রাজ্য পুলিশের নতুন ডিরেক্টর জেনারেল বা ডিজি হচ্ছে রাজীব কুমার। বুধবার নবান্নে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর রাজ্য পুলিশের সর্বোচ্চ পদে এই আইপিএস-এর নামেই সিলমোহর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে, আপাতত ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর জেনারেল বা ডিজি হিসেবে কাজ করবেন রাজীব কুমার।
রাজ্য পুলিশের ডিজি পদে রাজীব কুমারকে কেন বহাল করা হল? প্রশ্ন তুলে সরাসরি মমতা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি শুভেন্দু মমতার এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। সারদা মামলার প্রমাণ লোপাট করার পুরস্কার পাচ্ছেন রাজীব? এদিন এই প্রশ্নেও সরব হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।
এর আগে কলকাতার পুলিশ কমিশনার ও রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান ছিলেন এই দুঁদে আইপিএস অফিসার। চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে রাজীব কুমারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। চিটফান্ড কাণ্ডের তদন্ত সূত্রে তাঁর বাড়িতেও পৌঁছে গিয়েছিল সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। প্রতিবাদে রাজপথে ধরন্য়া বসেছিলেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর আইপিএস রাজীব কুমারকে জেরার জন্য ডেকে পাঠানো হয়। সে সময় তাঁকে পুলিশি দায়িত্ব থেকে সরিয়ে প্রশাসনিক পদে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের তথ্য ও প্রযুক্তি দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি ছিলেন রাজীব কুমার। সেই পদ থেকে ফের তাঁকে ফেরানো হল পুলিশে।
রাজীব কুমার সারদা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত। কলকাতার তৎকালীন পুলিশ কমিশনারের বিরুদ্ধে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ তোলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শুভেন্দুর অভিযোগ, রাজীব কুমার প্রমাণ লোপাট করেছিলেন বলেই সারদা কেলেঙ্কারির মাথারা এখন জেলের বাইরে। পাশাপাশি রাজীবকে রাজ্য পুলিশের ডিজি করার প্রশ্নে শুভেন্দু একে মমতার ‘রিটার্ন গিফট' বলেও উল্লেখ করেছেন। বিরোধী দলনেতা মমতাকে নিশানা করে বলেন, "সারদার তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এখনও বাইরে থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন রাজীব কুমার। তিনি তার প্রতিদান দিচ্ছেন।’’
রাজ্যের নতুন ডিজি রাজীব কুমার এই খবর জানাজানি হতেই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বলেছেন, ‘সারদা কেলেঙ্কারির নথি নষ্ট করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাঁচানোয় এটা ওঁকে পুরস্কার দেওয়া হল। আমি সিবিআইয়ের কাছে জানতে চাইছি কেন সারদা মামলায় ধীরগতি হল। প্রয়োজনে মানুষ সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে সেটা জানতে চাইবে।’
যদিও শুভেন্দুর এই হুমকি প্রসঙ্গে শাসকদল জানিয়েছে, যাকে প্রকাশ্যে টাকা নিতে দেখেছে। যাঁর নাম সিবিআইয়ের এফআইআরে রয়েছে, তাঁর মুখে এসব কথা মানায় না।