ডিয়ার লটারির মাধ্যমে জনগণের অর্থ লুঠ করে কালো টাকা সাদা করছে তৃণমূলের নেতারা। এই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি 'ভাইপো' অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যুক্ত। চাঞ্চল্যকর এই দাবি করে ডিয়ার লটারির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতার দাবি, ডিয়ার লটারির সঙ্গে বাংলার শাসক দল তৃণমূলের যোগ আছে। আগেও এ কথা বলেছিলেন তিনি। এমনকী, এই মর্মে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-কে গত বছরই চিঠি দিয়ে তিনি সব জানিয়েছিলেন বলে টুইটবার্তায় জানিয়েছেন শউভেন্দু অধিকারী।
চলতি বছর জানুয়ারিতেই ডিয়ার লটারির প্রথম পুরস্কার ১ কোটি টাকা জিতেছিলেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। যা নিয়ো শোরগোল পড়েছিল। এরপর এ বছর অগাস্টেই গরু পাচার মামলায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে গ্রেফতার হন অনুব্রত। থাঁর নামে-বেনামে বহু সম্পত্তির হদিশ মিলছে বলে সিবিআই, ইডি সূত্রে খবর।
শুধু কেষ্ট মণ্ডলই নন, বুধবার ডিয়ার লটারির পুরস্কারস্বরূপ ১ কোটি টাকা জিতেছেন জোড়াসাঁকোর তৃণমূল বিধায়র বিবেক গুপ্তার স্ত্রী। এরপরই ওই লটারির সঙ্গে জোড়-ফুলের যোগের বিস্ফোরক দাবি করেছেন শুভেন্দু অধিকারী।
এ দিন টুইটে শুভন্দু অধিকারী লিখেছেন, 'ডিয়ার (ভাইপো) লটারির সাথে শাসকদল তৃণমূলের সরাসরি সম্পর্ক আছে একথা আমি বরাবর বলে এসেছি। দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ ই বেশীর ভাগ লটারি কাটেন তাদের অর্থনৈতিক ভাগ্য পরিবর্তনের আশায়। কিন্তু টিকিট সাধারণ মানুষ কাটলেও লটারির জ্যাকপট পুরষ্কারের অঙ্ক কিন্তু তোলামূলী নেতাদের জন্য সংরক্ষিত। আগেও জানা যায় যে অনুব্রত মন্ডল ডিয়ার (ভাইপো) লটারির প্রথম পুরস্কার; ১ কোটি টাকা জিতেছেন, এখন আবার দেখছি গতকাল তৃণমূল বিধায়ক বিবেক গুপ্তর স্ত্রী প্রথম পুরস্কার; ১ কোটি টাকা জিতেছেন। সত্যি তৃণমূল নেতাদের ভাগ্য বটে, ডিয়ার (ভাইপো) লটারির প্রথম পুরস্কার একেবারে বাঁধা।
আসলে এই লটারির আড়ালে পশ্চিমবঙ্গে কোটি কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতি হচ্ছে। এই বিষয়ে গত বছর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাননীয় শ্রী অমিত শাহ জী কে বিস্তারিত জানিয়ে আমি একটি চিঠিও দিয়েছিলাম। তখন এই সব খবর প্রকাশিত হয় নি।
গোটা পশ্চিমবঙ্গে যেদিকেই আপনি তাকাবেন বাস স্ট্যান্ড বাজার, পাড়ার মোড়ে, দেখবেন একটি ছোটো টেবিল আর চেয়ার সাথে লটারি নিয়ে এজেন্টরা বসে আছে। সাধারন খেটে খাওয়া দরিদ্র শ্রেনীর মানুষ রাতারাতি কোটিপতি হবার প্রলোভনে পা দিচ্ছেন, তাদের কষ্টার্জিত অর্থে এই লটারি কিনে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন যা যথেষ্ট উদ্বেগের। আর দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূলের এক শ্রেনীর নেতারা সেই অর্থে লাভবান হচ্ছেন। তৃণমূল নেতাদের কালো টাকা সাদা করার পন্থা হলো ডিয়ার (ভাইপো) লটারি।'
অর্থাৎ, মানুষ ঠকিয়ে পরিকল্পিতভাবেই তৃণমূলের নেতারা লটারির নামে কালো টাকা সাদা করছেন বলে যুক্তি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।
আরও পড়ুন- ফোঁটা নিতে দিদির বাড়িতে স্নেহের কানন, ‘ভুল বোঝাবুঝির মেঘ কেটেছে’, বললেন বৈশাখী