আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হতে পারে এই আশঙ্কা করে বাংলায় 'দ্য কেরালা স্টোরি' প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞ জারি করেছিল মমতা সরকার। নবান্নের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন ছবির নির্মাতা সানসাইন পিকচার্স প্রাইভেট লিমিটেড। সেই মামলাতেই বড় ধাক্কা খেল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিষেধাজ্ঞায় স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাৎ এরপর আর এই রাজ্যে পরিচালক সুদীপ্ত সেন নির্মিত 'দ্য কেরালা স্টোরি' প্রদর্শনে কোনও বাধা রইল না।
এদিন এজলাসে ছত্রে ছত্রে সমালোচিত হয়েছে রাজ্য সরকার। 'দ্য কেরালা স্টোরি'র নির্মাতাদের হয়ে শীর্ষ আদালতে সওয়াল করেন সিনিয়র আইনজীবী হরিশ সালভে। শুরুতেই তাঁর প্রশ্ন ছিল, এই ছবি সিবিএফসি-র ছাড়পত্র পেয়েছে। দেখানোর ক্ষেত্রে এই ছবির বৈধ। ছবির প্রদর্শন বন্ধ করলে এই ছাত্রপত্রকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়। সালভের বক্তব্য ছিল,মহারাষ্ট্রে একটি ঘটনা ঘটেছে। তবে ওই রাজ্যে সিনেমাটি নিষিদ্ধ করা হয়নি। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার মহারাষ্ট্রের ঘটনা নিয়ে চিন্তিতহয়ে পড়েছিল তাই বাংলায় ওই সিনেমার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এছাড়াও সালভে জানান, কেরলের নির্যাতিতা এবং তাঁদের পরিবাররে লোকেদের সঙ্গে কথা বলে এই ছবি তৈরি করা হয়েছে। এই ঘটনার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে না। সিনেমাটির টিজারে ৩২ হাজার মহিলার কথা লেখা হয়েছিল কিন্তু সেটাও পরে সরিয়ে দেওয়া হয়।
পাল্টা রাজ্যের তরফে আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি জানান, প্রথমে বলা হয়েছিল ৩২ হাজার সাক্ষীর বয়ানের ভিত্তিতে এই ছবি তৈরি। কিন্তু বাস্তবে তিন জনের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। ফলেবাড়িতে বসে ওটিটি বা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে 'দ্য কেরালা স্টোরি' দেখলে আপত্তি নেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারেরর। কিন্তু প্রকাশ্যে দেখা যাবে না।
বাংলায় 'দ্য কেরালা স্টোরি'তে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে উভয় তরফের সওয়াল শুনে বাংলার সরকারকে 'অসহিষ্ণু' বলেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। তাঁর কথায়, 'অসহিষ্ণুতা সহ্য করা যায় না। প্রকাশ্যে আবেগ প্রদর্শনের ভিত্তিতে বাক-স্বাধীনতার মৌলিক অধিকার নির্ধারণ করা যায় না। আবেগের প্রকাশ্য প্রদর্শন রাষ্ট্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত করতে হবে।'
এরপরই 'দ্য কেরালা স্টোরি'র উপর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জারি করা নিষেধাজ্ঞায় স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।