school attendance affected by road conditions: পথ আছে। কিন্তু বেহাল সেই পথে পা ফেলাই দায়। হেঁটেও যাতায়াত করা যায় না ওই পথ দিয়ে। তাই স্কুলে যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছে পড়ুয়ারা। এই ছবি পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের একটি গ্রামে। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছে। প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ে শেষমেশ টনক নড়েছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের।
ভাতার ব্লকের মাধপুর গ্রাম। ভাতার মালডাঙা সড়কের বড়বেলুন ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সামনে বাঁদিক দিয়ে চলে যাচ্ছে সালুন যাওয়ার রাস্তা। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার এই রাস্তাটি যাচ্ছে মাধপুর গ্রামের ভিতর দিয়ে। মাধপুর গ্রামের ময়রাপাড়া থেকে সংযোগকারী একটি রাস্তা চলে যাচ্ছে ভাতারের কোশিগ্রাম মেলাতলা পর্যন্ত। সেখানে বলগোনা মালডাঙ্গা রোডের সঙ্গে মিশছে।
গ্রামবাসীদের কথা অনুযায়ী, মাধপুর ময়রাতলা থেকে কোশিগ্রাম মেলাতলা পর্যন্ত রাস্তা প্রায় তিন কিলোমিটার। তার মধ্যে দেড় কিলোমিটার পড়ছে মন্তেশ্বর ব্লক এলাকার মধ্যে। প্রায় ২০ বছর আগে এই রাস্তাটি মাটি ফেলে কাজ করা হয়। কিন্তু তারপর থেকে দেখা যাচ্ছে বছর পাঁচেক আগে দেড় কিলোমিটার অংশ মন্তেশ্বর ব্লক থেকে পিচ করা হয়েছে। কিন্তু ভাতার এলাকার বাকি দেড় কিলোমিটার অংশ এখনও কাঁচা রয়ে গিয়েছে।"
আরও পড়ুন- Hasina-Yunus: 'ইউনূসের জঙ্গি সরকারকে সরিয়ে ফিরব আমরাই', প্রত্যয়ী শেখ হাসিনা
দু'দশকের বেশি রাস্তার কাজ হয়নি। বর্তমানে মাটির রাস্তার উপর হাঁটু ভর্তি জলকাদা। যানবাহন চলাচল তো দূর অস্ত, হেঁটে যাতায়াত করা যায় না। ভাতারের মাধপুর গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ ঘুরি সেখ বলেন,বারবার পঞ্চায়েতের কাছে আবেদন নিবেদন করেও ফল মেলেনি। আর এই ঝড়-বৃষ্টির মরশুমে আপাতত স্কুলে যাতায়াত বন্ধ ছাত্রছাত্রীদের।
আরও পড়ুন- Kolkata News Live Update:দেশে করোনা আক্রান্ত ৫ হাজার পার, রথযাত্রায় পুরীতে কড়া বিধিনিষেধ চালুর ভাবনা
গ্রামবাসী জরিনা বিবি,সেখ মনিরুলরা জানান, শীতের সময় শুকনো থাকলে তবুও যাতায়াত করা যায়। কিন্তু বৃষ্টি পড়লেই যাতায়াত করা কঠিন হয়ে পড়ে। মাটির রাস্তার উপর তৈরি হয়েছে বড় বড় খাল। তাতে জল জমে থাকছে। প্রায় কোমর সমান খাল। শুধুমাত্র এই মূল রাস্তাটি নয়, মাধবপুর গ্রামের মুসলিমপাড়া, দাসপাড়া, হাজরাপাড়া,ময়রাপাড়া প্রভৃতি পাড়ার মধ্যের রাস্তাগুলিও এখনও কাঁচা। এই সব রাস্তা গুলিরও একই অবস্থা।
এমনকী মাধপুরের মুসলিম পাড়ার কাছে কবরস্থানে যাওয়ার রাস্তাটিরও ভয়ঙ্কর অবস্থা। মাধপুর গ্রামে মুসলিমপাড়া ও দাসপাড়ার কাছে রয়েছে একটি শিশুশিক্ষা কেন্দ্র, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। এছাড়া ছাত্রছাত্রীরা কোশিগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় এবং নাসিগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে যায়। বর্ষার মরশুমে ছেলেমেয়েদের যাতায়াতের সমস্যার কারণে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিতে হয়েছে। টিউশনও বন্ধ। এমনকি গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়ারাও বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না। প্রায় রোজই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে।
আরও পড়ুন- Kunal Ghosh:বড়সড় অস্বস্তিতে কুণাল ঘোষ, অবমাননায় কড়া পক্ষেপ হাইকোর্টের
এই বিষয় বড়বেলুন ২ নম্বর পঞ্চায়েত প্রধান সুশান্ত সাহা বলেন, "মাধপুর ময়রাতলা থেকে কোশিগ্রাম রাস্তা জেলা পরিষদের। আর পাড়াগুলির মধ্যে যে রাস্তাগুলি রয়েছে সেগুলির হালহকিকত নিয়ে ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যদের পঞ্চায়েতের কাছে জানানো উচিত। সেই অনুযায়ী স্কিম পাঠানো হবে। আমি মাধপুরের পরিস্থিতি গিয়ে দেখে আসব।"
আরও পড়ুন- Puri: পুরীর সমুদ্রের ওপারে কী আছে জানেন? উত্তরটা সম্ভবত আপনার কল্পনারও বাইরে!
স্থানীয় গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বারবার পঞ্চায়েতের কাছে আবেদন নিবেদন করেও রাস্তার কাজ হয়নি। বাসিন্দারা জানান, তাঁরা চাঁদা তুলে পাড়ার রাস্তায় মাটি ভরাট করেছেন। বারবার পঞ্চায়েতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও বিহিত হয়নি। এদিকে এই ঘটনাটি নিয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "খোঁজ নিয়ে দেখছি। তবে জেলায় কোনও রাস্তার এরকম অবস্থা হওয়ার কথা নয়।"