কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ২৯ ও ৩০ মার্চ ধরনা দেবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে মঙ্গলবার বাংলার বিজেপি সাংসদদের সঙ্গে কথা বললেন খোদ প্রধানমন্ত্রী মোদী। তার আগেই কৌশলী চাল শুভেন্দু অধিকারীর। তড়িঘড়ি দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এই সাক্ষাতে মমতার বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। পাশাপাশি বঙ্গ বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বিতর্কের মধ্যেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আগ বাড়িয়ে সাক্ষাৎ কিছুটা হলেও সুকান্ত, দিলীপদের চাপে রাখার চেষ্টা বলে সূত্রের খবর।
১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা-সহ কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দাবি আদায়ে ধরনা বসতে চলেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর এই ধরনাক কর্মসূচিকেই কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। কিছুটা কৌশলী হয়েই রাম নবমীর দিনে ধরনায় বসা নিয়ে শুভেন্দু মেরুকরণ উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করেন। শুভেন্দু বলেন, 'সারা ভারতের হিন্দুদের বড় উৎসব রাম নবমী। অথচ ওই দিন ধরনায় বসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকার রাম নবমীর ছুটিও দেয়নি। রমজান মাসেও ওনার কর্মসূচির রেয়াত নেই। আর্থিক কেলঙ্কারির দিক থেকে মানুষের মনোযোগ সরানোর চেষ্টা'
বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, 'বাংলা সমস্ত দিক থেকে পিছিয়ে পড়ছে। বাংলার ঋণ ৩ গুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন মমতা। বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা বেড়েছে ৯ গুণ। বাংলায় বেকার যুবকের সংখ্যা দ্বিগুণ করেছে মমতা সরকার।' পশ্চিমবঙ্গ কেন জিএসটির বকেয়া পায়নি তার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, 'মন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ জানিয়েছেন বাংলার জিএসটি চাহিদার ৯০ শতাংশ দিয়েছে কেন্দ্র। বাকি সব প্রদেশ ১০০ শতাংশ জিএসটি পেয়ে গিয়েছে। রাজ্য অডিট রিপোর্ট পাঠায়নি বলে ১০ শতাংশ আটকে আছে। কিন্তু কেন্দ্র কোনও বিভেদ করেনি।'
১০০ দিনের কাজের বকেয়া বাকি বলে অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর। কেন কেন্দ্রের এই আচরণ? শুভেন্দুর দাবি, 'মোদী সরকার ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব জবকার্ড আধারের সঙ্গে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল। জানুয়ারিতে ১ কোটি জবকার্ড ফেক বলে ডিলিট করে দেয় রাজ্য সরকার। অর্থাৎ, গত ১০ বছর ধরে এই ফেক জবকার্ড পিছু মনরেগা প্রকল্পে কেন্দ্রের থেকে হাজার কোটি টাকা নিয়েছে বাংলার সরকার। এটা একটা বড় কেলেঙ্কারি। এর সঙ্গে পঞ্চায়েত, বিডিও, পুরো তৃণমূল কংগ্রেস জড়িত। পশ্চিমবঙ্গের মানুষের পক্ষ থেকে আমরা সব নথি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং-কে পাঠিয়েছি। আমরা এর তদন্ত চেয়েছি, আমি কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছি। সিবিআই তদন্ত চেয়েছি।'
শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, আবাস যোজনা, গ্রাম সড়ক যোজনা, জল জীবন মিশন, স্বচ্ছ ভারত অভিযান – সব কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদলে দিয়েছে বাংলার সরকার। তাঁর অভিযোগ, '৬০,০০০ জনের ক্ষেত্রে নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। গত ১২ বছরে কোনও বড় শিল্প হয়নি, একটিও বিমানবন্দর তৈরি হয়নি, কোনও বন্দর তৈরি হয়নি। রেল প্রকল্পের জন্যও, বিমান বন্দরের জন্য জমি পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে দেশি মদ সস্তা হয়েছে। বাংলার হাল জঙ্গলরাজের থেকেও খারাপ।'