বাঙালি কী ব্যবসা করবে? বাঙালির দ্বারা কখনও ব্যবসা হয় না। বাঙালি তো কুঁড়ে। শুধু ভাত আর মাছ খায় আর ঘুমিয়ে কাটায়। নিন্দুকের উচিৎ জবা দিয়ে চাকরি ছেড়ে নতুন স্টার্ট আপ। MBA Chaiwala এখন অতীত, কলকাতার রাজপথ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে IAS chaiwala। নামেতেই রয়েছে চমকের ছড়াছড়ি। তবে শুধু যে নামে নয় দক্ষতাতেও মাত্র মাস খানেকের ভিতর জনপ্রিয়তায় শীর্ষে পৌঁছেছে IAS chaiwala। সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল করতেই চোখে পড়বে IAS chaiwala-কে নিয়ে বানানো একঝাঁক রিল-ভিডিও।
ছোট থেকেই ছিল ব্যবসা করার অদম্য ইচ্ছা। পারিবারিক কারণেই ৬ বছর চাকরি করতে হয় একাধিক বেসরকারি সংস্থায়। কিন্তু কিছুতেই যেন মানসিক শান্তি মিলছিল না। অগত্যা একদিন চাকরি ছেড়ে চায়ের স্টল কলকাতার রাজপথে। এদিনে এই খবর শুনে বাড়িতে স্ত্রীর মুখে যে ভারী… অসুস্থ বাবার চোখেও এক্রাশ অনিশ্চিয়তা। তবে ইচ্ছা আর মনের জেদ মানুষকে যে ঠিক কোন পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে তার জলজ্যান্ত উদাহরণ IAS chaiwala। মূলধন কম থাকায় স্বল্প পুঁজি নিয়েও যে ব্যবসা শুরু করা যায় তারই বার্তা দিচ্ছেন ইশান ও সুচন্দন।
অনেকদিন ধরেই ব্যবসার ফন্দি আঁটেন। তবে কম পুজিতে কীভাবে শুরু করবেন সেটাই ভেবে পাচ্ছিলেন না। হঠাৎই গাঙে জোয়ারের জলের মত মাথায় আসে MBA chaiwala-এর উদাহরণ। ব্যাস ওটাই ভাবনা-চিন্তা অবসান ঘটায়। শুরু হয় যায়ের দোকান। তবে এটা আর পাঁচটা চায়ের দোকানের চেয়ে একেবারেই ভিন্ন। নামকরণ ইকো ফ্রেন্ডলি কাপে অথবা বিস্কুট কাপে চা বিক্রি, সবেতেই ছড়িয়ে রাজকীয় চিন্তাভাবনা।
IAS Chaiwala-এর প্রতিষ্ঠাতা ইশান বলেন, ‘শুরুর পথটা কিন্তু এতটা সহজ ছিল না অনেক দোকান এবং বাজারে টিকে থাকার জন্য গুণগতমান নিয়ে কোন কম্প্রোমাইজ করিনি। প্রথম চা দিয়ে শুরু করলেও আস্তে আস্তে আরও বেশ কিছু কিছু আইটেম যোগ করেছি মেনুতে”! চলমান সাইকেলের এই চায়ের দোকানে পাওয়া যায় চায়ের সঙ্গে লস্যি, কোল্ড কফি, হট কফি এবং সবটাই খুবই রিজেনেবল প্রাইসে। স্কটিশ চার্চ কলেজের ১ নম্বর গেটের সামনে স্বপ্নের উড়ানের যাত্রার শুরু। দুপুর ১ টার দিকে রাত দশটা পর্যন্ত চলে মারকাটারি ব্যবসা।
দোকানে কলেজ স্টুডেন্টদের ভিড় চোখে পড়ার মতন। কম দাম আর তার সঙ্গে জিভে জল আনা হরেক আইটেম। কোনটা ছেড়ে কোনটা চেখে দেখবেন এই ভাবতেই কিছুটা সময় চলে যায়। ক্যাফেটেরিয়া চত্বরে তিনগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে যে সকল আইটেম সেগুলিই এখানে বিকোচ্ছে জলের দামে। কেনই বা ভিড় জমাবে না বলুন তো?
তবে চায়ের দোকানের সেরা আকর্ষণ লুকিয়ে রয়েছে তার নামেই। কেন এমন নামকরণ? ইশান নিজেই জানালেন, ইচ্ছে ছিল IAS হওয়ার,বেশ কিছুদিন ট্রেনিং ও করি কিন্তু IAS হতে পারিনি। সেই সাধ বুকে চেপে ধরেই শুরু আমার স্বপ্নের উড়ানের। ভবিষ্যতের লক্ষ্য সম্পর্কে ইশান বলেন, কলকাতা জুড়ে IAS চা’ওয়ালার রমারমা, এমটাই আগামী পাঁচ বছরের প্ল্যানিং। তার সোজা সাপটা জবাব, “আচ্ছা দাদা, MBA chaiwala পারলে আমি কেন পারব না বলুন তো”?