শহরতলীর পাশাপাশি কলকাতার একাধিক প্রাইমারি স্কুলে ছাত্রের সংখ্যা কমেছে হুহু করে। খাতায় কলমে ছাত্র-ছাত্রী থাকলেও বাস্তব চিত্রটা একবারেই আলাদা।
শিক্ষাব্যবস্থার অব্যবস্থার বিরুদ্ধে মাঝে মধ্যেই আওয়াজ তোলেন এক শ্রেণির শিক্ষক-শিক্ষিকারা। শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে বাংলা মাধ্যমের স্কুলের বে-আব্রু দশা বারে বারেই উঠে এসেছে সংবাদ শিরোনামে। ছাত্র সংখ্যা বাড়াতে কলকাতার পাশাপাশি জেলাতেও বেশ কিছু স্কুলে স্মার্ট ক্লাসরুম গড়ে তোলা হয়েছে। তাতেও কী সমস্যা মিটেছে?
খাস কলকাতায় একাধিক প্রাইমারি স্কুলে বেশ কয়েক বছর ধরে কমেছে পড়ুয়ার সংখ্যা। এমন অবস্থা যে অনেক স্কুলে পড়ুয়ার তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা বেশি। তারই জলজ্যান্ত উদাহরণ বেলেঘাটার পূর্ব কলকাতা বিদ্যায়তন।
এলাকার প্রাচীনতম স্কুল হিসাবে এক সময় বেশ নাম-ডাক ছিল এই স্কুলের। এক সময় ছাত্রদের ভিড়ে গমগম করত ক্লাসরুম। সেই সব দিন এখন অতীত। এই স্কুলে প্রাথমিক ও হাই স্কুল দুটোই চলে একই সঙ্গে তবে জামাই আদর করেও ছাত্ররা স্কুল মুখো হতে চায় না। এমনই দাবি স্কুলের শিক্ষকদের একাংশের।
১৯৫৭ সালে স্থাপিত এই স্কুলটি এক সময় এলাকার গর্ব ছিল। এখন পড়ুয়ার অভাবে ধুঁকছে এই স্কুলটি। স্কুলের পাশেই প্রায় ৯ দশক ধরে বাস স্থানীয় এক বাসিন্দা পেশায় চা বিক্রেতা জানিয়েছেন, 'প্রাথমিকে ছাত্র সংখ্যা হাতে গুনে এক থেকে দু'জন। হাই স্কুলের কিছু ছাত্র আসে তাও রোজ নয়। এদিকে খাতায় কলমে নাম রয়েছে পড়ুয়াদের'।
প্রাথমিকে যে পড়ুয়ারা আসেনা সেকথা মেনেও নিয়েছেন স্কুলেরই এক শিক্ষক। তিনি বলেন, 'প্রাথমিকে ৮-১০ জন পড়ুয়ার নাম থাকলেও কেউই স্কুলে আসতে চায় না। মেরেকেটে একজন অথবা দুজন মাঝে মধ্যে স্কুলে আসে'।
যদিও এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, 'ছাত্রদের স্কুলমুখী করতে মাঝে মধ্যেই শিক্ষক শিক্ষিকারা বেরিয়ে পড়েন এলাকায়। তার জন্য চেষ্টা চালানো হলেও আখেরে লাভ হয়নি কিছুই'। এভাবে পড়ুয়ার অভাবে ধুঁকছে এক সময়ের নামী এই স্কুল তা মেনে নিতে পারছেন না এলাকাবাসীরা।