গরুমারা জাতীয় উদ্যান থেকে উদ্ধার হোলো খড়্গ কাটা অবস্থায় পুরুষ গণ্ডারের মৃতদেহ। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তদন্তে নেমেছেন জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার ও বন দপ্তরের আধিকারিকেরা।
খড়্গবিহীন সেই মৃতদেহ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে হাতির পিঠে চড়ে গরুমারা জাতীয় উদ্যানের গরুমারা বিট এলাকায় জঙ্গল টহলদারিতে বের হন বনকর্মীরা। সেইসময় তাঁরা মৃতদেহটি দেখতে পেয়ে খবর দেন আধিকারিকদের। দেহ দেখে তদন্তকারীদের প্রাথমিক ধারণা, সম্ভবত এই গণ্ডারটিকে গত ৪৮ থেকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে মারা হয়েছে। জাতীয় উদ্যানেই ময়নাতদন্ত শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর দেহটিকে পুড়িয়ে দেওয়া হবে।
খবর পেয়ে জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি জানান, "মেটেলি থানা এলাকায় একটি গণ্ডারের মৃতদেহ উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে। আমি ঘটনাস্থলে যাচ্ছি।"
আরো পড়ুন: কোচবিহারের পাতালখোয়ায় গণ্ডার ফিরছে
বনদপ্তরের অনারারি ওয়াইল্ডলাইফ ওয়ার্ডেন সীমা চৌধুরী জানান, "খবর পেয়ে গরুমারায় পৌঁছে দেখি, ময়নাতদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার এবং ডিফও সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা এসেছেন। তদন্তে এসেছে জলদাপাড়া ও বক্সা থেকে রানি ও করিম নামে দুটি কুকুর। দেখলাম, পুরুষ গণ্ডারটির খড়্গ নেই।"
ডিএফও নিশা গোস্বামী জানিয়েছেন, "একটি পুরুষ গণ্ডারের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে, যার খড়্গ নেই। এর পেছনে কোনো পোচিং চক্র আছে কিনা আমরা খতিয়ে দেখছি। ময়নাতদন্ত চলছে। ভিসেরা (অভ্যন্তরীণ অঙ্গ) পাঠানো হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে গণ্ডারের মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।"
প্রসঙ্গত, এ রাজ্যে গণ্ডারের সংখ্যা বেশ কয়েকবছর ধরেই বাড়ছে। বন দফতরের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, ১৯৮৮ সালে জলদাপাড়ায় ১৪ টি গণ্ডার ছিল। এখন জলদাপাড়া ও গরুমারা মিলিয়ে গণ্ডারের সংখ্যা ২২০। গত মে মাসে কোচবিহারের পাতালখোয়ায় পাঁচ ছ-টি গণ্ডার নিয়ে যাওয়া হয়। এই অঞ্চল থেকে দীর্ঘদিন কোনো পোচিং অর্থাৎ বেআইনি শিকারের খবর পাওয়া যায়নি। কাজেই গতকালের ঘটনায় স্বভাবতই উদ্বিগ্ন বন বিভাগ।