পঞ্চায়েত ভোটের দিন অশান্তির দায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপরেই চাপালেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা৷ তাঁর অভিযোগ, সময় মতো কেন্দ্রীয় বাহিনী না আসার কারণেই অশান্তি বেড়েছে৷ কমিশনারের আরও দাবি, যেখানে যেখানে বেশি গন্ডগোল হচ্ছে সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর নির্দেশ ছিল। রাজীব সিনহার কথায়, 'সন্ত্রাস যেখানে হয়েছে সেখানে তা সামাল দেওয়া জেলা প্রশাসনের দায়িত্ব৷ আমার দায়িত্ব পুরো বিষয়টিকে খতিয়ে দেখে তদন্ত করে তার সঠিক দিক নির্ণয় করা। কেন্দ্রীয় বাহিনী এই রাজ্যে আসা নিয়ে কোথাও কোনও কোন খামতি আমরা রাখেনি।' এরপরই কেন্দ্রীয় বাহিনীর দিকে আঙুল তুলে নির্বাচন কমিশনার বলেন, '২৫ জুন থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী এই রাজ্যে আসার জন্য অপেক্ষা করেছে। কেন এবং কী কারণে, সেটা এখন পুরো বলা সম্ভব নয়। ২৫ তারিখে আমরা কেন্দ্রীয় বাহিনীর আসা নিয়ে রিকুইজিশন জমা করেছিলাম। যদি কেন্দ্রীয় বাহিনী ২৭ তারিখের মধ্যে রাজ্যে এসে যেত তাহলে এত সন্ত্রাস বা এই ধরনের সমস্যা সম্মুখীন আমাদের হতে হত না। শেষ ৪৮৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে যে চিঠি রাজ্যে এসে পৌঁছেছে তাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফ থেকে ২৫ জুনের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।'
দুপুর তিনটে পর্যন্ত রাজ্যে নির্বাচনী সন্ত্রাসে অন্তত ১৪ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে৷ যদিও রাজীব সিনহার দাবি, 'ভোট চলাকালীন মাত্র তিন জনের মৃত্যু হয়েছে৷' অভিযোগ যে, কোথাউ কোথাউ ব্যালট বাক্স নিয়ে পালিয়ে য়াওয়ার ঘটনা ঘটেছে, আবার অনেক জায়গায় দেদার ছাপ্পা পড়েছে। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনারের দাবি, 'আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের হাতে, যেখানে যেখানে অভিযোগ আসছে আমরা সেখানে সমাধান করার চেষ্টা করছি। পুলিশ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এই মামলাগুলির তদন্ত করছে৷ আমরা কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে এই বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করেছি। কোথায় কোথায় গন্ডগোল হয়েছে তার সমাধান সূত্র বের করার জন্য।গতকাল রাত পর্যন্ত যে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে এসে পৌঁছেছে, তাদের মোতায়েন করা হয়ে গিয়েছে। আগামিকাল এই নির্বাচনের স্ক্রুটিনি হবে। এই স্ক্রুটিনি প্রক্রিয়ার মধ্যে রিটার্নিং অফিসাররা থাকবেন। এই ভোট প্রক্রিয়ার সঙ্গে যে সমস্ত কার্যকলাপ যুক্ত আছে সবটাই আলোচনায় তুলে ধরা হবে।'
কমিশনারের কথা অনুসারে, উত্তর ২৪ পরগণা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণা, কোচবিহার, মুর্শিদাবাদ এই কয়েকটি জেলাতে গন্ডগোল হয়েছে।