পুলওয়ামা আক্রমণের ১২ দিনের মাথায় সার্জিকাল স্ট্রাইকের মাধ্যমে পাকিস্তানকে 'উচিত শিক্ষা' দিতে পেরে দেশের বিভিন্ন অংশের মানুষ যখন রীতিমতো উৎসব-উদযাপনের মেজাজে, ঠিক তখন কার্যত নিরুত্তাপ পুলওয়ামাকাণ্ডে নিহত সিআরপিএফ জওয়ান বাবলু সাঁতরার স্ত্রী মিতা সাঁতরা। ‘‘যা হারিয়েছি, তা তো আর কখনও ফিরে পাব না’’, আবেগহীন কণ্ঠে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে জানিয়ে দিলেন সদ্য স্বামীকে হারানো মিতা। মঙ্গলবার ভোরে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জইশ জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংসের খবরে তিনি এতটুকুও উত্তেজিত নন। বরং তাঁর সাফ জবাব, ‘‘এতে আমার স্বস্তি বা অস্বস্তি কোনওটাই হচ্ছে না।’’ বরং সরকারের কাছে তাঁর আর্জি, "আর কোনও জওয়ানের যেন প্রাণ না যায়, তাঁদের যেন সুরক্ষা দেওয়া হয়"।
আরও পড়ুন, কাশ্মীরে নিহত বাংলার জওয়ান বাবলু যেন সত্যিই ‘ফাইটার’
ভারতের সাম্প্রতিক সার্জিকাল স্ট্রাইক প্রসঙ্গে মিতাদেবী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, ‘‘আমার যা গিয়েছে, তা তো আর কোনও মূল্যেই ফিরে আসবে না। সেই ক্ষতি কেউই পূরণ করতে পারবে না।’’ এরপরই মোদীর নাম না করে মিতা বলেন, ‘‘সরকার আমাদের প্রতিবেশী দেশকে ভয় পাওয়ানোর জন্য করেছেন, না কীসের জন্য করেছেন, সেটা উনিই ভাল বলতে পারবেন। ভবিষ্যতে যদি উনি মনে করেন পাকিস্তান গুঁড়িয়ে দেবেন, তবে তাই করবেন। ওঁদের হয়তো এটা ঠিক মনে হয়েছে, তাই করেছেন। আমার স্বস্তি বা অস্বস্তির কোনও জায়গা নেই এখানে। যা হারিয়েছি, তা আর ফিরে পাব না। সুতরাং সরকার কী করবে, আর কী করবে না, সেটা ওঁদেরকেই ঠিক করতে হবে।’’
আরও পড়ুন, রুপোর আংটিই চেনাল কাশ্মীরে নিহত বাংলার জওয়ানকে
এদিন বাবলু সাঁতরার স্ত্রী মিতাদেবীর গলায় বেশ ক্ষোভের সুরও শোনা যায়। তিনি বলেন, ‘‘ভারতবর্ষকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য যে বাহিনী দিনরাত কাজ করছে, তাঁদের সুরক্ষার দিকে যেন নজর দেয় সরকার। সংবাদমাধ্যমে জেনেছি, ওঁর কাছে হামলার আগাম খবর ছিল, তাহলে কেন সতর্ক করা হল না? পুলওয়ামা হামলার পর জম্মু-শ্রীনগর বিমান পরিষেবায় ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে, আগে কেন হল না? কেন গাড়িগুলো ঝরঝরে ছিল? কেন জ্যামার লাগানো ছিল না? ভারতের সব জায়গাতেই কি এই বাহিনীর জন্য সুরক্ষা দেওয়া হয়? সরকারের কাছে আমরা এই প্রশ্নগুলোই রয়েছে।’’
আরও পড়ুন, বাবলুর আর এক্সটেনশন নেওয়া হল না
মিতা সাঁতরার গলায় কোনও উচ্ছ্বাসের সুর শোনা না গেলেও, সার্জিকাল স্ট্রাইক নিয়ে বেশ উত্তেজিত বাবলুর 'প্রিয় বন্ধু' সন্দীপ পাল। মঙ্গলবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে সন্দীপ বললেন, ‘‘এটাই ভারতের জনগণ চেয়েছিলেন। খুব খুশি হয়েছি। সরকার যে একটা পদক্ষেপ গ্রহণ করল, এটা ভেবে মানসিক ভাবে ভাল লাগছে। সার্জিকাল স্ট্রাইক পার্ট ২ হল। সার্জিকাল স্ট্রাইক ৩ যেন আরও কড়া ভাবে করা হয়।’’