রাজ্যপাল পদে সি ভি আনন্দ বোসের ভূমিকা নিয়ে আগেই অসন্তোষের ইঙ্গিত দিয়েছে বঙ্গ বিজেপি। স্বপন দাশগুপ্তের মত নেতারা তো সরাসরিই বলেছেন, জগদীপ ধনকড়ের বিকল্প খুঁজে পাওয়া ভার। তারপরই সরস্বতী পুজোয় রাজ্যপালের বাংলা শেখার হাতে-খড়ি অনুষ্ঠান 'জয় বাংলা' মন্তব্য নিয়ে জোর শোরগোল পড়ে যায়। তৃণমূলকে বিঁধে সি ভি আনন্দ বোসকে শব্দ চয়ণ নিয়ে সতর্ক হওয়ারও পরামর্শ দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। সেই চাপ বজায় রেখেছেন শুভেন্দু অধিকারী।
বিতর্কের সূত্রপাত, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে রাজ্যের আমলার স্ত্রী রুচিরা জৈনের গানের অনুষ্ঠান নিয়ে।
ঐতিহ্যবাহী ওই সৌধের ট্রাস্টির চেয়ারপার্সন মাননীয় রাজ্যপাল। আনন্দ বোসের কাছে শুভেন্দুদের আর্জি, শুধু আমলার স্ত্রীই নয়, ভিক্টোরিয়ায় যেন অনুষ্ঠানের সুযোগ পান অন্যান্য শিল্পীরাও। বিরোধী দলনেতার এই আবেদন আদতে রাজ্যাপালের উপর চাপ বজায়ের কৌশল বলেই মনে করা হচ্ছে।
এদিন টুইটে শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন, 'শ্রীমতী রুচিরা জৈন, শ্রী মণীশ জৈন (আইএএস) এর স্ত্রী; প্রধান সচিব; স্কুল শিক্ষা বিভাগ, পশ্চিবঙ্গ সরকার আজ ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে অনুষ্ঠান করবেন।
আমি মাননীয় রাজ্যপাল সি.ভি. আনন্দ বোসকে অনুরোধ করব পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য গায়ক ও সঙ্গীতশিল্পীদের একই সুযোগ দেওয়ার জন্য।'
টুইটে একটি বিবৃতিও সংযুক্ত রয়েছে। সেখানে উল্লেখ, কলকাতার পরিচয়ের সঙ্গে সমার্থক ঐতিহ্যবাহী ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে সঙ্গীতের অনুষ্ঠান করবেন রুচিরা জৈন। ভিক্টোরিয়ার পরিচালন ট্রাস্টের চেয়ারপার্সন মাননীয় রাজ্যপাল। রুচিরা সঙ্গীতশিল্পী ছাড়াও আইএস অফিসার মণীশ জৈনের স্ত্রী। মণীশ বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা দফতরের সচিব পদে কর্মরত। মণীশকে এসএসসি শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারি মামলায় সমন করেছিল হাইকোর্ট। বাংলার শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারি ভারতের ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ দুর্নীতি।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ যে, রুচিরাকে এদিনের অনুষ্ঠানে অভ্যর্থনা জানাবেন রাজ্যপালের প্রিন্সিপাল সেক্রেটরি নন্দিনী চক্রবর্তী। যিনি মণীশ জৈনের ব্যাজ-মেট ও পরিচিতা।
শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, বিভিন্ন কাগজে রুচিরা জৈনের গানের অনুষ্ঠানের প্রচারের খরচ যুগিয়েছে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল কর্তৃপক্ষ।
এরপরই রাজ্যপালের প্রতি বিরোধী দলনেতার আবেদন, ঐতিহ্যবাহী মেমোরিয়ালের ট্রাস্টির চেয়ারপার্সন হিসাবে আশা করব এরপর ভিক্টোরিয়ায় পশ্চিমবঙ্গের প্রতিভাবান সঙ্গীতশিল্পীরাও অনুষ্ঠান করার সুযোগ পাবেন। গান গাইতে পারবেন, ভাওয়াইয়া, চটকা, ভাদু, টুসু, জাওয়া, ঝুমুর, আলকাপ, বোলান, পাঞ্চালুর মত লোকশিল্পীরাও। ভিক্টোরিরায় মত জায়গায় এঁরা নিজেদের মেলে ধরার সুযোগ পেলে উপকৃত হবেন।