ব্যাঙ্কের চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন গ্রুপ-ডির কর্মী হিসেবে। 'ভুয়ো ডিগ্রি' দেখিয়ে সেই কর্মীই এখন ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের পদ সামলাচ্ছেন বলে অভিযোগ। কাঠগড়ায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতার স্ত্রী। বিষয়টি জানাজানি হতেই নড়েচড়ে বসেছে তমলুক কো-অপারেটিভ এগ্রিকালচার অ্যাণ্ড রুরাল ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্কের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে, যাঁর বিরুদ্ধে এই মারাত্মক জালিয়াতির অভিযোগ সেই ব্যাঙ্ক ম্যানেজার তথা বিজেপি নেতার স্ত্রী অবশ্য বিষয়টিতে নিজের দায় এড়িয়েছেন।
একুশের বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন বিজেপি নেতা মেঘনাথ পাল। তাঁরই স্ত্রী মহুয়া জানা (পাল) ভুয়ো গ্র্যাজুয়েশন সার্টিফিকেট দেখিয়ে তমলুক কো-অপারেটিভ এগ্রিকালচার অ্যাণ্ড রুরাল ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্কের নন্দীগ্রাম শাখার ম্যানেজার হয়েছেন বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, মহুয়াদেবীর উচ্চ মাধ্যমিকের শংসাপত্রটিও ভুয়ো বলে অভিযোগ উঠেছে। 'ভুয়ো সার্টিফিকেট' দাখিল করে বিজেপি নেতার স্ত্রীর গ্রুপ-ডি কর্মী থেকে একেবারে ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের পদে বসে পড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরগরম নন্দীগ্রাম। তুঙ্গে রাজনৈতিক চর্চা।
শুভেন্দু অধিকারীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ মেঘনাথ পাল। তাঁর স্ত্রী প্রথমে ওই ব্যাঙ্কে গ্রুপ ডি কর্মী হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই নাটকীয় ভাবে পদোন্নতি হতে শুরু করে তাঁর। 'ভুয়ো ডিগ্রি' দেখিয়ে ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের পদেও তিনি বসে পড়েছেন বলে অভিযোগ। ভুয়ো ডিগ্রির এই গুরুতর অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে তমলুক কো-অপারেটিভ এগ্রিকালচার অ্যাণ্ড রুরাল ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ প্রমাণিত হলে মহুয়া জানার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন ব্যাঙ্ক কর্তারা।
আরও পড়ুন- দানা বাঁধছে কালবৈশাখী, কাল থেকেই দক্ষিণবঙ্গে আবহাওয়ার বদল
মহুয়া জানা যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট দাখিল করে ব্যাঙ্কে চাকরি পেয়েছেন সেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেই চিঠি পাঠায় ব্যাঙ্কের ঊর্ধ্বতন বিভাগ। গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়, এই ধরনের সার্টিফিকেটের কোনও গুরুত্ব নেই। এরপরেই মহুয়া জানার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার ব্যাপারে নড়েচড়ে বসেছে ব্যাঙ্কের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।
এদিকে যাঁর বিরুদ্ধে এই মারাত্মক অভিযোগ সেই মহুয়া জানা (পাল) দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ''আমাকে ব্যাঙ্কের তরফে কিছু জানায়নি। চণ্ডীপুরের একটি সংস্থা থেকে গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করি। ম্যানেজার গ্রেডের পরীক্ষার সময় আমার সার্টিফিকেট চাওয়া হয়। আমাকে ম্যানেজার গ্রেডের পরীক্ষায় বসতে বলা হয়। যে সার্টিফিকেট আমার ছিল তা দেখিয়েই পরীক্ষায় বসতে বলা হয়েছিল। আমি জানিয়েছিলাম যে আমার কাছে থাকা সার্টিফিকেট আদৌ অনুমোদনযোগ্য কিনা তা যাচাই করে আমায় পরীক্ষায় বসতে বলুন। আমি সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার পরে ওঁরা আমাকে কোনও রিপোর্ট দেয়নি। আমাকে পরীক্ষায় বসতে বলা হল। আমি পরীক্ষায় বসলাম এবং আমাকে প্রোমোশনও দেওয়া হল। তারপর আমার স্বামী যখন দল বদল করলেন তখনই বিষয়টি নিয়ে ওঁরা সমস্যা তৈরি করছেন। ব্যাঙ্ক আমাকে একটি চিঠি দিয়েছিল। সেই চিঠির উত্তর দিয়েছি।''