বিজেপির এক জেলা কমিটির সভাপতির বাড়িতে দুর্গাপুজোর আমন্ত্রণ। স্বাভাবিতভাবেই হাজির হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এসেছিলেন কল্যাণ চৌবেও। চমক হল আমন্ত্রিতদের তালিকায় উত্তর কলকাতার তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নাকি সেখানে গিয়েওছিলেন। মঙ্গলবার এমনই অভিযোগ করেছিলেন তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়। তবে, সুদীপ-শুভেন্দু সাক্ষাৎ হয়েছিল কিনা তা খোলসা করেননি তিনি। কিন্তু, তাপস রায়ের কথা ঘিরে জোর চর্চা চলছে তৃণমূলের অন্দরে। এসবের মধ্যেই বৃহস্পতিবার তাঁর সঙ্গে তৃণণূল সাংসদের সাক্ষাৎ নিয়ে মুখ খুলেছেন রাজ্যের বিরোদী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
কী বলেছিলেন তাপস রায়?
আগে কল্যাণ চৌবে ছিলেন বিজেপির উত্তর কলকাতা জেলা কমিটির সভাপতি। সদস্য তিনি এআইএফএফের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে দলে তাঁর জায়গায় দায়িত্বে আনা হয় তমোঘ্ন ঘোষকে। মঙ্গলবার নিজের বাড়িতে বসে তাপস রায়ের দাবি করেছিলেন যে, ‘এ বার দুর্গাপুজোর অষ্টমীর দিন তমোঘ্ন ঘোষের বাড়িতে আমন্ত্রিত ছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। নিমন্ত্রিতদের তালিকায় ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী ও কল্যাণ চৌবেও। প্রত্যেকেই পুজোর এক দিন সেখানে গিয়েছিলেন।’
সুদীপকে ঠেস দিয়ে তাপসের দাবি, ‘তমোঘ্নকে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের সভাপতি করতে চেয়ে ওঁকে দলনেত্রীর কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন সুদীপ। দরবারও করেছিলেন। এ কথা তো দলের সবারই জানা আছে।’ তারপরই তাৎপর্যপূর্ণভাবে বলেছিলেন, ‘পার্টিতে এই মুহূর্তে ডেডিকেটেড লয়ালিস্ট আর ডিভাইডেড লয়ালিস্ট – দুই ভাগ হয়েছে। ডিভাইডেড লয়ালিস্টরা অন্য দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এদিকে দলনেত্রীকে নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থে দলেরই অনেকে ব্যবহার করছেন। অন্যদিকে সঙ্গে বিরোধী দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। যাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে সংগঠনের প্রতি অনুগত দলের উচিত তাঁদের প্রতি আস্থা রাখা।’
আরও পড়ুন - দাদা তথাগতর বাড়িতে যান না সৌগত, সুদীপকে কটাক্ষ বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদের, আক্রমণ মদনেরও
তাপস রায়কে এ দিন সমর্থন করেছেন দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়, কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। আর বুধবার তো বরাহনগরের বিধায়কের বাড়িতে গিয়েই এ নিয়ে আলোচনা চালিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। তাঁর সমর্থনও তাপসের দিকেই।
তবে, বিতর্ক বাড়লেও তৃণমূল বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ইস্যুতে টু শব্দটি করেননি। উল্টে বৃহস্পতিবার আলিপুরের উত্তীর্ণ সভামঞ্চে তৃণমূলের বিজয় সম্মিলনীতে তৃণমূল নেত্রীর পাশেই বসেছিলেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সুদীপ-জায়া বিধায়ক নয়নার সঙ্গেও হেসেই কথা বলতে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
কী বললেন শুভেন্দু অধিকারী?
সত্যি কী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর সাক্ষাৎ হয়েছিল? উত্তরে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেন, 'আমি নবমীর দিন তমোঘ্ন ঘোষের বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেদিন আমার সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের কারোর দেখা হয়নি। কেউ ছিলেন না। আমাদের স্থানীয় বিজেপি মণ্ডল সভাপতি, ওই জেলার যুব মোর্চার সভাপতি এবং স্থানীয় যারা খবর পেয়েছেন তাঁরা এসে সৌজন্য বিনিময় করেছেন। আমি যখন সেখানে পৌঁছই তখন ওখানে রাজ্য বিজেপির সহসভাপতি রথীন ঘোষ ছিল। আমার সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় হয়েছে। আমি ঠাকুরকে আরতি করেছি, একটু প্রসাদ নিয়েছি। তারপর আমি লোকনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে চলে গিয়েছি।'