মোলডাঙাবাসীর বাধা অতিক্রম করে নিহত শিশুর বাড়ি পৌঁছলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। কথা বললেন পরিবারের সঙ্গে। একই সঙ্গে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায়। সকলেই শিশুর পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দেন।
বাধা অতিক্রম করে সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে বিজেপির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল মৃত শিসুর বাড়িতে যায়। পরে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “পুলিশ অপদার্থতার পরিচয় দিয়েছে। এখন গ্রামবাসী এবং নিহত শিশুর পরিবারকে প্রলোভন দেখিয়ে আমাদের আটকাচ্ছে। কিন্তু দেখবেন সময় এলে সকলের ভুল ভাঙবে। পুলিশ বুধবার আমাদের রাজ্য সাধারণ সম্পাদিকা লকেট চট্টোপাধ্যায়কে ঢুকতে দেয়নি। পুলিশ শিশু উদ্ধারে যতটা না তৎপর ছিল আমাদের আটকাতে তার থেকে বেশি তৎপর। এ রাজ্যে আগে নারী সুরক্ষা তলানিতে থেকেছিল। এখন দেখছি শিশুদেরও কোন নিরাপত্তা নেই। পশ্চিমবঙ্গ এখন জঙ্গলের রাজত্বে পরিণত হয়েছে”।
১৮ সেপ্টেম্বর শান্তিনিকেতন থানার মোলডাঙা গ্রামের টালিপাড়ায় নিখোঁজ হয় পাঁচ বছরের শিবম ঠাকুর। ৫২ ঘণ্টা পর ২০ সেপ্টেম্বর তার পচাগলা মৃতদেহ উদ্ধার হয় প্রতিবেশী রুবি বিবির বাড়ির এজবেস্টারের ছাউনি থেকে। পুলিশ রুবি বিবি এবং তার মা সুফিয়া বিবিকে গ্রেফতার করে আদালতের নির্দেশে আট দিনের হেফাজতে নেয়। এদিকে একটি ভাইরাল ভিডিওতে খুনের কথা স্বীকার করে নেয় রুবি বিবি। সে জানায়, গ্রামের সঞ্জিত শিশুকে তার হাতে তুলে দেয়। সেই দীর্ঘক্ষণ আগলে ছিল তাকে। বিকেলের দিকে শ্বাসরোধ করে মেরে দেওয়া হয়। সঞ্জিতকে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
এদিকে বৃহস্পতিবার শিশুর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায়। এরপর সংবাদ মাধ্যমের কাছে তিনি লেন, “শিশু নির্যাতন কমাতে সকলকে সচেতন হতে হবে। এর জন্য সর্বস্তরের সহযোগিতা প্রয়োজন। এখানে যে ঘটনা ঘটেছে তা খুব দুঃখজনক। আমি নিজেও একজন মা-ঠাকুমা। ফলে আমিও শিশু মৃত্যুর বেদনা অনুভব করছি। আমরা সকলের সঙ্গে কথা বললাম। পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি। পুলিশ শিশু উদ্ধারে তৎপর ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য জীবিত অবস্থায় শিশুকে উদ্ধার করা যায়নি। আমি ফিরে গিয়ে রিপোর্ট জমা দেব।”
নিহত শিশুর মা মমতা ঠাকুর বলেন, “ঘটনার দিন গ্রামের মন্দিরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলাম। সে সময় ছেলের আবদারে পাঁচ টাকা দিই। ওই টাকা নিয়ে বাড়ির পাশেই দোকানে বিস্কুট কিনতে যায়। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ বাড়ি ফিরছে না দেখে দোকানে যাই। দোকানদার জানিয়ে দেন বিস্কুট নিয়ে চলে গিয়েছে। এরপর ছেলের বন্ধুদের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করি। কিন্তু কোথাও পায়নি। দুপুরে পুলিশকে জানাই। শেষে মৃতদেহ উদ্ধার হল।” তার দাবি, "রুবি বিবির যেন ফাঁসি হয়। আরও যারা জড়িত তারা যেন গ্রামে ঢুকতে না পারে। এখন অনেকে গ্রেফতার হয়নি। রুবির বৌদি মঞ্জিলা বিবি এখনও গ্রেফতার হয়নি। সবাইকে গ্রেফতার করতে হবে।”