শীতকালে স্কুল-কলেজগুলিতে একাধিক কর্মসূচি নেওয়া হয়। নাচ-গান-আবৃত্তি সহযোগে স্কুলে স্কুলে যেমন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আসর বসে, তেমনই বেশ কিছু স্কুলে হয় সেমিনার কিংবা অন্য কোনও বিষয় নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠানও। স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষিকারাও সেই সব কর্মসূচিতে অংশ নেন। তবে পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur) পাঁশকুড়ার (Panskura) সূরা মহামায়া বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীরাই নিদারুণ তৎপরতায় যে উদ্যোগ নিয়েছিল, তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ স্কুলের দিদিমণিরা। এমনকী বাড়ির মেয়েদের স্কুলে গিয়ে এমন কীর্তি দেখে অবাক হলেও মনে-মনে বেশ খুশি বাবা-মায়েরাও।
কী এমন করল ছাত্রীরা?
সুস্বাদু নানা পদের খাবার বানিয়েছিল স্কুলের ছাত্রীরা। স্কুলেই দু'দিনের "ফুড ফেস্টিভ্যাল" (Food Festival) -এর আয়োজন করা হয়েছিল। সেই খাদ্য উৎসবে একের পর এক লোভনীয় খাবারের পসরা নিয়ে হাজির হয়েছিল স্কুলেরই পড়ুয়ারা। মোমো, কাটলেট থেকে শুরু করে চিকেন-ভেজ পকোড়া, চাউমিন-পাস্তা, আলু পরোটা, ঘুগনি, মধুলীলা চিকেন পকোড়া, রোল, পিঠেপুলি, কী নেই স্টলে!
পড়ুয়াদের তৈরি খাবার নিয়ে সূরা মহামায়া বালিকা বিদ্যালয়য়ে এই ফুড ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করা হয়েছিল। ছাত্রীদের হাতে তৈরি নানা পদের খাবার খেতে শিক্ষক-শিক্ষিকা সহ অন্যরা ভিড় জমিয়েছিলেন। পড়ুয়াদের তৈরি খাবারের স্বাদ চেখে দেখে বেজায় খুশি শিক্ষক- শিক্ষিকারা।
উল্লেখ্য, ছাত্রছাত্রীদের আনন্দ দিতেই জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে স্কুলে-স্কুলে 'স্টুডেন্ট উইক' পালন করা হয়। তারই অঙ্গ হিসেবে রাজ্যের অন্যান্য জেলার পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুরেও এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাঁশকুড়ার সূরা মহামায়া বালিকা বিদ্যালয়ের মোট ছাত্রী ৬০০। তাদের নিয়ে সোম ও মঙ্গলবার দু'দিনের 'ফুড ফেস্টিভ্যাল'-এর আয়োজন করা হয়েছিল।
নিজেদের হাতে তৈরি খাবার নিয়ে স্কুলের ফুড ফেস্টিভ্যালে ছাত্রীরা।
সোমবার নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা অংশ নিয়েছিল এই কর্মসূচিতে। মঙ্গলবার পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীরা (Students) অংশ নেয়। প্রায় ২০টি খাবারের পদ ফুড ফেস্টিভ্যালে তুলে ধরা হয়েছিল। স্কুলের মেয়েদের ফুড ফেস্টিভ্যালকে কেন্দ্র করে এমনভাবে উৎসাহিত হতে দেখে ভীষণ খুশি শিক্ষিকারা।
আরও পড়ুন- এমন কীর্তির কোনও প্রশংসাই যেন যথেষ্ট নয়! টোটোচালকদের অসামান্য উদ্যোগকে কুর্ণিশ!
বন্ধুদের তৈরি খাবার খেয়ে খুশি ছাত্রীরাও।
স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সৃজিতা সামন্তের কথায়, "স্কুলে এই ধরনের কর্মসূচিতে অংশ নিতে পেরে আমি খুব খুশি। আমি পাস্তা বানিয়েছিলাম। ভালোই বিক্রি হয়েছে। বন্ধুরা আর দিদিমণিরাও খেয়ে প্রশংসা করেছে। আমি চাই এই ধরনের ফেস্টিভ্যাল মাসে অন্তত একদিন করে হোক।" স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বনানী নায়েকের কথায়, "পড়ুয়াদের আনন্দ দিতে স্টুডেন্ট উইক পালন করার কথা বলা হয়েছিল। সেই মতো আমরা সোমবার একদিনের জন্য ফুড ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করেছিলাম। কিন্তু বহু পড়ুয়া অংশ নেওয়ায় আমাদের দু'দিন ধরে ফেস্টিভ্যাল করতে হয়। পড়ুয়া থেকে অভিভাবক সকলেই খুবই মজা করেছেন।"
আরও পড়ুন- Mamata Banerjee: গরুও তৃণমূল, কয়লাও তৃণমূল? আসলে তৃণমূলকে দেখলে ভয়ে কাঁপে: মমতা
এদিকে, বাড়ির মেয়েদের রান্না খেয়ে আপ্লুত অভিভাবকরাও। স্কুলের ফুড ফেস্টিভ্যালে মেয়েদের হরেক রকমের খাবারের পদ বানাতে দেখে মনে-মনে বেশ খুশি বাবা-মায়েরাও। সব মিলিয়ে অভূতপূর্ব এক কর্মসূচি দারুণভাবে সফল হতে দেখে বেজায় খুশি স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে শুকু করে ছাত্রী ও অভিভাবকরা।