আগামী ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ থেকে বলবত হওয়া মোটর ভেহিকলস (সংশোধনী) আইন লাগু না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। নতুন আইনের আওতায় জরিমানার পরিমাণে অত্যধিক বৃদ্ধিই এই সিদ্ধান্তের মূল কারণ বলে জানানো হয়েছে সরকারের তরফে। নতুন আইনে গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট প্রদানের ক্ষেত্রে থার্ড পার্টি বা তৃতীয় পক্ষের অবসানেরও বিরোধিতা করেছে রাজ্য সরকার।
সরকারি আধিকারিকদের মতে, নতুন আইনের সঙ্গে মতাদর্শগত বিরোধ নেই সরকারের, তবে তাতে কিছু সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে। এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, "আমরা ১ সেপ্টেম্বর থেকে এই আইন লাগু করছি না। নতুন আইন সম্পর্কে আমাদের মতামত আমরা কেন্দ্রকে জানাব। আপাতত এই আইন লাগু হচ্ছে না।"
আরও পড়ুন: আরসালান কাণ্ডের ছায়ায় শহরে শুরু পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ
ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালালে জরিমানা ২,০০০ টাকা থেকে পাঁচগুণ বাড়িয়ে ১০,০০০ টাকা করা হয়েছে। স্পিড লিমিট অতিক্রম করলে হতে পারে এক থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা, যেখানে বর্তমান জরিমানা ৫০০ টাকা। "হেলমেট না পরার ফাইন ১০০ থেকে বেড়ে হয়েছে ১,০০০, সঙ্গে তিন মাসের জন্য লাইসেন্স বাতিল। এগুলো কয়েকটা উদাহরণ মাত্র। জরিমানা এতটা বাড়িয়ে দেওয়ার বিরোধিতা করছি আমরা," বলেন ওই আধিকারিক।
রাজ্য সরকারের তরফে এও বলা হয়েছে যে গাড়ি অথবা তার কলকব্জা প্রস্তুতকারক সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ তাতে পক্ষপাত থাকবেই। সংশ্লিষ্ট গাড়িকে সেটির প্রস্তুতকারক সবসময়ই ইতিবাচক সার্টিফিকেটই দেবে, অতএব ফিটনেস সার্টিফিকেট দেওয়া উচিত তৃতীয় কোনও পক্ষের।
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ প্রকল্পের নাম করে জোর করে নিয়ম লঙ্ঘনকারী গাড়ি চালকদের কাছ থেকে টাকা তুলছে পুলিশের একাংশ, ক’দিন আগে এই অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং, এবং রাজ্য পুলিশকে হুঁশিয়ার করে দেন, যাতে পুলিশ জরিমানার নামে সাধারণ মানুষকে হেনস্থা না করে। মঙ্গলবার সেই একই বার্তার পুনরাবৃত্তি করে কলকাতার নগরপাল অনুজ শর্মা তাঁর বাহিনীর অফিসারদের জানান, ট্র্যাফিক আইন অমান্য রোধ করা যেমন পুলিশের লক্ষ্য, তেমনই লক্ষ্য পুলিশের মানবিক দিক মানুষের কাছে তুলে ধরার।
গত কয়েকমাস যাবত ট্র্যাফিক আইন বলবত করতে একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে কলকাতা পুলিশ, যেগুলির মধ্যে উল্লেখ্য হেলমেট-বিহীন বাইক চালকদের বিরুদ্ধে আরও কড়া পদক্ষেপ, এবং মদ্যপ অবস্থায় বা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো প্রতিরোধ করতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় 'নাকা চেকিং'।