চাকরিতে নিয়োগ চাই। চার দিন ধরে পর্ষদ অফিসের সামনে ধরনায় ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণরা। দাবি আদায়ে অনশনও চলছে। কিন্তু চাকরিপ্রার্থীদের দাবি 'অন্যায্য' বলে জানিয়ে দিয়েছেন খোদ প্রাথমিক পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল। নিয়মের বাইরে পর্ষদ কিছু করবে না বলে ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন তিনি। এমনকী এই আন্দোলনের নেপথ্যে বিরোধী রাজনৈতিক দলের ইন্ধন রয়েছে বলেও দাবি করেছিলেন গৌতমবাবু। যা বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সরব বিজেপি। এবার মুখ খুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
কী বলেছিলেন পর্ষদ সভাপতি?
২০১৪ সালের বিক্ষোভকারী টেট উত্তীর্ণদের দাবি, নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণদের সঙ্গে তাঁরা অংশ নেবেন না। তাঁদের সরাসরি নিয়োগ করতে হবে। কারণ, পয়েন্ট স্কোরে ২০১৭ সালের উত্তীর্ণদের থেকে ২০১৪ সালের পাস করা পরীক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়তে পারেন।
চাকরিপ্রার্থীদের কথায়, ২০২০ সালে মুখ্যমন্ত্রী নিজে সাংবাদিক বৈঠক করে তাঁদের নিয়োগের কথা ঘোষণাও করেছিলেন। প্রথমে ১৬ হাজার ৫০০ পদে নিয়োগের কথা বলা হয়েছিল, জানানো হয়েছিল পরে আরও কিছু পদে নিয়োগ হবে। অভিযোগ, তার পরে ২ বছর পেরিয়ে গেলেও নিয়োগ হয়নি, উপরন্তু ২০১৪ ও ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণদের যুগ্মভাবে ১১ হাজার পদে নিয়োগের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। ২০১৭ সালের প্রার্থীরা পরীক্ষায় বসলে ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের চাকরির সুযোগ অনেকটাই কমে যাচ্ছে।
এরপরই নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন, ধরনা ও অনশন শুরু করেছেন ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণরা।
এই অন্দোলন ও বিক্ষোভকারীদের দাবি প্রসঙ্গে পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল বলেছিলেন, 'নিয়মের বাইরে কিছু করা যাবে না। চলতি বছরের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এঁদের অংশ নিতেই হবে। আন্দোলনকারীরা কেউ প্যানেলভুক্ত হননি। ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের নিয়োগের দাবি আইনসম্মত নয়। রশিক্ষণপ্রাপ্ত টেট উত্তীর্ণের সংখ্যায় ১৬ হাজার ১০১ জন। এই আন্দোলনকারীরা ২ বার ইন্টারভিউ দিয়েও প্যানেলভুক্ত হননি। তাঁদের নিয়োগ দিতে হলে ২০১৬ সালের আইন ভাঙতে হবে। কিন্তু, পর্ষদ নিয়ম ভাঙবে না।'
পর্ষদ সভাপতির কথায়, 'চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের নেপথ্যে রয়েছে রাজনৈতিক মদত। একাধিক দলের রাজনৈতিক নেতৃত্ব এই আন্দোলনকে ইন্ধন দিচ্ছেন। কিন্তু পর্ষদ কোনওভাবেই চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না।'
এর পালটা কী বলেছেন শুভেন্দু?
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ২০১৪ সালের টেট প্রার্থীদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন। অনশনেরও য়ৌক্তিকতা রয়েছে বলে জানান। কেন বিষয়টি আলোচনার টেবিলে আসবে না তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। পর্ষদ সভাপতির ভূমিকা সম্পর্কে শুভেন্দু অধিকারীর কটাক্ষ, 'পর্ষদ থেকে মানিক গেছেন, হিরে এসেছেন। গৌতম পাল যা সব কথা বলছেন তাতে তো মনে হচ্ছে উনি তোলামূল কোম্পানির বড় ক্যাডার। আসলে উনি উপাচার্য হওয়ার জন্য মরিয়া।'