সোদপুরের রাজেন্দ্র পল্লির বাসিন্দা সুব্রত মালাকার সোমবার থেকেই সংবাদ শিরোনামে। চার বছর আগে সোদপুরের রাজেন্দ্রপল্লিতে বসবাস শুরু করেন সুব্রত। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, এসএসসি নিয়োগে তিনি মিডলম্যানের কাজ করেছেন। তাঁকে, দীর্ঘ ৬ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রথমে ইডি তাকে আটক করে। যদিও পরিবারের দাবি সুব্রতকে কিছু প্রশ্ন করেই ছেড়ে দিয়েছে ইডি। অভিযোগ, কোটি কোটি টাকা লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত এই সুব্রত। পাড়ার লোকের সঙ্গে তাঁর তেমন একটা মেলামেশা ছিল না বলেই প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা সোমবারের ইডির অভিযানের পর জেনে গিয়েছেন সুব্রত মালাকারের নাম। এক নামেই এখন তাঁর বাড়িও পরিচিতি পেয়ে গিয়েছে। রাজেন্দ্রপল্লিতে সুব্রত মালাকারের একতলা বাড়ির নাম 'স্নেহদিয়া'। সোমবার ইডি হানার পর যেন রাতারাতি 'বিখ্যাত' হয়ে গিয়েছে সেই বাড়িও। মঙ্গলবার এই সুব্রত মালাকারের ব্যাপারেই বিস্তারিতভাবে খোঁজ নিতে পৌঁছে গিয়েছেল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা। তাঁর বাড়িতে বহু ডাকাডাকির পর এক মহিলা এসে এদিন কথা বলেন। সাংবাদিক পরিচয় জেনে বললেন, 'কিছু বলার নেই। যা বলার কাল তো বলেই দিয়েছিল। আমাদের নতুন কিছু বলার নেই।'
আরও পড়ুন- বাংলাদেশ সর্ববৃহৎ বাণিজ্য সহযোগী: মোদী; তিস্তা-সহ বাকি ইস্যুগুলির দ্রুত সুরাহা হোক: হাসিনা
ইডি সুব্রত মালাকারকে নিয়ে গেল কেন? উত্তরে ওই মহিলা বললেন, ''ওঁর কোনও দোষ নেই। ওঁর কম্পিউটারটা পাচ্ছিল না। বেলঘরিয়ার অফিসে ছিল। সেখান থেকে কম্পিউটার নেওয়ার পর ওঁকে ছেড়ে দিয়েছে।'' ইডির বিরুদ্ধে অবশ্য বিশেষ বড় কোনও অভিযোগ নেই এই মহিলার। বরং ইডির ব্যবহারে তাঁরা উদ্বেগে নেই বলেই বোঝাতে চাইলেন। ওই মহিলা আরও বলেন, ''কোনও হয়রানি করেনি ওঁরা। ওঁকে (সুব্রত মালাকার) তো বাড়িতে দিয়ে গিয়েছে। এখন ও শ্বশুরের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছে। আমাদের আর কিছু বলার নেই। দয়া করে ছবি তুলবেন না। অযথা, আমাদের বিভিন্ন লোকের কাছে নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে হচ্ছে। এতেই বিরক্ত লাগছে।'
সুব্রত মালাকারের বাড়ির কিছুটা দূরেই থাকেন স্থানীয় তৃণমূল যুব নেতা পার্থ দাস। তিনি বলেন, 'কারও কাছে যদি কোটি কোটি টাকা থাকে, তাঁর জীবনযাপনের মানটাই বদলে যায়। সে ওই গলির মধ্যে একতলা বাড়িতে এভাবে কোনওরকমে থাকে? এখন তদন্ত চলছে, বলাটা ঠিক হবে না। যদি আদৌ এই ধরনের দুর্নীতি হয়, বা তার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক থেকে থাকে, তো ওই লোকটা (সুব্রত মালাকার) যার অধীনে কাজ করত, সেই মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত। কর্মচারীরা কি সব জানে?' অন্যদিকে, জেলা বিজেপি নেতা দীপক কুণ্ডুরও সুব্রত মালাকার ইস্যুতে বক্তব্য, 'কোনও দুর্নীতি হলে, যাকে তাঁকে নয়। মূল পান্ডাদেরকেই গ্রেফতার করা উচিত।'