বালাসোরে ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতদের অধিকাংশই বাংলার। এরাজ্য থেকে ভিনরাজ্যে যাওয়ার পথে ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বহু মানুষের। এত বড় মর্মান্তিক কাণ্ডের পর দুর্গতদের পাশে ছুটে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে শাসকদল তৃণমূল। কিন্তু নিহতদের পরিবারকে সাহায্য করার জেরে এবার বিরোধীদের আক্রমণের মুখে তৃণমূল। আর্থিক সাহায্যতেও রাজনীতির অভিযোগ বিজেপির।
করমণ্ডলে এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনার বলি হয়েছেন বাসন্তীর উত্তর মোকামবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ছড়ানেখালি গ্রামের তিন ভাই হারান গায়েন (৫১),নিশিকান্ত গায়েন (৪০), দিবাকর গায়েন (৩৩)। ওই তিন ভাইয়ের সঙ্গেই ছিলেন গ্রামেরই সঞ্জয় হালদার (২৪) ও বিকাশ হালদার (২৬ ) নামের আরও দুই পরিযায়ী। তাঁরাও প্রাণ হারিয়েছেন এ ঘটনায়।
মৃত পাঁচজনের পরিবারের হাতে মঙ্গলবার দু’লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য তুলে দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের তরফ থেকে। সূত্রের খবর, যে টাকা তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে সিংহভাগই ২ হাজার টাকার নোট। যা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
স্বজনহারাদের হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দিতে এলাকায় গিয়েছিলেন মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং বিধায়ক শওকত মোল্লা, বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল, সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল-সহ আরও অনেকে। উল্লেখ্য, বাজার থেকে ২০০০ টাকার নোট প্রত্যাহারের ঘোষণা করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। যাঁদের কাছে এই নোট রয়েছে তা সেপ্টেম্বরের মাসের মধ্যে ব্যাঙ্কে জমা করতে বলা হয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন, এর পরেও কেন ২ হাজার টাকার নোট দেওয়া হল স্বজনহারাদের। তা নিয়ে খোঁচা দিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। বিজেপির রাজ্য সভাপতি টুইটে লিখেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তৃণমূল দলের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকার আর্থিক সাহায্য করছেন রাজ্যের একজন মন্ত্রী। সাধুবাদ জানাই। কিন্তু এ প্রসঙ্গে এই প্রশ্নটাও রাখছি, একসঙ্গে ২০০০ টাকার নোটে ২ লক্ষ টাকার বান্ডিলের উৎস কী?”
আরও একটি টুইটে তিনি লিখেছেন, “বর্তমানে ২০০০ টাকার নোটের বাজারে জোগান কম। তা ব্যাঙ্কের মাধ্যমে পরিবর্তন করার পদ্ধতি চলছে। এই পরিস্থিতিতে অসহায় পরিবারগুলিকে ২০০ টাকার নোট প্রদান করে তাদের সমস্যা কি বাড়ানো হল না? দ্বিতীয়ত, এটা কালো টাকা সাদা করার তৃণমূলী পদ্ধতি নয় কি?”
আরও পড়ুন করমণ্ডলের ক্ষত এখনও দগদগে, তার মধ্যেই বড়সড় দুর্ঘটনা এড়াল রাজধানী এক্সপ্রেস
তবে সূত্রের খবর, টাকা দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে নয়, তৃণমূলের তরফে। তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন সুকান্তকে। বলেছেন, "কালো টাকা নিয়ে সুকান্তবাবুর কোনও ধারণা নেই। এই ব্যাপারে ভাল বলতে পারবে ওঁদের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি কালো টাকার বিষয়ে ভাল জানেন। সুকান্তবাবু তাঁর কাছে একটা ক্র্যাশ কোর্স করুন। গরমে মাথা খারাপ হলে লোকে এসব কথা বলে। মানুষ মেরে এখন রাজনীতি করা হচ্ছে।"