গেরুয়া নজরে ২০২৪। এখন থেকেই যার প্রস্তুতি শুরু করেছে বিজেপি। দলীয় সগঠনে বুধবার বড় পরিবর্তন করলেন সর্বভারতীয় বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা। সুনীল বনশালকে দলের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসাবে নিযুক্ত করা হল। এছাড়া তাঁকেই পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষকও করা হয়েছে। পাশাপাশি বনশলের দায়িত্বে তেলেঙ্গানা এবং ওড়িশার মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলির সংগঠনের ভার।
বনশালের নিয়োগ তাৎপর্যপূর্ণ কারণ, বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে আগামী লোকসভাতে আসন সংখ্যা বাড়াতে মরিয়া। আগামিতে তেলেঙ্গানায় বিধানসভা ভোট রয়েছে। কেসিআরকে সরিয়ে সেরাজ্যে সরকার গড়তে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে গেরুয়া শিবির। অন্যদিকে ওড়িশায় বর্তমানে বিরোধী দলের ভূমিকায় বিজেপি। ফলে এই তিন রাজ্যে আগামী লোকসভায় শক্তি বাড়িয়ে দিল্লির কুর্সি দখল করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ পদ্ম বাহিনী।
এর আগে সুনীল বনশল উত্তর প্রদেশের বিজেপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ২০১৭ সালের বিধানসভা ভোট, ১৯-য়ের লোকসভায় হিন্দি বলয়ের এই রাজ্যে বিপুল ভোটে জয় পেয়েছে বিজেপি। যার নেপথ্যে বনশলের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য ছিল বলে দিনদয়াল উপাধ্যায় মার্গের নেতৃত্ব মনে করেন। এবার তাই তাঁর কাধেই বিজেপি ক্ষমতায় নেই এমন তিন রাজ্যে দলীয় সংগঠন সাজাবার দায়িত্ব দেওয়া হল। যা কার্যত চ্যালেঞ্জ বনশলের।
বিজেপি প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, ধর্মপাল, যিনি ঝাড়খণ্ডের দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন, তিনি বনশলে কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নেবেন। এছাড়া করমবীর, যিনি উত্তরপ্রদেশে দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন, তিনি ঝাড়খণ্ডে দলের দায়িত্ব নেবেন।
ধরমপাল এবং বনশল- উভয়েই অতীতে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের সদস্য ছিলেন। ধরমপাল উত্তরপ্রদেশে এবিভিপি-র বিভিন্ন পদে কাজও করেছেন।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বা সংগঠন মহামন্ত্রীর ভূমিকাকে বিজেপির যেকোনো শাখায় গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। মূলত আরএসএস-এর হয়ে কাজ করা সংগঠকদেরই এই পদে নিয়োগ করা হয়ে থাকে। বিজেপি যেসব রাজ্যে ক্ষমতাসীন সেসব রাজ্যের দলীয় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন), সরকার এবং আরএসএস-য়ের মধ্যেকার মূল যোগাযোগকারীর ভূমিকা পালন করে থাকেন।
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে সহায়তা করার জন্য বনশলকে বিজেপির উত্তরপ্রদেশ সগঠনে আনা হয়েছিল। এর আগে, তিনি আরএসএস-এর একজন প্রচারক ছিলেন। আরএসএসের ছাত্র শাখা এবিভিপি-তেও কাজ করেছেন। সুনীল বনশল অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ বলে বিবেচিত। সুচারু সংগঠক হিসাবে বনশল নিজেকে প্রমাণও করেছেন। বিজেপি ২০১৪ সালে উত্তরপ্রদেশের ৮০ লোকসভা আসনের মধ্যে ৭১টি জিতেছিল এবং ২০১৭ সালে বিধানসভা নির্বাচনেও ৩০০-র বেশি আসন পেয়ে বিধানসভায় জয়লাভ করে।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদি পার্টি, বহুজন সমাজবাদি দল ও আরএলডি-র মহাজোটকে দুর্মুশ করে জিতেছিল। পদ্ম শিবির ২০২২ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করে রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রেখেছে। বিজেপি ওই রাজ্যে রাজ্যসভা এবং বিধান পরিষদ নির্বাচনেও জিতেছে।