তৃণমূল সরকারকে ডিসেম্বর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। আর সেই ডিসেম্বরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিমন্ত্রণ রক্ষা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। নবান্নের ১৪তলায় গিয়ে প্মমতার সঙ্গে একান্তে প্রায় কুড়ি মিনিট কথা বললেন অমিত শাহ। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, স্বাভাবিকভাবেই বেশকিছুটা চাপে
রাজ্যের গেরুয়া নেতৃত্ব। দিশাহীনতায় ভুগছে বঙ্গ বিজেপি। কিন্তু, শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, নবান্নে অমিত শাহ-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক নিছকই 'ফরমালিটি। মুখ্যমন্ত্রীর নিমন্ত্রণে তাঁর দফতরে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক করেছেন। কী বলেছেন, চা খেতে ডেকেছেন, নাকি দফতরে দেখাতে ডেকেছেন, আমি বলতে পারব না। তবে, এই যাওয়ার মধ্যে দিয়ে কোনও রাজনৈতিক তাৎপর্য খোঁজা উচিত নয়।'
এরপরই শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আর বেশিদিন থাকবে না। তিনি বলেছেন, 'গতকালের মিটিংয়ের একটা কথা শুধু আমি বলতে পারি, সেটা হল টাইম হো গয়া (সময় হয়ে গিয়েছে)। কে বলেছেন সেটা আমি বলব না। অর্থাৎ, পশ্চিমবঙ্গে তোর, ডাকাত, পরিবারবাদী, তোষণবাদীদের বিপক্ষে সংবিধান মেনে যা ব্যবস্থা নেওয়ার সেটা হবে। এই কথার মাধ্যমে আমরা আশ্বস্ত ও উৎসাহিত।'
শুক্রবার রাতে বিজেপির প্রদেশ দফতর মুরলিধর সেন লেনে বাংলার দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন অমিত শাহ। এ দিন মমতা-শাহ একান্ত বৈঠক হতেই মুরলীধর সেন লেনের বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। কিন্তু আকারে ইঙ্গিতে বোঝানোর চেষ্টা করলেও বললেন না কে বলেছেন, 'টাইম হো গয়া'।
এ দিন দিল্লি ফিরে যাওয়ার সময় বিমানবন্দরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্ত মজুমদার। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একান্ত শাহি বৈঠকের প্রসঙ্গ জানতে চেয়েছিলেন শুভেন্দু। বিরোধী দলনেতার দাবি, অমিত শাহ তাঁকে জানিয়েছেন যে, 'বিএসএফকে ৭২টা চৌকি বানাতে রাজ্য সরকার জমি দিচ্ছে না। এছাড়া, বিএসএফের সঙ্গে পুলিশের সমন্বয় বাড়াতে হবে। পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তবর্তী রাজ্য। জাতীয়স্বার্থে তাই বিএসএফের সহায়তা প্রয়োজন। সেটা করার জন্যই মুখ্যমন্ত্রীর চেম্বারে গিয়ে আনুরোধ করেছি।'
আরও পড়ুন- ঘরে ডেকে কী বলেছেন মমতা? শাহের কথা শুনেই সব ‘ফাঁস’ করলেন শুভেন্দু
আগামী মঙ্গলবার শুভেন্দু ও সুকান্তকে দিল্লি ডেকেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সংসদ ভবনে অমিত শাহর চেম্বারে গিয়ে তাঁরা বৈঠক করবেন বলে দাবি করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বঙ্গ বিজেপি মমতা সরকারকে উৎখাতে তোপ দাগছে। সেই সময় মমতা-অমিত শাহ একান্তে বৈঠক চলছে। যারপরনাই অস্বস্তিতে বাংলার গেরুয়া দল। ড্যামেজ কন্ট্রোলে তাই ফের হুঁশিয়ারিই ভরসা শুভেন্দুদের।