শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লক্ষাধিক টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গৌড় কলেজের অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন পড়ুয়ারা। তাঁদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট কলেজের জার্নালিজম অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশন ডিপার্টমেন্টের একাধিক আর্থিক দুর্নীতি করা হয়েছে। তারই প্রতিবাদ জানিয়ে এদিন এই বিক্ষোভ দেখানো হয়। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত অধ্যক্ষকে ঘেরাও বিক্ষোভের ঘটনায় তুমুল চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে সংশ্লিষ্ট কলেজে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সংবাদ পরিবেশন যাদের আগামী দিনের পেশা,তারাই এদিন সংবাদের শিরোনামে চলে এসেছে।
সংশ্লিষ্ট কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন বিভিন্ন অভিযোগ নিয়েই গৌড় কলেজের জার্নালিজম অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশন বিভাগের অসংখ্য পড়ুয়ারা অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক বিভাগীয় অধ্যাপিকার বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে।
এদিন বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের অভিযোগ, গুগল পে'র স্ক্রিনশট এডিট করে দেড়শ টাকা হয়ে গেছে ১৫ হাজার টাকা। সেই বিল পাস হয়েছে। কখনও আবার কলকাতার চোরাবাজার থেকে কমদামী ক্যামেরা কিনে ভুয়ো জিএসটি বিল বানিয়ে উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে মোটা অংকের টাকা। গাড়ির পার্কিং করার ফি বা এক্সটার্নাল পরীক্ষকদের খাওয়া-দাওয়া ফি বলেও ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে জোর করে আদায় করা হয়েছে টাকা।
বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের আরও অভিযোগ, মালদা জেলার একটি নামী প্রতিষ্ঠানের নকল সার্টিফিকেট দিয়ে টাকা নেওয়া হয়েছে। তেমনি আবার অধ্যক্ষের নাম করে নানা অছিলায় টাকা চাওয়া হচ্ছে । পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীরা সংশ্লিষ্ট কলেজের ওই অধ্যাপিকার কাছে টিউশন না পড়লে পরীক্ষায় ফেল করানো হয় বা কম নাম্বার দেওয়া হয়। বছর তিনেক ধরে এই ঘটনা ঘটে চলেছে পুরাতন মালদার গৌড় কলেজে জার্নালিজম এন্ড মাস কমিউনিকেশন ডিপার্টমেন্টে।
বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের অভিযোগের আঙুল এক বিভাগীয় অধ্যাপিকার দিকে। ওয়াকিবহাল মহলের একটা বড়ো অংশের অনুমান,অধ্যক্ষ এবং একশ্রেণির অসৎ অধ্যাপকের মদতে পরপর এমন দুর্নীতির ঘটনায় অসহায় ছাত্রছাত্রীরা।অভিযোগের আঙুল উঠছে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কোঅর্ডিনেটর তথা অধ্যাপকের বিরুদ্ধেও। তারা সব জেনেও কোন ব্যবস্থা নেন নি। এমনকি অভিযোগ করলেও দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে তাদের।বিভাগের পড়াশোনা শিকেয় উঠেছে। গত ১৩ জুলাই থেকে পরীক্ষা আরম্ভ হলেও শেষ হয়নি সিলেবাস। এ নিয়েই এদিন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গৌড় কলেজ চত্বর।
যদিও এই ঘটনা প্রসঙ্গে গৌড় কলেজের অধ্যক্ষ কাসিম কুমার সরকার জানিয়েছেন, ওই বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা যে অভিযোগ করেছে সেটি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে এবিষয়ে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোথাও কোনো ত্রুটি থাকলে অবশ্যই সেটি আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। অধ্যক্ষের এই আশ্বাসের পর এদিন রাত নটা নাগাদ ঘেরাও বিক্ষোভ তুলে নেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের পড়ুয়ারা।