বালুরঘাটের দণ্ডি বিতর্কে জমা পড়া পুলিশি রিপোর্ট ঘিরে হইচই। ঘটনার অনুসন্ধানে দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপারের কাছে যে রিপোর্ট জমা পড়েছে তা ঘিরেই নয়া বিতর্ক। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, দণ্ডি কাটার বিষয়টিতে অপরাধের কোনও চিহ্নই পায়নি পুলিশ। যাঁরা দণ্ডি কেটেছিলেন বিষয়টি একান্তভাবে তাঁদের ব্যক্তিগত বলেই তাঁরা নাকি পুলিশকে জানিয়েছেন। সেই রিপোর্টটিই জাতীয় মহিলা কমিশনকে পাঠিয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার। পুলিশি এই রিপোর্ট 'হাস্যকর' বলে দাবি বিজেপির।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি একটি ভিডিও তুমুল শোরগোল ফেলে দেয় বঙ্গ রাজনীতিতে। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে তোলা ওই ভিডিও-টিতে তিন আদিবাসী মহিলাকে ‘দণ্ডি’ দিতে দেখা গিয়েছিল। বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে ‘দণ্ডি’ কাটেন তিন মহিলা। ‘দণ্ডি’ কেটে তাঁরা জানান, বিজেপির সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগ ছিল না। দলবদলের এমন বেনজির-কায়দা ঘিরে হইচই পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রাজ্যের শাসকদলের তীব্র সমালোচনায় সোচ্চার হয় বিরোধীরা। বিজেপির অভিযোগ ছিল, স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের চাপেই ওই আদিবাসী তিন মহিলা ‘দণ্ডি’ কাটতে কার্যত বাধ্য হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন- ‘চাপ’ ছিল তৃণমূল নেতাদেরই, বালুরঘাট-দণ্ডি বিতর্কে স্বীকারোক্তি এক মহিলার স্বামীর
এমনকী ওই ঘটনার 'ছানবিনে' নেমে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসও জেনেছিল, যে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের একাংশের চাপেই ওই তিন মহিলা ‘দণ্ডি’ কাটতে বাধ্য হয়েছিলেন। যদিও জেলা পুলিশ এই ঘটনায় কারও বিরুদ্ধেই কোনও অভিযোগ পায়নি। তিন মহিলার দণ্ডি কাটার পিছনে কারও অপরাধমূলক কোনও প্রবণতার হদিশ পায়নি পুলিশ। এমনই একটি রিপোর্ট জেলা পুলিশের তরফে পাঠানো হয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশনকেও। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশের সেই রিপরোর্টেরই তুমুল সমালোচনায় সরব বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
আরও পড়ুন- দুর্নীতির অভিযোগ উঠতেই ‘তুই-তোকারি’ তৃণমূলের অপরূপার, পাল্টা ‘ঢিল’ বিজেপি নেতারও
তিনি বলেন, 'পুলিশের এই রিপোর্ট হাস্যকর। কারণ, পুলিশের রিপোর্ট অনুযায়ী কোনও অপরাধই হয়নি। কোনও অপরাধ না হয়ে থাকলে পুলিশ দু'জনকে গ্রেফতার করেছে কেন? তৃণমূলের যে নেত্রীকে দেখা যাচ্ছে, তিনি ক্যামেরার সামনে বলছেন প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য তারা দণ্ডি কাটতে কাঁঠালপাড়ায় তৃণমূল অফিস পর্যন্ত পৌছোচ্ছেন বিজেপি পার্টি অফিস থেকে। সেই নেত্রীর অপরাধ পুলিশ কেন খুঁজে পেল না? পুলিশ নির্লজ্জের মতো তৃণমূলের সেই নেত্রীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। আমরা নিরপেক্ষ তদন্ত চাই।'