ছাত্র-মৃত্যুতে ফুঁসছে বিশ্বভারতী। গত রাতে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বাড়ির গেট ভেঙে ঢোকানো হয় শববাহী গাড়ি। মৃত ছাত্র অসীম দাসের দেহ শববাহী গাড়িতে রেখে চলে তুমুল বিক্ষোভ। উপাচার্য বেরিয়ে এসে একবার কথা বলুন মৃতের পরিবারের সঙ্গে, এই দাবিতেই উত্তাল হয় তাঁর বাসভবন চত্বর। তবে প্রবল বিক্ষোভ সত্ত্বেও বাড়ি থেকে বেরিয়ে মৃতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেননি উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। বরং নিরাপত্তা চেয়ে তিনি রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছেন। এদিকে, উপাচার্যের এই মনোভাবের বিরুদ্ধে সরব বিভিন্ন মহল। বিশ্বভারতীর প্রাক্তন অধ্যাপক তথা প্রাক্তন সাংসদ অনুপম হাজরা সোশ্যাল মিডিয়ায় এব্যাপারে সরব হয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার বিশ্বভারতীর পাঠভবনের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র অসীম দাসের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। অসীমের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে ছাত্রাবাসের একটি ঘর থেকে। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা অসীমকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। সেখনে সেই সময়ে উপচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি মৃতের পরিবারের।
মৃত ছাত্রের পরিবারের অভিযোগ, অসীমকে খুন করা হয়েছে। তাঁর শরীরের একাধিক জায়গায় ক্ষতচিহ্ন মিলেছে বলেও দাবি পরিবারের সদস্যদের। পুলিশ না ডেকেই মৃতদেহ নামিয়ে হাসপাতালে পাঠানোর পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে মনে করছে তাঁর পরিবার।
এদিকে, বিশ্বভারতীর যে ছাত্রাবাসে অসীম থাকতেন সেখানে হোস্টেল সুপার নেই বলে অভিযোগ পরিবারের। শুরু থেকেই অসীম মৃত্যুর বিষয়টি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ধামাচাপা দিতে চাইছে বলে অভিযোগ মৃতের পরিবারের। ইতিমধ্যেই বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে খুন, প্রমাণ লোপাট এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃত ছাত্রের বাবা। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে শান্তিনিকেতন থানা।
আরও পড়ুন- অসহ্য গরম থেকে রেহাই আজই, এই জেলাগুলিতে বৃষ্টির পূর্বাভাস
এদিকে, শুক্রবার দিনভর উপাচার্যের বাড়ির সামনে ধর্নায় বসেছিলেন অসীমের পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের দাবি ছিল উপাচার্য একবার তাঁদের সঙ্গে কথা বলুন। পরে সেই ধর্নায় সামিল হন বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের একাংশ। রাতে মৃত অসীম দাসের দেহ শবববাহী গাড়িতে এনে রাখা হয় উপাচার্যের বাড়ির সামনে।
ছাত্ররা গেট ভেঙে শববাহী সেই গাড়ি ঢোকান উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বাড়ির ভিতরে। কিছুক্ষণ সেখানেই ছিল মৃতদেহ। এতকিছুর পরেও একবারের জন্যও বাড়ির বাইরে বেরোননি উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। উল্টে নিরাপত্তা চেয়ে তিনি রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের দ্বারস্থ হয়েছেন।
এদিকে, বিশ্বভারতীর উপাচার্যের এই ভূমিকায় প্রবল অসন্তোষ ছড়িয়েছে বিভিন্ন মহলে। বিশ্বভারতীর প্রাক্তন অধ্যাপক অনুপম হাজরা সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন। উপাচার্য একবারের জন্যও মৃত ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে কথা না বলায় তাঁর সমালোচনায় সরব অনুপম।