এর আগে বারে বারে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বর্তমান রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে 'ডিসেম্বর হুঁশিয়ারি' দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বলেছেন যে ডিসেম্বরে বড় কিছু ঘটতে চলেছে। বৃহস্পতিবার আরও একধাপ এগিয়ে তিনি ডিসেম্বরের গুরুত্বপূর্ণ তারিখগুলোও জানিয়ে দিলেন। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা জানান, ডিসেম্বরের ১২, ১৪ ও ২১ তারিখ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইতিমধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সব এফআইআরের ওপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু, তাতে তিনি সন্তুষ্ট নন বলেই জানিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। এক প্রশ্নের জবাবে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে শুভেন্দু বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে সমস্ত মামলাগুলো যেন সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তিনি যে বৃহত্তর চক্রান্তের শিকার, আদালতের তত্ত্বাবধানে হওয়া সিবিআই তদন্তেই তা স্পষ্ট হয়ে যাবে বলেই দাবি করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। বৃহস্পতিবার আদালত জানিয়ে দিয়েছে, নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত শুভেন্দুর মামলাগুলোর ওপর বহাল থাকবে স্থগিতাদেশ।
শুভেন্দু অধিকারী এর আগে তাঁর বিরুদ্ধে করা পুলিশের এফআইআর নিয়ে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেছেন। কেন রাজ্য পুলিশের ওপর তাঁর ভরসা নেই, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বিরোধী দলনেতা বৃহস্পতিবার বলেন, 'আমি তো আদালতে প্রমাণ করেছি যে কী ধরনের মামলাগুলো করেছে। আমি তো তৃণমূল কংগ্রেসকে চ্যালেঞ্জ করছি, যে এই মামলাগুলো সিবিআইকে ট্রান্সফার করে দিক। তাহলে বুঝতে পারবে সিআইডির রাজশেখরণ, পূর্ব মেদিনীপুরের অমরনাথ ও বিনীত গোয়েলরা কী কী করেছে। কার নির্দেশে করেছে। তাঁদের ফোনটা নিয়ে নিলেই কল রেকর্ড ও হোয়াটসঅ্যাপের কল রেকর্ড নিয়ে নিলেই বোঝা যাবে, কার কার নির্দেশে কী কী হয়েছে। লোকে সব জানতে পারবে।'
শুভেন্দুর দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সব মামলাই ভিত্তিহীন। তাঁর অভিযোগ, কখনও পুলিশ নিজে মামলা করছে অথবা কাউকে জোর করে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করতে বাধ্য করিয়েছে। নন্দীগ্রামের বিধায়ক চাইছেন, সিবিআই নিজে নয়, আদালতের তত্বাবধানে যেন মামলাগুলোর তদন্ত হয়। এই প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, 'আমি চাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কেস করেছে, সবটাই সিবিআইকে ট্রান্সফার করে দেওয়া হোক।'
আরও পড়ুন- ডিসেম্বর ডেডলাইনে ‘কাঁপুনি’ ধরাচ্ছেন, সম্ভবত আগামী সপ্তাহেই দিল্লিতে, কী ‘ছক’ শুভেন্দুর?
কথা বলতে গিয়ে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অর্থ রাজ্যে নয়ছয় নিয়েও অভিযোগ করেন বিরোধী দলনেতা। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা রাজ্যকে না-দেওয়া নিয়ে বর্তমানে কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দলের মধ্যে চাপান-উতোর চলছেই। তারই মধ্যে শুভেন্দুর দাবি, 'এই প্রকল্পের টাকা বাংলাদেশের লোক নিয়ে চলে যাচ্ছে। মুর্শিদাবাদে এই ঘটনা ঘটেছে। এরাজ্যের সাড়ে ৯ লক্ষ জব কার্ড বাতিল হয়েছে। এই ভুয়ো জব কার্ডের টাকা ভারত সরকার দেবে কেন?' বেশ কয়েকজন জেলাশাসক এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলেও বিরোধী দলনেতা অভিযোগ করেছেন।