পরিমাণকেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করা হয়েছিল (সেবার এসেছিল ৮২০ কোম্পানি), এবার তার থেকে বেশি বাহিনী নির্বাচনের কাজে মোতায়েন করতে হবে। নির্দেশ কার্যকর করতে হবে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল আদালত। যা মানতে বাধ্য হল কমিশন।
এছাড়া কমিশনার রাজীব সিনহাকেও ওই দিনই ভর্ৎসনা করেছিলেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। পর্যবেক্ষণে বলেছিলেন, 'আপনি (কমিশনার রাজীব সিনহা) চাপ নিতে না পারলে ছেড়ে দিন।'
এরপই বুধবার রাতে কড়া পদক্ষেপ করেন রাজ্যপাল। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার পদে রাজীব সিনহা যোগ দেওয়ার পর তাঁর জয়েনিং রিপোর্ট গ্রহণ করেননি সি ভি আনন্দ বোস। এদিও ফের কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অনৃতা সিনহা সমালোচনা করেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের। যদিও বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজের প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে কমিশনারের পাশে থাকারই বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানান, কমিশনার পদ খেরে রাজীবকে সরাতে হলে ইমপিচমেন্ট পদ্ধতির প্রয়োগ প্রয়োজন। পাল্টা রাজ্যপাল বলেন, 'কমিশনারের কাজে বাংলার মানুষ হতাশ।'
এরপরই দেখা যায়, নতি-স্বীকার করে হাইকোর্টের নির্দেশ মত পঞ্চাযেত ভোটের সুরক্ষায় বাড়তি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে আর্জি জানিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন- কমিশনারে খড়্গহস্ত রাজ্যপাল! ‘সবকিছু এত সহজ নয়’- কড়া বার্তা মমতার
আরও পড়ুন- ‘এত শান্তির মধ্যে মনোনয়ন জীবনে কোনওদিনও হয়নি’, প্রশাসনের কাজে ‘আপ্লুত’ মমতা
আরও পড়ুন- শুক্রবারও কমিশনারকে তুমুল সমালোচনা আদালতের, পঞ্চায়েত ভোট হওয়া নিয়েই প্রশ্ন বিচারপতির!